মুকুল এবং শুভ্রাংশু। ফাইল চিত্র।
আসন্ন পুরভোটে বিজেপি-র বিপুল জয়ের ভবিষ্যবাণী করে ফের রাজনৈতিক বিতর্কের সূচনা করেছেন মুকুল রায়। এই পরিস্থিতিতে মুকুলের ছেলে শুভ্রাংশুর দাবি, তাঁর বাবা কোথায় কী বলছেন, কী করছেন, নিজেও বুঝতে পারছেন না। কারণ, তাঁর মানসিক অবস্থা ঠিক নেই।
শুক্রবার শান্তিনিকেতনে গিয়ে মুকুল বলেন, ‘‘এই পৌর নির্বাচনে সারা পশ্চিমবাংলায় বিপুল ভাবে ভারতীয় জনতা পার্টি জয়ী হবে।’’ সংবাদমাধ্যমকে যখন এমন কথা মুকুল বলছেন তখন তাঁর পাশেই ছিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। কেউ একজন মুকুলকে ভুল ধরিয়ে দিয়ে জানান, তাঁর ‘তৃণমূল’ বলা উচিত। এর পর মুকুল বলেন, ‘‘তৃণমূল তো বটেই। ভারতীয় জনতা পার্টি মানেই তৃণমূল।’’
নীলবাড়ির লড়াইয়ে নদিয়ার কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন মুকুল। পরে যোগ দেন তৃণমূলে। যোগ দেন তাঁর ছেলে, তথা বীজপুরে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশুও। বাবার এমন বিতর্কিত মন্তব্য প্রসঙ্গে ছেলে বলেন, ‘‘বাবা সত্যি শারীরিক ভাবে অসুস্থ। উনি বিভিন্ন রকম কথা বলে ফেলছেন। পার্টি যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দলের কোনও অনুষ্ঠান ছিল না। সরকারি কর্মসূচিও ছিল না। বাবাকে ডাক্তার বলছেন, একটু বাইরে বেরোতে। হাওয়া বদলের কথা বলছেন। আমার মায়ের মৃত্যু এবং কোভিডের পর বাবার পটাশিয়াম-সোডিয়াম লেভেল ওঠানামা করছে। কোথাও কী করছে, কী বলছে, নিজেও বুঝতে পারছে না। এটা দলের বক্তব্য নয়। পুরোটাই বাবা ভুল বলেছে।’’
সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে শুভ্রাংশু বলেন, ‘‘আমি আপনাদের অনুরোধ করব, বাবার এই বক্তব্যগুলি বেশি না দেখানোর জন্য। কারণ, বাবার মানসিক অবস্থাও ঠিক নেই। সে কারণেই এগুলি হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর গত অগস্টে কৃষ্ণনগরে গিয়ে উপনির্বাচনের সম্ভাব্য ফল নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে মুকুল বলেছিলেন, ‘‘ভারতীয় জনতা পার্টির পক্ষ থেকে আমি বলতে পারি, তৃণমূল পর্যুদস্ত হবে এবং এই কৃষ্ণনগরে নিজেদের স্বমহিমায় নিজেদের প্রতিষ্ঠা করবে বিজেপি।’’ ‘তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে’ সে বারও চার পাশ থেকে একাধিক বার ভুল ধরিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও বিজেপি-র পক্ষ নিয়েই কথা বলেছিলেন মুকুল।
অন্য দিকে, মুকুলের বিতর্কিত মন্তব্য প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ শনিবার সকালে বলেন, ‘‘এমনিতেই শারীরিক অবস্থা ঠিক ছিল না ওঁর। যে ভাবে তাঁকে অপব্যবহার করা হয়েছে, অপমান করা হয়েছে, আমার মনে হচ্ছে শেষ জীবনে এটা ঠিক নয়। উনি একজন সিনিয়র মানুষ। ওঁর শেখা উচিত। শেষ জীবনে এটা ওঁর বোঝা উচিত। শেষ জীবনে এত কষ্ট পাওয়া, এত অপমানিত হওয়া! আমার মনে হয় যাঁরা এই ধরনের রাজনীতি করেন, তাঁদের বোঝা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy