পোড়া খেতে। নিজস্ব চিত্র
নিজের ১৮ কাঠা জমিতে আখ চাষ করেছিলেন নদিয়ার হরিপুর পঞ্চায়েতের মেথিডাঙা জামতলার বাসিন্দা নিরঞ্জন বিশ্বাস। মাঠ ভরা ফসল যখন বিক্রির তোড়জোড় শুরু করলেন তখন কোনও মহাজনই প্রাপ্য দামের অর্ধেকও দিতে রাজি হননি বলে অভিযোগ। চরম হতাশায় রবিবার সকালে নিজের জমির ফসলেই আগুন ধরিয়ে দেন নিরঞ্জন! আশপাশের লোক, অন্য চাষিরা ছুটে এসে যত ক্ষণে আগুন নেভান, তত ক্ষণে মাঠের অর্ধেক আখ জ্বলে খাক হয়ে গিয়েছে!
ঘটনাটি সামনে আসায় কৃষি দফতর অস্বস্তিতে পড়েছে। শান্তিপুরের সহকারী কৃষি অধিকর্তা সন্দীপ মিত্র বলেন, “ফসল বিক্রিতে আখচাষিদের সমস্যা হচ্ছে বলে আমাদের কেউ জানাননি। শান্তিপুরে এখন আগের থেকে আখ চাষ বেড়েছে। কোথায় কী সমস্যা হচ্ছে তা খোঁজ নিচ্ছি।” যেখানে এই ঘটনা ঘটেছে সেই হরিপুর পঞ্চায়েতের প্রধান শোভা মণ্ডল সরকারের কথায়, “এই সমস্যার কথা আখচাষিরা জানাননি। খোঁজ নিচ্ছি।”
তবে নদিয়া ও মুর্শিদাবাদের আখচাষিরা জানাচ্ছেন, পলাশি সুগার মিল আগের মতো আখ না কেনার ফলে সমস্যা বেড়েছে। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘ওই মিল নিয়ে আইনি জটিলতা চলছে। তাই মন্তব্য করব না। তবে বিষয়টির উপরে নজর রয়েছে।’’
কৃষি বিপণন দফতরের এক আধিকারিক জানান, ‘সুফল বাংলা’-সহ একাধিক প্রকল্পে চাষিদের থেকে ধান, পাট, গম প্রভৃতি ফসল সরকার কেনে। কিন্তু নদিয়ায় আখ চাষ বেশি হয় না বলে এখনও পর্যন্ত সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে তা কেনা হয়নি। সাধারণত চাষিরা নিজেরাই চিনিকল, গুড়কল বা কলকাতার মহাজনদের কাছে তা বিক্রি করেন।
শান্তিপুরের শতাধিক মানুষ আখ চাষের সাথে যুক্ত। এখানকার আখ মূলত কেনেন কলকাতার মহাজনেরা। শান্তিপুরের আখচাষিদের দাবি, এই বছর আখের চাহিদায় ভাটা পড়েছে। চাষিদের কথায়, ‘‘আখ চাষের জন্য বিঘা-পিছু কুড়ি থেকে পঁচিশ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। বিঘা-পিছু হাজার পঞ্চাশ টাকায় তা বিক্রিও হয়। কিন্তু এই বছরে অর্ধেক দামও মিলছে না।’’ এ দিন মাথায় হাত দিয়ে ফাঁকা দৃষ্টি নিয়ে বসেছিলেন নিরঞ্জন। কোনওমতে বললেন, “গত বছরও ৫০ হাজারের মতো লাভ করেছি। কিন্তু এ বছর সিকিভাগ দামও পাচ্ছি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy