দলের নেতা-কর্মীদের মমতা বলেছেন, ‘‘মনে রাখবেন চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোম
বিজেপি-কে কেন্দ্রের ক্ষমতা থেকে সরাতে আগামী দু’বছর তিনি যে সর্বভারতীয় স্তরে সর্বশক্তি নিয়োগ করবেন, সাংগঠনিক নির্বাচনে দলের চেয়ারপার্সন নির্বাচিত হয়ে তা সাফ জানিয়ে দিলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, ‘‘আপনারা বাংলায় কাজ করুন। যাতে আমি বাইরে কাজ করতে পারি।’’
‘বাইরে কাজ’ বলতে কী বোঝাচ্ছেন, তা-ও জানিয়েছেন মমতা। প্রথমত, জাতীয় স্তরে বিজেপি বিরোধী জোটকে শক্তিশালী করা। দুই, আসন্ন বিধানসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে সমাজবাদী পার্টিকে সমর্থন করা (মমতা লখনউ যাচ্ছেন প্রচার করতে) এবং আগামী লোকসভা ভোটে উত্তরপ্রদেশে প্রার্থী দেওয়া। তিন, গোয়া এবং ত্রিপুরায় লড়াই। চার, দলের ওয়ার্কিং কমিটির প্রথম বৈঠক দিল্লিতে করার সিদ্ধান্ত।
আর ‘বাংলায় কাজ’ বলতে রাজ্য থেকে ৪২টি লোকসভা আসনই দখল করা। দলের নেতা-কর্মীদের মমতা বলেছেন, ‘‘মনে রাখবেন চ্যারিটি বিগিন্স অ্যাট হোম। তাই বাংলায় নিজেদের ঘর সামলান। এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠুন যাতে ২০২৪ সালে ৪২টি লোকসভা আসনের ৪২টিই পায় তৃণমূল।’’
বস্তুত, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে আগামী দু’বছরে সর্বভারতীয় দল হিসেবে তৃণমূল কী ভূমিকা নিতে চলেছে, তা স্পষ্ট করেছেন মমতা। সমস্ত আঞ্চলিক দলগুলিকে আহ্বান জানিয়েছেন, একজোট হয়ে বিজেপি-কে উৎখাত করার জন্য। একইসঙ্গে জানিয়ে দিয়েছেন, কংগ্রেস যদি বিজেপি-কে সরাতে তৃণমূলের সঙ্গ না দেয়, তবে ‘একলা চল’ পথেই ভারত জয় করবে তৃণমূল। অর্থাৎ, সর্বভারতীয় স্তরে মমতা কংগ্রেসের ‘হাত’ ধরার জন্য খুব একটা উতলা নন।
বুধবার তৃণমূলের চেয়ারপার্সন হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হওয়ার পর মমতাই ছিলেন দিনের একমাত্র বক্তা। মমতা মঞ্চে উঠে ধন্যবাদজ্ঞাপনের মতো ঔপচারিকতা শেষ করেই বলে দেন, ‘‘তৃণমূল একটি সর্বভারতীয় দল। আমরা যদি বাংলা থেকে সিপিএমকে তাড়াতে পারি, তবে দিল্লিতে ওদেরও (বিজেপি-কেও) পারব।’’
প্রসঙ্গত, বাংলার বাইরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক পদক্ষেপ করেছে তৃণমূল। ইতিমধ্যেই ত্রিপুরার পুরভোটে লড়েছে তৃণমূল। সেখানে তারা যে ভোট পেয়েছে, তা নিয়ে দলের নেতারা আশাবাদী। গোয়ার বিধানসভা নির্বাচনেও প্রার্থী দিয়েছে তৃণমূল। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি সেখানে ভোট। বস্তুত, বুধবার রাতেই দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গোয়া যাচ্ছেন নির্বাচনী প্রচার করতে। গোয়া সম্পর্কে মমতা তাঁর ভাষণে বলেছেন, ‘‘আমরা কয়েকমাস মাত্র গোয়ায় রাজনীতি করছি। কিন্তু একটা ইউনিট তৈরি করে দিয়েছি। তারা তাদের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’’
গোয়ার বিধানসভা ভোটে প্রার্থী দিলেও মমতা জানিয়েছেন, উত্তরপ্রদেশের বিধানসভা ভোটে তাঁরা প্রার্থী দিচ্ছেন না। তবে লোকসভায় উত্তরপ্রদেশে প্রার্থী দেবেন। মমতার বক্তব্য, প্রত্যেকটি সর্বভারতীয় দলই প্রথমে একটি বিশেষ অঞ্চলকে ধরে রাজনীতিতে এসেছে। কংগ্রেসও উত্তরপ্রদেশকে ভিত্তি করে উঠেছিল। তৃণমূল বাংলায় জিতেছে। এবার সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে যাবে। দলের নেতা-কর্মীদের মমতার বলেন, ‘‘আপনারা আমাকে বলুন, বাংলা আমরা সামলাচ্ছি। আপনি দিল্লি থেকে বিজেপি-কে হটান!’’
মমতা এ-ও মনে করিয়ে দেন যে, ‘সর্বভারতীয় দল’ হিসেবে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন স্বীকৃতি দিয়েছে তৃণমূলকে। তাই সর্বভারতীয় রাজনীতিতে একক দল হিসেবে লড়ার ব্যাপারে যেন তৃণমূলের নেতারা মনে কোনও সন্দেহ না রাখেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy