নিহত বালক রেহান।
মুক্তিপণের দাবিতে শমসেরগঞ্জে এক সাত বছরের বালককে অপহরণ করে খুনের ঘটনার পুলিশি তদন্তে সামনে এল লটারিতে প্রাপ্ত টাকার বণ্টন নিয়ে বিবাদের জেরেই এই খুন। অপহরণ ও খুনের ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রায় কিনারা করে ফেলেছে এই ঘটনার বলে দাবি পুলিশের। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। খুব দ্রুত খুনিদের ধরা যাবে।’’
শনিবারের এই অপহরণ ও খুনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫ জনকে আটক করেছে শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশ। এদের মধ্যে মৃতের বাবা সুরজ মহলদারের সঙ্গে শেয়ারে লটারির টিকিট কেটেছিলেন আরও যে দু’জন, সেই দু’জনও রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধে রাতেই প্রথমে তাদের বাড়ি থেকে তুলে আনে পুলিশ। এদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুরো ঘটনা সামনে আসে পুলিশের। রাতেই পাশেই হাউসনগর গ্রাম থেকে আরও দু’জনকে আনা হয় থানায়। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ধুলিয়ান শহরের ২ নম্বর ওয়ার্ড লক্ষ্মীনগর থেকেও আরও এক জনকে রবিবার রাতেই আটক করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে অপহরণ ও খুনের ঘটনার কথা স্বীকার করেছে ধৃতরা। এদের সঙ্গে রয়েছে হাউসনগরের আরও একজন। তার কাছেই রয়েছে মৃত বালকের হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি। তাকে ধরতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। মোবাইলটি পেলেই গোটা ঘটনাই পরিষ্কার হয়ে যাবে বলে মনে করছেন পুলিশের আধিকারিকেরা।
পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই বালক যখন বাড়ির সামনে ছোট মোবাইল নিয়ে খেলা করছিল তখন শনিবারের লকডাউন চলছিল। বেলা ১১টা নাগাদ এলাকা ছিল শুনশান। হাউসনগরের আটক দুই ব্যক্তিসহ পলাতক আরও এক জন মিলে ওই সাত বছরের বালককে ভুলিয়ে নিয়ে যায়। হাউসনগরের মাঠে যেখানে মৃতদেহ মেলে তার পাশেই রয়েছে একটি পরিত্যক্ত ঘর। সেখানেই নিয়ে গিয়ে রাখা হয় ওই বালককে। সেখানেই ছিল লটারি টিকিটের আরও দুই ভাগীদার। তারাই ওই বালকের কাছে থাকা মোবাইল থেকে বাড়িতে ফোন করে দু’লক্ষ টাকা দাবি করে বলে পুলিশের দাবি। বাড়ির লোককে বিভিন্ন জায়গায় যেতে বলা হলেও শিশুকে ফেরত দেওয়ার কোনও পরিকল্পনাই তাদের ছিল না বলে পুলিশের ধারণা।
পুলিশ বিষয়টা জেনে গেছে তা বুঝতে পেরেই বালককে রাখা হয়েছিল যে পরিত্যক্ত ঘরে সেখানেই মারধোর শুরু করা হয়। কান্নাকাটি করতে শুরু করে ছেলেটি। তখন কান্না থামাতে গলা টিপে খুন করা হয়। একটি বাগানে দেহ ফেলে রেখে পালিয়ে যায় তারা।
সুরজ বলছেন, ‘‘টাকার জন্য ছেলেক খুন করবে, ভাবতেও পারছি।’’ মৃতের কাকা মহুম্মদ রিটন মহালদার জানান, বছর দেড়েক আগে দাদা সুরজ (মৃতের বাবা) ২৬ লক্ষ টাকা পুরস্কার পেয়েছিল লটারিতে। তবে তাঁরা টিকিট বিক্রি করে ১৮ লাখ টাকা পান। টিকিটের দাম ৬০ টাকা ভাগ করে দিয়েছিলেন সুরজ ও তাঁর এক বন্ধু। তিনি আবার সেই টাকা ভাগ করেছিলেন আরও এক জনের সঙ্গে। লটারি পাওয়ার পরে পুরস্কারের টাকা ভাগ নিয়ে তাই বিতণ্ডা শুরু হয়। সেখানে সুরজ পান ৮ সাখ, বিতণ্ডা মিটিয়ে তাঁর দাদা পান ২ লাখ। পুলিশের অনুমান, এই দু লাখ টাকা আদায়ের জন্যই এই অপহরণ ও খুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy