ফের সিবিআই নোটিস পাঠাল মুকুলকে। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
নারদ মামলায় শুক্রবার সিবিআইয়ের সামনে হাজির হলেন না মুকুল রায়। আপ্ত সহায়কের হাত দিয়ে চিঠি পাঠিয়ে কয়েক দিন সময় চেয়েছেন তিনি। কিন্তু সিবিআই তাঁকে সময় দিতে নারাজ। আজ, শনিবার দুপুর আড়াইটেয় নিজাম প্যালেসে হাজির হওয়ার জন্য মুকুলের আপ্ত সহায়কের হাতেই নোটিস দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সিবিআই সূত্রের বক্তব্য, গত কাল গ্রেফতার হওয়া রাজ্যের আইপিএস অফিসার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জাকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তদন্তকারীরা মুকুল ও মির্জাকে মুখোমুখি বসিয়ে প্রশ্ন করতে চান। তাই এই তাড়াহুড়ো।
নারদ-কাণ্ডে সিবিআইয়ের তলব প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা মুকুল রায় বলেন, ‘‘আমার যাওয়ার কথা ছিল। আমার রাজনৈতিক কর্মসূচি থাকার জন্য আমি যেতে পারিনি। সিবিআই যখনই আমাকে ডাকবে, তখনই আমি গিয়ে তদন্তে সহযোগিতা করব, এটা আমার অঙ্গীকার। অতএব স্বাভাবিক ভাবেই আমি আবার গিয়ে কথা বলব। এজেন্সি যার সঙ্গে বসিয়ে জেরা করবে বলে মনে করবে, তার সঙ্গেই বসিয়ে জেরা করতে পারে। আমি মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায় নই যে, পালিয়ে যাব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম দিন থেকেই সিবিআইকে অসহযোগিতা করতে বলেছিলেন। এক জন আইন মানা নাগরিক হিসাবে এই তদন্তে সহযোগিতা করা আমার কর্তব্য। আমি ওদের কাছে চিঠি দিয়ে বলেছি, কাল দুপুর তিনটের পরে যে কোনও সময় আমাকে ডাকলেই আমি যাব। তিনটে পর্যন্ত মহালয়ার তর্পণ আছে। আমি নিজেও তর্পণ করব। দলের সহকর্মীদের উদ্দেশেও তর্পণে আমাকে থাকতে হবে।’’
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কাউকে ডাকা মানেই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হওয়া নয়। বরং, মুকুলবাবু গেলে তদন্তে আরও নতুন তথ্য পাওয়া যাবে।’’
সিবিআইয়ের দাবি, নারদ ভিডিয়োতে মুকুল ও মির্জার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ইঙ্গিত রয়েছে। মুকুল যেমন ব্যবসায়িক সংস্থার কর্তার ছদ্মবেশে থাকা সাংবাদিক স্যামু ম্যাথুয়েলকে বলেছিলেন, ‘ও (মির্জা) আমার এবং আপনার মধ্যে মধ্যস্থতা করবে। সব কথাই মির্জার মাধ্যমে হবে।’ তেমনই মির্জা বলেছিলেন, ‘‘মুকুলদার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খোলামেলা।’ ভিডিয়ো ফুটেজে মির্জাকে আরও বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি ইতিমধ্যেই ওঁর জন্য ৬০ জোগাড় করেছি।’ নারদ ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পরে পরে মুকুল দাবি করেছিলেন, ম্যাথু ব্যবসা করতে চান বলে তাঁর কাছে এসেছিলেন। বর্ধমানে জমির প্রয়োজন শুনে তিনি তাঁকে মির্জার কাছে পাঠান। তাঁর সঙ্গে কোনও টাকার লেনদেন হয়নি। এই অবস্থায় মুকুল ও মির্জাকে মুখোমুখি বসিয়ে সিবিআই জানতে চায়, এই ‘৬০’ বলে কী বোঝাতে চাওয়া হয়েছিল।
তা ছাড়া ভিডিয়ো ফুটেজে মির্জার নাম করে মুকুলকে বলতে শোনা যায়, ‘...ওকে গিয়ে এটা দিন। আমার অফিসেও দিতে পারেন। আমি সরাসরি নেব না।’ সিবিআই জানতে চায় ‘এটা’ বলতে মুকুল কী বলতে চেয়েছিলেন? মুকুলের সঙ্গে যদি টাকার কোনও যোগাযোগই না থাকে, তা হলে ভিডিয়ো ফুটেজে ম্যাথু যখন বলেন, ‘আমার কাছে ২০ লক্ষ আছে,’ তখন মুকুল কেন ‘ওকে’ বলেছিলেন?
মুকুলের পাশাপাশি ম্যাথুকেও মির্জার মুখোমুখি বসাতে চায় সিবিআই। সূত্রের খবর, নিজাম প্যালেসে আসতে এ দিন ম্যাথুকে ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু ম্যাথু জানিয়েছেন, তিনি অসুস্থ, তাই আসতে পারবেন না।
নারদ মামলায় তৃণমূল সাংসদ কেডি সিংহকে সম্প্রতি নোটিস পাঠিয়ে ম্যাথুর নিয়োগপত্র ও বেতনের শংসাপত্র চেয়ে পাঠিয়েছে সিবিআই। ম্যাথুর দাবি, ২০১৪ সালে তিনি কেডির সংস্থা তহেলকার কর্মী ছিলেন। কেডির নির্দেশেই স্টিং অপারেশন করেছিলেন তিনি। কেডির মালিকানাধীন অর্থলগ্নি সংস্থা অ্যালকেমিস্টের কলকাতার অফিস থেকে প্রায় ১ কোটি টাকা তাঁকে দেওয়া হয়। সেটাই স্টিং অপারেশনে কাজে লাগিয়েছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy