ধৃত সমরেশ সরকার।
একেবারে ঘরকুনো, পরিবার ছাড়া কিছুই বোঝেন না তাঁর স্বামী। নিজের স্বামী সমরেশ সরকারের সম্বন্ধে বলতে গিয়ে এমনই কথা বললেন সমরেশবাবুর সঙ্গে ২১ বছরের বিবাহিত জীবন কাটানো তাঁর স্ত্রীর। একই মত সমরেশবাবুর মা এবং ছেলে-মেয়ের। ব্যারাকপুরের আনাচে কানাচে কান পাতালে এমনই কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ বিশ্বাসই করছে না যে ব্যক্তির এক মাত্র ধ্যান-জ্ঞান পরিবার সেই ব্যক্তি কী করে এক মহিলা যিনি আবার তাঁর প্রেমিকা (পুলিশের কাছে এই দাবি করেছেন পেশায় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের ম্যানেজার সমরেশবাবু)-র মৃতদেহ টুকরো টুকরো করে কেটে ব্যাগে ভরে গঙ্গায় ফেলে দিয়ে আসতে পারেন। একই সঙ্গে ফেলে দিয়ে এসেছেন প্রেমিকার বছর পাঁচেকের মেয়ের দেহও। ব্যারাকপুর পুরসভার চেয়ারম্যান উত্তম দাসের বক্তব্য, “কোথাও একটা ভুল বোঝাবুঝি হচ্ছে। মনে হয় ওই ব্যক্তিকে ফাঁসানো হচ্ছে।”
শনিবার তাঁর ধৃত ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের বলেন, তাঁর স্বামী চুড়ান্ত ঘরকুনো। প্রতিদিন দুর্গাপুর থেকে দিনে তিন চার বার ফোন করে পরিবারের সঙ্গে কথা বলতেন সমরেশবাবু। মা-স্ত্রী এবং দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে পাঁচ জনের সুখের সংসার সমরেশবাবুর। মেয়ে কলকাতার একটি কলেজে স্নাতকস্তরে প্রথমবর্ষের ছাত্রী। ছেলে পড়ে সপ্তম শ্রেণিতে। মাস তিনেকের মধ্যে নতুন ফ্ল্যাটে যাওয়ার কথা তাঁদের।
এমন কী শুক্রবার রাতেও ফোন করে শনিবার বাড়িতে কী বাজার করে নিয়ে যেতে হবে বলে স্ত্রীর কাছে জানতে চান তিনি। সকালে তাঁকে ফোন করলেও ফোনে পাওয়া যায়নি। সব সময় ফোন ‘নট রিচেবেল’ দেখিয়েছে। তাঁরা ভেবেছেন হয়ত ট্রেনে আছেন সমরেশবাবু তাই ফোনে পাওয়া যাচ্ছে না। বিকেলে সাংবাদিকদের কাছ থেকেই ঘটনার কথা জানতে পারেন তাঁরা। জানতে পেরে একেবারে আকাশ থেকে পড়েন তাঁরা।
ধৃত ম্যানেজারের পাড়া প্রতিবেশীরাও জানিয়েছেন, সমরেশবাবু এমন এক ব্যক্তি যার কোনও নেশা নেই। বন্ধু-বান্ধবও ছিল না। বেড়াতে যেতেও ভালবাসতেন না। ঘরে থাকাই পছন্দ করতেন ব্যারাকপুরে আজন্ম কাটানো সমরেশ সরকার।
তবে খটকা একটি জায়গাতেই?
পরিজনদের দাবি মত, এতই যদি পরিবারের কথা ভাবতেন সমরেশবাবু তবে কেন বাড়ির ঠিকানা ব্যাঙ্কে দেননি তিনি এবং কেন কখনওই দুর্গাপুরে তাঁর অফিসে যাননি তাঁর স্ত্রী এবং ছেলে-মেয়ে। সমরেশবাবুর বক্তব্যের সত্যতা মিলেলেই হয়ত মিলবে এই সব ধোঁয়াশার উত্তর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy