ছবি হাতে। নিজস্ব চিত্র
ছাত্রছাত্রীদের স্কুলব্যাগ বিতরণ করার সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেখিয়ে উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে গত অগস্টে সংবাদ শিরোনামে চলে এসেছিলেন প্রধান শিক্ষক। নিজেই তা সমাজমাধ্যমে তা পোস্ট করেছিলেন। এ বার তাঁর স্কুলের পাঠ্যপুস্তক তালিকা প্রকাশের পর দেখা গেল, প্রথম পাতায় মমতার ছবি ছাপানো হয়েছে। এই ঘটনায় ফের বিতর্কের মুখে নদিয়ার হোগলবেড়িয়া আদর্শ শিক্ষা নিকেতনের প্রধান শিক্ষক গিরীন্দ্রনাথ দাস।
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, অন্যান্য স্কুলের মত সেখানে পাঠ্যপুস্তকের তালিকায় প্রথম পাতায় মনীষীদের ছবি ছাপা হত। কিন্তু গত মঙ্গলবার পাঠ্যপুস্তক তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, সেই জায়গায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি। এর পরেই বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়।
নিখিল বঙ্গ শিক্ষক সমিতির নদিয়া জেলা কমিটির সদস্য প্রভাস মজুমদার বলেন, “উনি গত অগস্টে নিজের পোস্টে যা বলেছিলেন তাতে তিনি প্রধান শিক্ষক নন, কট্টর তৃণমূল কর্মীর মতো বক্তব্য রেখেছেন। একেবারে নৈতিকতা হারিয়ে এ বার পাঠকপুস্তক তালিকায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি ছেপে উনি যে তৃণমূলের কত বড় ভক্ত তা প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই আচরণ অবাঞ্ছনীয়।”
সিপিএমের করিমপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সন্দীপক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, “রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা দুর্নীতিতে ডুবে গিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছাপা স্বাভাবিক!” বিজেপির করিমপুর কেন্দ্রের আহ্বায়ক মৃগেন বিশ্বাসের মতে, “এর পিছনে নিশ্চিত শাসক দলের ইন্ধন আছে, না হলে উনি পারেন কী করে!” ইন্ধনের অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূলের করিমপুরে ১ ব্লক সভাপতি আশিস চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “আমাদের দল সরাসরি কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে মাথা ঘামায় না। এটা স্কুলের একান্ত নিজস্ব বিষয়।”
প্রধান শিক্ষক গিরীন্দ্রনাথের দাবি, “পাঠ্যপুস্তক তালিকায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছেপে কোনও ভুল করিনি। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি দেওয়া খাতা তো আমরা স্কুলে বিলি করছি। তা হলে পাঠ্যপুস্তক তালিকায় তাঁর ছবি থাকলে আপত্তি কোথায়? যা করেছি, ঠিক করেছি।” ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি সনৎ সরকার বলেন, “সাধারণত পাঠ্যপুস্তক তালিকায় মনীষীদের ছবি ছাপানোর রেওয়াজ দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে। মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছাপা ভুল না ঠিক তা বলতে পারব না।” তবে তাঁর মতে, “প্রধান শিক্ষক যদি সকলের সঙ্গে আলোচনা করে এটা করতেন, তা হলে এই বিতর্কের সৃষ্টি হত না।”
তেহট্ট মহকুমা অ্যাডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টারস অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেস-এর সম্পাদক পার্থ তিওয়ারি বলেন, “স্কুলগুলি একটি স্বশাসিত সংস্থা। সেই কারণে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ছবি পাঠ্যপুস্তক তালিকায় ছাপানো যায় না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy