Advertisement
১৩ জানুয়ারি ২০২৫
Banglar Bari Project

বাংলার বাড়ি প্রকল্পে কড়া নবান্ন, আবাস তৈরিতে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য রুখতে দায়িত্ব বিডিওদের

প্রকল্পের ১২ লক্ষ উপভোক্তার প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তি হিসেবে ৬০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। এই টাকার মাধ্যমে বাড়ি তৈরির প্রথম পর্যায়ের কাজ ৩-৬ মাসে শেষ করতে হবে।

আবাসে কড়া নজর নবান্নের।

আবাসে কড়া নজর নবান্নের। — ফাইল চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০২৫ ১১:৫৭
Share: Save:

বাংলার বাড়ি প্রকল্পে উপভোক্তাদের সুরক্ষা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিল নবান্ন। এই প্রকল্পে মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য পুরোপুরি বন্ধ এবং উপভোক্তাদের সরাসরি সহযোগিতা করতে ব্লকের বিডিওদের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

পঞ্চায়েত দফতর থেকে এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি চিঠির পাশাপাশি নতুন একটি এসওপি-ও পাঠানো হয়েছে। অতীতে কেন্দ্রীয় সহায়তাপ্রাপ্ত আবাস প্রকল্পে সামগ্রী সরবরাহের নামে উপভোক্তাদের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছিল রাজনৈতিক দলের নেতাদের বিরুদ্ধে।

সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন, উপভোক্তারা যেন নিজেরাই বাড়ি তৈরির কাজটি করেন এবং কোনও মধ্যস্থতাকারীর সহযোগিতা না নেন। নবান্নের নির্দেশ অনুযায়ী, বাড়ি তৈরির কাজ শুরুর আগে বিডিওদের নিজ নিজ ব্লকের মার্কেট কমিটি এবং বাড়ি তৈরির উপকরণের বিক্রেতাদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। এর মাধ্যমে সঠিক দামে গুণগত মান বজায় রেখে ইট, বালি, স্টোনচিপ, অ্যাসবেস্টস ইত্যাদি উপকরণ সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে।

প্রয়োজনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তা নেওয়ার অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, জেলাশাসকেরা সরবরাহকারীদের সঙ্গে বৈঠক করে সামগ্রী মজুত এবং সরবরাহ করার ব্যবস্থা ঠিক করবেন।

এই প্রকল্পের ১২ লক্ষ উপভোক্তার প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তি হিসেবে ৬০ হাজার টাকা পাঠানো হয়েছে। নিয়মানুযায়ী, এই টাকার মাধ্যমে বাড়ি তৈরির প্রথম পর্যায়ের কাজ ৩-৬ মাসের মধ্যে শেষ করতে হবে। কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক হলে দ্বিতীয় কিস্তির অর্থ বরাদ্দ হবে।

তবে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার তিন মাসের মধ্যেই পুরো বাড়ি নির্মাণ শেষ করতে হবে। রাজ্য সরকার চায়, উপভোক্তারা যেন কোনও হয়রানি ছাড়াই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বাড়ি নির্মাণ শেষ করতে পারেন। এ জন্য সরকার মধ্যস্বত্বভোগীমুক্ত পদ্ধতি চালু করে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা দিচ্ছে। বিডিওদের তত্ত্বাবধানে উপভোক্তারা যাতে প্রকল্পের অর্থ সঠিক ভাবে ব্যবহার করেন, সেই বিষয়েও বিশেষ দৃষ্টি রাখা হয়েছে।

আবাস নির্মাণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে কঠোর নজরদারির ব্যবস্থাও করা হয়েছে। জেলা, ব্লক এবং গ্রাম পঞ্চায়েত স্তরে প্রতি মাসে অন্তত এক বার নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে। এই কাজের জন্য অ্যাপ-ভিত্তিক জিও ট্যাগিং ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। ফলে বাড়ি নির্মাণের প্রতিটি পর্যায়ে প্রকৃত অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে বলেই মনে করছে পঞ্চায়েত দফতর।

এই পদক্ষেপগুলির মাধ্যমে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে উপভোক্তারা যেমন দ্রুত তাঁদের বাড়ি নির্মাণ করতে পারবেন, তেমনই প্রকল্পটি স্বচ্ছতার প্রশ্নে জবাবদিহি চেয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারবেন বলে আশা করছেন নবান্নের শীর্ষ আধিকারিকেরা।

আবাস প্রকল্প কার্যকর নিয়ে নবান্নের এমন সজাগ দৃষ্টি প্রসঙ্গে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে, আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে লক্ষ্মীর ভান্ডার, কন্যাশ্রীর মতো প্রকল্পগুলির পাশাপাশি শাসকদলের কাছে বড় হাতিয়ার হতে পারে বাংলার বাড়ি প্রকল্প।

এই প্রকল্প যাতে সুষ্ঠু ভাবে গ্রামীণ জনতার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সঙ্গে আবাস পাওয়ার ক্ষেত্রে যাতে স্থানীয় স্তরে কোনও রকম দুর্নীতির অভিযোগ না ওঠে, সেই বিষয়টি নজরে রাখছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাই আবাস নির্মাণের কাজটি পঞ্চায়েত দফতরের হাতে থাকলেও এই বিষয়ে কড়া নজর রয়েছে নবান্নের।

অন্য বিষয়গুলি:

Banglar Bari Project Mamata Banerjee Nabanna BDO West Bengal CM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy