এলেন না মুকুল রায়। ফাইল চিত্র ।
তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনে এলেন না মুকুল রায়। তাঁকে ডাকাও হয়নি দলের পক্ষ থেকে। যেমনটা বেশ কিছুদিন আগেই জানিয়েছিল আনন্দবাজার অনলাইন। লেখা হয়েছিল, তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে না কৃষ্ণনগর উত্তরের বিধায়ককে।
প্রসঙ্গত, মুকুল এখনও বিজেপি-র প্রতীকে জেতা বিধায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য বিধানসভায় দলত্যাগ-বিরোধী আইনে অভিযোগের শুনানিও চলছে। সেই যুক্তিতেই তৃণমূলের সাংগঠনিক নির্বাচনে তাঁকে ডাকা হয়নি বলে দলীয় সূত্রের খবর। শুধু মুকুল নন, বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যাওয়া বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ, রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী, কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায় বা বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাসকেও সাংগঠনিক নির্বাচনের আসরে ডাকা হয়নি।
বুধবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভানেত্রী পদে আবারও নির্বাচিত হচ্ছেন, তখন সেখানে হাজির রাজ্য এবং ভিন্রাজ্য থেকে আগত দলের শীর্ষস্তরের প্রায় সব নেতা। তৃণমূলের টিকিটে জেতা জনপ্রতিনিধি এবং দলের শাখা-সংগঠনের পদাধিকারীরাই শুধুমাত্র ছিলেন বুধবারের দলীয় নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকারী। যদিও মমতার বিরুদ্ধে কেউ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করায় ভোটদানের প্রয়োজন পড়েনি।
মমতা যখন ১৯৯৮ সালের তৃণমূলের শুরুর দিনগুলির কথা তাঁর ভাষণে বলছেন, তখন অনেকেই মুকুলের অনুপস্থিতি অনুভব করেছেন। যদিও এ নিয়ে প্রকাশ্যে কেউই কিছু বলেননি। একটা সময় ছিল, যখন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হিসাবে সাংগঠনিক নির্বাচন নিজের হাতে পরিচালনা করতেন মুকুল। ২০১২ সালের সাংগঠনিক নির্বাচনে তিনিই ছিলেন রিটার্নিং অফিসার। তবে সেই শেষ বার। ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটের পর তৃণমূলের অন্দরমহলে ক্ষমতার ভরকেন্দ্রে বদল ঘটতে শুরু করে। ২০১৫ সালে মুকুলের জায়গায় সুব্রত বক্সীকে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরে মুকুলকে দলের সহ-সভাপতি পদ দেওয়া হলেও ২০১৭ সালের সাংগঠনিক নির্বাচনে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বে ছিলেন সুব্রতই। ওই বছরের শেষ দিকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপি-তে যোগ দেন মুকুল।
কিন্তু গত বছর বিধানসভা ভোটের পরে ১১ জুন বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফিরে আসেন মুকুল। তখন তিনি বিজেপি-র টিকিটে জেতা বিধায়ক। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে দলত্যাগ বিরোধী আইনে মুকুলের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন জানান। এখনও পর্যন্ত ১১টি শুনানি হয়েছে স্পিকারের ঘরে। কিন্তু নিষ্পত্তি হয়নি। মুকুলের আইনজীবী শুনানিতে দাবি করেছেন, মুকুল তৃণমূল দফতরে গেলেও তিনি বিজেপি ছাড়েননি। যদিও তৃণমূল দফতরে মুকুলের ‘যোগদানের’ ভিডিয়োটিকেই বিজেপি তাদের ‘অব্যর্থ অস্ত্র’ বলে মনে করছে। ইতিমধ্যে সুপ্রিম কোর্টেও পৌঁছেছে এই মামলা। দেশের শীর্ষ আদালত আশা প্রকাশ করেছে, ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার স্পিকার।
তবে তৃণমূলের ‘নতুন’ মুকুলও সাংগঠনিক নির্বাচনে ছিলেন না। তিনি মেঘালয়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মুকুল সাংমা। বক্তৃতায় মমতা বলেন, “আমাদের দলের সর্বভারতীয় নেতা যশবন্ত সিনহা এখানে এসেছেন। গোয়ার ফেলেরিও সর্বভারতীয় নেতা হলেও সেখানকার নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। আর মেঘালয়ের মুকুল সেখানকার সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত বলে আসতে পারেনি।”
‘সাংমা’ মুকুলের কথা বললেও ‘রায়’ মুকুলের নাম মুখে আনেননি মমতা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy