মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।
নিজের বাড়ি নিজেই তৈরি করানোর ব্যবস্থা করুন উপভোক্তা—চাইছে নবান্ন। প্রশাসনিক সূত্রের দাবি, সেই মর্মে নজরদারির নির্দেশ জেলা প্রশাসনগুলিকে ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। কারণ, প্রশাসন মনে করছে, একসঙ্গে বিপুল সংখ্যক মানুষ যে হেতু বাড়ি তৈরির টাকা পেতে শুরু করেছেন, তাই এলাকাভিত্তিক ভাবে একাধিক উপভোক্তাকে একত্র করে টাকার বিনিময়ে তাঁদের বাড়ি তৈরি করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দিতে পারেন সেই এলাকার ‘প্রভাবশালীরা’। সেই প্রবণতা ঠেকাতেই জেলা প্রশাসনগুলিকে তৎপর থাকার নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। নির্মাণ সরঞ্জামের জোগান স্বাভাবিক থাকছে কি না, সে ব্যাপারেও নজরদারির দায়িত্ব জেলাশাসকদের দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের এক কর্তার কথায়, “রাজনৈতিক প্রভাব থেকে আবাসের গোটা প্রক্রিয়াটিকে মুক্ত রাখার বার্তা শুরু থেকে দিচ্ছে রাজ্য সরকার। সেই কারণে জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, পুলিশ কমিশনার, এসডিও এবং বিডিওদের উপর দায়িত্ব ছাড়া হয়েছে। জেলা প্রশাসনগুলির উদ্দেশে এলাকার প্রভাবশালীদের ঠেকানোর এই মৌখিক বার্তাও নবতম সংযোজন।” পর্যবেক্ষকদের একাংশের বক্তব্য, অতীতে আবাস বা একশো দিনের কাজের মতো প্রকল্পে রাজনৈতিক প্রভাব পড়ার অভিযোগ উঠেছিল। তা নিয়ে জলঘোলা কম হয়নি। এই দুই প্রকল্পে কেন্দ্রের বরাদ্দ বন্ধ রাখার নেপথ্যে সেই সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগও অন্যতম একটি কারণ ছিল। পরে অবশ্য যা সংশোধনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য। এ বার আবাসের বরাদ্দ নিজেরাই দিচ্ছে রাজ্য। ফলে শুরু থেকে আরও সতর্ক থাকার বার্তা পাওয়া যাচ্ছে।
মঙ্গলবারই আবাস উপভোক্তাদের ১১ লক্ষ এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আরও এক লক্ষ—মোট ১২ লক্ষ উপভোক্তাকে আবাসের প্রথম কিস্তির বরাদ্দ দেওয়ার কাজ শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দফায় দফায় অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর কাজ চলছে জেলায় জেলায়। প্রশাসনিক কর্তাদের অনেকেই মনে করছেন, এত মানুষ একসঙ্গে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করলে ইট-বালি-সিমেন্ট ইত্যাদির চাহিদা তুঙ্গে উঠবে। চাহিদা বাড়বে বাড়ি তৈরির মিস্ত্রিরও। এই অবস্থায় সেই সবের জোগানে ঘাটতি দেখা দিলে সমস্যায় পড়বেন মানুষ। দ্বিতীয় কিস্তির বরাদ্দ পেতে প্রথম কিস্তির টাকায় বাড়ি তৈরির কাজ চলছে, সেই প্রমাণ রাখতে হবে। এই জায়গাতেই সুযোগ নিতে পারেন এলাকার ‘প্রভাবশালীরা’। মিস্ত্রি থেকে সরঞ্জাম, সব জোগানের দায়িত্ব নিয়ে অর্থের বিনিময়ে বাড়ি তৈরি করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব তাঁরা দিতে পারেন উপভোক্তাদের। সেই প্রবণতা সফল হলে তা ঘিরেও নতুন বিতর্ক হতে পারে। তাই শুরুতেই নিজের বাড়ি উপভোক্তা যাতে নিজেই তৈরির ব্যবস্থা করেন, সেই বার্তা দিতে চাইছে প্রশাসন।
পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ঘোষণা মতো প্রথম কিস্তির টাকা উপভোক্তাদের দিচ্ছেন। সরকার চায় সুষ্ঠু ভাবে কাজটা হোক। জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে পুরো কাজটা হবে। সেই নির্দেশই জেলাশাসকদের দেওয়া হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy