প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
১৭ বছর আগে মুম্বইয়ে ব্যবসায়িক সঙ্গীকে খুন করেছিলেন। তার পর পুলিশের চোখে ধোঁকা দিয়ে পালিয়ে পালিয়েই বেড়াচ্ছিলেন। গ্রেফতারি এড়াতে নাম ভাঁড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় গোপন ডেরায় আত্মগোপন করে ছিলেন। বার বার ডেরা বদলও করেছেন। অবশেষে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার হলেন মূল অভিযুক্ত। গ্রেফতারের পর তাঁকে ট্রানজিট রিমান্ডে মুম্বই নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর।
২০০৭ সালের অক্টোবর মাসে, মুম্বইয়ের গণেশ মূর্তি নগর এলাকায় খুন হয়েছিলেন নীলাচল পাণিগ্রাহী নামে এক ব্যবসায়ী। অভিযোগ উঠেছিল তাঁর ব্যবসায়িক সঙ্গী মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা কালু হাজি শেখ ওরফে রাজীবের বিরুদ্ধে। টাকাপয়সা নিয়ে বিবাদ থেকেই খুনের ঘটনা ঘটেছিল বলে অভিযোগ। তার পর থেকেই পলাতক ছিলেন রাজীব। বার বার তাঁকে ধরার চেষ্টা করেছিল পুলিশ। কিন্তু ব্যর্থ হয়। পুলিশকে ধোঁকা দিয়ে পালিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছিলেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত নীলাচলের বাড়ি ছিল ওড়িশায়। তবে কর্মসূত্রে থাকতেন মুম্বইয়ে। সেখানেই ২০০৪ সাল থেকে রাজীবের সঙ্গে মিলে ব্যবসা করতেন। দু’জনই একে অপরের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। ২০০৭ সালের ১৫ অক্টোবর নীলাচলের বাড়িতে বসে দুই বন্ধু মদ্যপান করছিলেন। সে সময় বাড়িতেই ছিলেন নীলাঞ্চলের স্ত্রীও। রান্নাঘরে তিনি যখন রান্না করছিলেন, তখন বাইরের ঘরে দুই বন্ধুর মধ্যে বচসা বাধে। টাকাপয়সা নিয়েই ঝামেলার সূত্রপাত। অভিযোগ, ঝামেলার মাঝেই রাজীব তাঁর বন্ধুর পেটে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। বার কয়েক আঘাতের পর নীলাচলের বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান তিনি।
রান্নাঘর থেকে স্বামীর আর্তনাদ শুনে ছুটে আসেন নীলাচলের স্ত্রী। এসে দেখেন ঘরের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন তাঁর স্বামী। দ্রুত তাঁকে ওই অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার পরের দিন মৃত্যু হয় নীলাচলের। রাজীবের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ঘটনার পর থেকেই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করতে তৎপর ছিল মুম্বই পুলিশ। কিছু দিনের মধ্যেই মুম্বই থেকে পালিয়ে ওড়িশাতে গা-ঢাকা দেন রাজীব। সেই গোপন আস্তানায় হানা দেয় মুম্বই পুলিশ। কিন্তু পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে ওড়িশা থেকে পালিয়ে চলে আসেন মুর্শিদাবাদের ডোমকলে। ২০০৭, ২০০৮ এবং ২০২০ সালে তাঁকে ধরা চেষ্টা করেছিল পুলিশ। অবশেষে দিন কয়েক আগে মুর্শিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জমির প্লট বিক্রি করে মোটা টাকার মুনাফা একা আত্মসাৎ করার পরিকল্পনা করেছিলেন রাজীব। সেই থেকেই খুনের ছক কষেন তিনি। মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। উত্তরবঙ্গ থেকে গাঁজা নিয়ে ওড়িশায় পাচার শুরু করেন অভিযুক্ত কালু শেখ। বিএসএফের একাধিক মামলায় নাম উঠে আসে রাজীবের। মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার পুলিশ সুপার সূর্যপ্রতাপ যাদব জানান, অন্য এক মামলায় অনেক দিন ধরেই রাজীবকে খোঁজ করা হচ্ছিল। সম্প্রতি তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। জেরার মুখে অভিযুক্ত ১৭ বছর আগের খুনের কথা স্বীকার করেন। তার পরই তা নিয়ে মুম্বই পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ। তার পর মুম্বই পুলিশ এ রাজ্যে এসে অভিযুক্তকে নিজেদের হেফাজতে নেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy