কেন হার্ট অ্যাটাকের শিকার হচ্ছে শিশুরাও, প্রতিকারের উপায় কী? ফাইল চিত্র।
হার্টের সমস্যা কেবল বড়দের নয়, ছোটদেরও হতে পারে। জন্মগত ভাবে হার্টের সমস্যা অনেকেরই থাকে। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে আচমকা হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর ঘটনা খুবই বিরল। কিন্তু এমনই ঘটেছে গত কয়েক মাসে। ক্লাসে বসেই আচমকা হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বছর আটেকের এক শিশুকন্যার। এই ঘটনা বেঙ্গালুরুর। আবার উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে বছর চারেকের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে হার্ট অ্যাটাকে। স্কুলের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা চলার সময়ে আচমকাই হার্ট অ্যাটাক হয় তার। হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি তাকে।
চিকিৎসক সুবর্ণ গোস্বামী বলছেন, “শিশুদের ক্ষেত্রে হৃৎপিণ্ডের সমস্যা দু’প্রকারের হয়ে থাকে। প্রথমটি হল জন্মগত। আর দ্বিতীয়টি জন্মের পরে হওয়া সমস্যা। জন্মগত ভাবে হৃদ্যন্ত্রের সমস্যা, অর্থাৎ কনজেনিটাল হার্ট ডিজ়িজ় হলে হৃদ্যন্ত্রটি আকারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ছোট বা বড় হতে পারে। পরিশোধিত রক্ত সঞ্চালন ঠিকঠাক ভাবে না হওয়া বা হৃদ্যন্ত্রে ছিদ্র থাকার মতো সমস্যা হতে পারে। পাশাপাশি, পালমোনারি ভাল্ভ স্টেনোসিস নামে সমস্যাটিও দেখা দিতে পারে।”
জন্মগত ভাবে হার্টের সমস্যার নেপথ্যে কোনও নির্দিষ্ট কারণ এখনও দেখা যায়নি। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, হৃদ্যন্ত্রে ত্রুটি থাকলেও তা জন্মের সময় ধরা না-ও পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে জন্মের কিছু পর থেকে হৃদ্যন্ত্রে নানা সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। যেমন, শিশুর অল্পেই হাঁপ ধরবে। খেলাধূলার সময়ে ক্লান্ত হয়ে পড়বে, শ্বাসকষ্টের সমস্যাও দেখা দিতে পারে। এই সব ছোট ছোট লক্ষণ এড়িয়ে গেলে চলবে না।
এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পালের বক্তব্য, “জন্মগত বা সায়ানোটিক সমস্যায় শুরু থেকেই চিকিৎসা হওয়া উচিত। আর নন সায়ানোটিকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, শিশুর ওজন বাড়ছে না। খাওয়া কমে যাচ্ছে। খাওয়ার সময় শিশু ঘেমে যাচ্ছে। এমন লক্ষণ দেখা দিলে সতর্ক হতে হবে।” আবার উল্টোটাও হয়। চিকিৎসক জানাচ্ছেন, শিশুর ওজন যদি বেড়ে যায়, স্থূলত্ব দেখা দেয় ছোট থেকেই, তা হলে তার হাত ধরেই ডায়াবিটিস, হার্টের রোগ দেখা দেয়। আবার অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় মায়ের যদি রক্তাল্পতা দেখা দেয়, তা হলেও তার প্রভাব পড়তে পারে শিশুর হৃদ্যন্ত্রে। মা-বাবার হাইপারটেনশন থাকলে সন্তানেরও কম বয়স থেকেই তা দেখা দিতে পারে।
অনেক সময় দেখা যায়, শিশুরা বাইরের খাবার, বেশি তৈলাক্ত খাবার খেতে অভ্যস্ত। দীর্ঘ দিন এমন খাবার খেলে তার প্রভাব পড়তে পারে হার্টের উপরে। এখন শিশুদের মধ্যে খেলাধুলোর প্রবণতা কমে গিয়েছে। ফলে সারা দিন একই জায়গায় বসে পড়াশোনা করা বা গ্যাজেটে অত্যধিক আসক্তি শিশুদের আলস্য আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। শারীরিক কসরত কম হচ্ছে, ফলে ছোট থেকেই গ্যাস-অম্বলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে যাকে চিকিৎসার পরিভাষায় বলে ‘মেটাবলিক সিনড্রোম’। এই সমস্যা দেখা দিলে পরবর্তী সময়ে হৃদ্রোগের আশঙ্কা অনেক বেড়ে যায়। তাই ছোট থেকেই সুষম খাবার খাওয়াতে হবে শিশুকে, শরীরচর্চার অভ্যাস করাতে হবে। জন্মগত ভাবে হৃদ্যন্ত্রে সমস্যা দেখা দিলে বেশির ভাগ সময়ে অস্ত্রোপচারের সাহায্যে তা ঠিক করা যেতে পারে। জন্মের কিছু সময় পরে যদি হার্টের ত্রুটি দেখা দেয়, তা হলেও অস্ত্রোপচার বা ওষুধ কাজে দেয়। সেই সঙ্গে সময়ান্তরে চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চেকআপ করিয়ে নেওয়া খুব জরুরি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy