কৃষ্ণনগরের কর্মিসভায় আক্রমণাত্মক মমতা। ছবি: গৌতম প্রামাণিক।
এ বার চতুর্মুখী ভোট প্রায় সর্বত্র। কৃষ্ণনগরও তার ব্যতিক্রম নয়। উল্টে কৃষ্ণনগরে এ বার পাখির চোখ করে জোর প্রচারে নেমেছে বিজেপি। এই প্রেক্ষিতে শুক্রবার কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের কর্মিসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে ভোট কাটার উদ্বেগটাই সবচেয়ে বেশি ধরা পড়ল দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গলায়। মমতার কথায়, “সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেস রোজ কথা বলছে। বলছে ভোট কাটাকাটি করে তবে জিতব। একটা আসনও পাবে না ওরা। তেহট্ট, কালীগঞ্জ, পলাশিপাড়া সর্বত্র ভোট কাটাকাটি করতে চাইছে।’’ কংগ্রেস-সিপিএম-বিজেপিকে ‘বসন্তের কোকিল’ আখ্যা দিয়ে মমতা বলেন, “ভোটের সময় ভোটু ভোটু করে ডাকবে। হয়ে গেলে সব ভোকাট্টা।”
খুদে সমথর্ক: নদিয়ার কর্মিসভায়
গৌতম প্রামাণিকের তোলা ছবি।
কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি-র পুরনো ভোটব্যাঙ্ক রয়েছে। প্রবল মোদী হাওয়া ও প্রার্থী সত্যব্রত মুখোপাধ্যায়ের (জলুবাবু) ব্যক্তিগত ক্যারিশমার প্রভাবে এ বার ভাল ফল করার আশায় আছে বিজেপি। তারা জিততে না পারলেও বাম বিরোধী ভোটে ভাগ বসানোর জন্য সিপিএম-এর সুবিধা হবে নিশ্চয়। সেই দিকে ইঙ্গিত করে এ দিনের সভায় তৃণমূলনেত্রী বলেন, “টাকার বস্তা এনে হিন্দু-মুসলিম ভোট ভাগাভাগি করে সিপিএমকে জিতিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বিজেপি।’’ তাঁর কথায়,‘‘লক্ষ্য করবেন যেদিন থেকে আমরা সরকার গড়েছি সেই দিন থেকে সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি ও তাদের কিছু দোসর এক সঙ্গে আমাদের কুৎসা করছে। নির্বাচনের সময় কংগ্রেস হিন্দুদের মুসলিমের বিরুদ্ধে এক হতে বলে আর মুসলিমদের বলে হিন্দুদের বিরুদ্ধে এক হতে। কিন্তু আমি বলি হিন্দু-মুসলিম এক হতে হবে। দাঙ্গাকে আমরা সমর্থন করি না।” এরপরে তিনি গুজরাতের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা টেনে বলেন,‘‘যদি ওদের কাছ থেকে কেন্দ্র ৭৪ হাজার কোটি টাকা কেটে নেয় তাহলে দেখব নমো নমো হবে নাকি নো নো (no) হবে। আমি গুজরাতের মানুষকে ভালবাসি। কিন্তু নো-নো-দের না।
আগের দিন বৃহস্পতিবার মুর্শিদাবাদের লালবাগে দলীয় কর্মিসভায় বাংলাকে ভাগ করার জন্য চক্রান্ত হচ্ছে বলে সরব হয়েছিলেন মমতা। এদিন তিনি তেলঙ্গানা ভাগ নিয়ে একই সঙ্গে সিপিএম, বিজেপি ও কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন। ওই তিন দলের মধ্যে আঁতাতের অভিযোগ করে মমতা বলেন, “কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম দেশকে ভাগ করছে। জোর করে তেলঙ্গানা ভাগ করল। আমরা বলেছিলাম রাজ্য সিদ্ধান্ত নেবে কোনটা ভাল তা। আমরা ভোট চেয়েছিলাম। কিন্তু ভোট হল না। সিপিএম, বিজেপি পাপেট হয়ে বসে থাকল। ওরা নাকি আবার বিরোধী দল। এরা এক সঙ্গে থাকলে শুনবেন কোন দিন বলবে শিলিগুড়ি আমাদের সঙ্গে নেই। নদিয়া নেই। কোন দিন বলবে বাংলা নেই।”
কৃষ্ণনগরে তৃণমূলের কর্মিসভার পরে পথ আটকে টিফিন বিলি।
কঠিন লড়াইয়ে একজোটে দলকে ঝাঁপানোর ডাকও দিয়েছেন মমতা। এদিন মঞ্চে দলের বিভিন্ন নেতা, মন্ত্রী ও জনপ্রতিনিধিদের নাম করে ডাকার পরে নেত্রী বলেন, ‘‘এখানে সকলেই আছে। আমাদের দল একটা বিরাট পরিবার। অনেক কষ্ট করে টিকিয়ে রাখতে হয়।’’
বাস্তবিকই তৃণমূল প্রার্থী তাপস পালের প্রথম প্রচারে দলের জেলা নেতৃত্ব-সহ বিধায়করা উপস্থিত না থাকলেও এ দিন দলনেত্রীর সভায় হাজির ছিলেন সকলেই। তাপসকে দলের একাংশের ‘না-পসন্দ’-এর কথা বিলক্ষণ জানেন দলনেত্রী। তাঁদের বার্তা দিতেই সম্ভবত প্রকাশ্যে তাপসের প্রশংসাও করেন। মঞ্চের মাঝখানে প্রথম সারিতে বসেছিলেন তাপস পাল। প্রার্থী-পরিচিতির সময় মমতা বলেন, ‘‘তাপস জিতে সিরিয়াসলি কাজ শুরু করেছে। ও অভিনেতা। ওকে সিনেমা করতে হয়। এ বার যেমন দেব, মুনমুন, সন্ধ্যাদিকে দাঁড় করিয়েছি।’’ মঞ্চ থেকে নেমে যাওয়ার সময় মমতাকে প্রণাম করেন তাপস পাল। হাসিমুখে মমতার আশীর্বাদ ‘ভাল করে কাজ করো।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy