প্রতীকী ছবি।
বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের সন্দেহে স্ত্রীর ‘প্রেমিক’কে খুনের অভিযোগ উঠল স্বামী ও তাঁর আত্মীয়দের বিরুদ্ধে। স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা করতে বারণ করা সত্ত্বেও না শোনায় ‘প্রেমিক’-কে বাড়িতে ডেকে গলা কেটে খুন করার অভিযোগ উঠেছে। নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জ থানার পীরপুর গ্রামের দুর্গাপুর এলাকায় ঘটনা। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃতের নাম বাবুসোনা ঘোষ (৩৬)। খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই অভিযুক্ত স্বামী প্রহ্লাদ ঘোষ ও তাঁর স্ত্রী নমিতা ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের সাত দিনের পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন খুনে মূল অভিযুক্ত প্রহ্লাদের দুই আত্মীয় শঙ্কর ঘোষ ও প্রসেনজিৎ ঘোষ।
পুলিশ সূত্রে খবর, বাবুসোনা এলাকায় তৃণমূলকর্মী বলে পরিচিত। তাঁর বাড়ি কৃষ্ণনগর-২ ব্লকের ধুবুলিয়া-২ পঞ্চায়েতের মায়াকোল এলাকায়। গত কয়েক দিন ধরে তিনি নিখোঁজ থাকায় তাঁর স্ত্রী শ্যামলী ঘোষ থানায় নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন। তদন্তে নেমেই প্রথমে প্রহ্লাদ ও নমিতাকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করেই বাবুসোনার খুনের কথা জানতে পারেন তদন্তকারীরা। কোথায় গেলে বাবুসোনার কাটা মুণ্ডু পাওয়া যাবে, তা পুলিশকে জানিয়েছেন অভিযুক্ত স্বামী-স্ত্রী। তার ভিত্তিতেই শুক্রবার সকালে বাবুসোনার কাটা মুণ্ড উদ্ধার হয়েছে ধুবুলিয়া থেকে।
তদন্তকারীরা জানান, জেরায় প্রহ্লাদ স্বীকার করেছেন, তাঁর স্ত্রী নমিতার সঙ্গে বাবুসোনার ‘ঘনিষ্ঠ’ সম্পর্ক তৈরি হয়। সম্পর্কের কথা জানার পরে তিনি বাবুসোনাকে স্ত্রীর সঙ্গে মেলামেশা করতে বারণ করেন। কিন্তু বাবুসোনা তা শোনেননি। বাধ্য হয়ে নমিতাকে দিয়ে ফোন করিয়ে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পীরপুরে নিজের বাড়িতে বাসুসোনাকে ডেকে পাঠান প্রহ্লাদ। সেখানে তাঁর বাড়ির পাশের কলাবাগানে বাবুসোনাকে নিয়ে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগিয়ে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। যদিও পুলিশের কাছে প্রহ্লাদ দাবি করেন, তাঁর আত্মীয় শঙ্করই বাবুসোনাকে খুন করেছেন। শঙ্করকে সাহায্য করেছেন প্রসেনজিৎ নামে আরও আত্মীয়। মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধারাল অস্ত্র দিয়ে বাবুসোনার মুণ্ডু কাটা হয়। ওই কাটা মাথাই পুঁতে রাখা হয় বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার দূরে আমবাগানে। প্রমাণ লোপাট করতে বাবুসোনার জামাকাপড় আরও ২০০ মিটার মাটির নীচে পুঁতে দেওয়া হয়। আর মাথাভাঙা নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হয় দেহ।
বাবুসোনার কাটা মাথা উদ্ধারের কিছু পরেই গ্রেফতার করা হয় শঙ্করকে। পরে প্রহ্লাদকে সঙ্গে মাথাভাঙা নদীতে বাবুসোনার দেহ উদ্ধারে যায় পুলিশ। তবে দেহ এখনও পাওয়া যায়নি। সন্ধ্যায় আর এক অভিযুক্ত প্রসেনজিৎকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কৃশানু রায় বলেন, ‘‘ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে তা তথ্য পাওয়া যাচ্ছে, তার ভিত্তিতে তদন্ত এগোচ্ছে।’’ বাবুসোনার স্ত্রী শ্যামলী বলেন, “আমার স্বামীকে মিথ্যা ভাবে ফাঁসিয়ে খুন করেছে নমিতা ও তাঁর স্বামী। আমি ওঁদের ফাঁসি চাই।” মৃতের দাদা রঞ্জিত ঘোষ বলেন, ‘‘ভাইয়ের বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ মিথ্যে। নিখুঁত পরিকল্পনা করে ঠান্ডা মাথায় খুন করা হয়েছে ভাইকে। দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy