Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

স্কুলে ‘খাওয়ার ঘর’ বিতর্কে ইতি রাজ্যের

কোচবিহারের যে সব স্কুলে ৭০ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু পড়ুয়া রয়েছে, সেগুলির তালিকা চেয়ে জেলা শিক্ষা আধিকারিক এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকদের চিঠি দিয়েছিলেন ওই জেলার সংখ্যালঘু বিষয়ক আধিকারিক।

ছবি: সংগৃহীত।

ছবি: সংগৃহীত।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ জুন ২০১৯ ০২:৩২
Share: Save:

স্কুলে ‘ডাইনিং হল’ বিতর্কের অবসান ঘটাল রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুক্রবার জানালেন, স্কুলে কোনও বিশেষ সম্প্রদায়ের পড়ুয়াদের মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য ‘ডাইনিং হল’ বা খাওয়ার ঘর তৈরির কোনও পরিকল্পনা সরকারের ছিলও না, এখনও নেই। রাজ্য সরকারের সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরও প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানাল, এ বছর স্কুল শিক্ষা দফতর স্কুলগুলিতে মিড ডে মিল খাওয়ার ঘর তৈরির জন্য প্রায় ২০০ কোটি টাকা মঞ্জুর করার পরেও চাহিদা মেটেনি। তাই সংখ্যালঘু বিষয়ক দফতর এ কাজে আরও টাকা বরাদ্দের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই ভাবে, তফসিলি জাতি-উপজাতি অঞ্চলে অনগ্রসর শ্রেণি কল্যাণ দফতরও এ কাজে টাকা বরাদ্দ করেছে। কিন্তু ওই সব টাকা দিয়ে যে পরিকাঠামো গড়া হবে, তার সুবিধা পাবে সব সম্প্রদায় নির্বিশেষে সব পড়ুয়াই।

কোচবিহারের যে সব স্কুলে ৭০ শতাংশের বেশি সংখ্যালঘু পড়ুয়া রয়েছে, সেগুলির তালিকা চেয়ে জেলা শিক্ষা আধিকারিক এবং জেলা স্কুল পরিদর্শকদের চিঠি দিয়েছিলেন ওই জেলার সংখ্যালঘু বিষয়ক আধিকারিক। চিঠিতে আরও বলা হয়েছিল, স্কুলে মিড ডে মিল খাওয়ার ঘর বা ডাইনিং হল বানানোর জন্য সংখ্যালঘু বিষয়ক এবং মাদ্রাসা শিক্ষা দফতরে একটি প্রস্তাব পাঠাতে হবে। তাই ওই তথ্য চাওয়া হচ্ছে। গত মঙ্গলবার পাঠানো ওই চিঠি বৃহস্পতিবার প্রকাশ্যে আসা মাত্র বিষয়টি নিয়ে জলঘোলা শুরু করে বিজেপি। চিঠিতে কোথাও সংখ্যালঘুদের কথা বলা না থাকলেও বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ টুইট করে বিষয়টিতে বৈষম্যের অভিযোগ তুলে বিতর্ক তৈরি করেন।

বিতর্কের প্রেক্ষিতে এ দিন বিধানসভার মিডিয়া কর্নারে বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান হুঁশিয়ারি দেন, ‘‘এই ধরনের বৈষম্যমূলক নির্দেশিকা প্রত্যাহার করা না হলে সোমবার থেকে বিধানসভার ভিতরে-বাইরে আন্দোলনে নামব।’’ বিধানসভার ভিতরেও বিষয়টি তুলে শিক্ষামন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেন মান্নান। বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, অশোক ভট্টাচার্য এবং রবীন দেব। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জানান, এমন নির্দেশিকার কথা তাঁর জানাই নেই! তিনি খোঁজ নেবেন।

পরে বিষয়টি জেনে মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় নিজের ঘরে বলেন, ‘‘স্কুলে ছেলে-মেয়ে, হিন্দু-মুসলিম বা অন্য কোনও ধরনের বৈষম্য করার প্রশ্নই নেই। আমরা সব স্কুলে পানীয় জল, শৌচালয় বা বসে মিড ডে মিল খাওয়ার জন্য ডাইনিং হল তৈরি করছি। ডাইনিং হল তৈরির সব টাকা শিক্ষা দফতর দিতে পারছে না। তাই সংখ্যালঘু দফতর থেকে টাকা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এক দফতরের টাকা অন্য দফতরের কাজে খরচ করলে কেন্দ্রীয় সরকার প্রশ্ন তুলবে। তাই ব্যাকরণ মানতে যেখানে সংখ্যালঘু পড়ুয়া ৭০ শতাংশের বেশি, সেগুলির নাম পাঠানোর কথা সরকারি চিঠিতে লেখা হয়েছে। টাকা দেবে সংখ্যালঘু দফতর। ডাইনিং হল গড়া হলে সেখানে খাবে স্কুলের সব পড়ুয়া।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE