পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় পাশ হয়েছে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা বিরোধী প্রস্তাব। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতা এবং তিন ফৌজদারি আইন বিরোধী প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল বাংলার বিধানসভায়। গত দু’দিন ধরে এই প্রস্তাব নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা চলেছে। বৃহস্পতিবার সেই আলোচনা শেষ হল। ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে প্রস্তাব পাশ হয়েছে। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন শাসকদলের বিধায়কেরা। বিরোধীরা ভোট দিয়েছেন বিপক্ষে। যদিও এই আইন কেন্দ্রে পাশ হয়ে গিয়েছে। বিরোধীদের বক্তব্য, কেন্দ্রে পাশ হয়ে যাওয়া আইনের বিরোধিতা রাজ্য বিধানসভায় করা অর্থহীন। পরিবর্তে রাজ্যে অনুপ্রবেশ এবং ধর্মান্তকরণের বিরুদ্ধে আইন আনার প্রস্তাব দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার বিধানসভায় ন্যায় সংহিতা এবং তিন ফৌজদারি আইনের বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনেন রাজ্যের আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। বুধ এবং বৃহস্পতিবার অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে এ বিষয়ে আলোচনা হয়। কেন্দ্রের আইন বিরোধী প্রস্তাবের আলোচনায় বুধবার বিজেপির তরফে অংশ নিয়েছিলেন শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা বিজেপির পরিষদীয় দলের মুখ্য সচেতক শঙ্কর ঘোষ, কল্যাণীর বিধায়ক অম্বিকা রায়, কাঁথি দক্ষিণের বিধায়ক অরূপকুমার দাস প্রমুখ। ওই দিন তৃণমূলের পক্ষ থেকে বক্তৃতা করেন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার, লালগোলার বিধায়ক মহম্মদ আলি এবং ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক পান্নালাল হালদার।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় এই প্রস্তাব সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নেন বিজেপির তরফে রঘুনাথপুরের বিধায়ক বিবেকানন্দ বাউড়ি, ভগবানপুরের বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ মাইতি, আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল, চাকদহের বিধায়ক বঙ্কিম ঘোষ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু। তৃণমূলের তরফে বৃহস্পতিবার বলেন যাদবপুরের বিধায়ক দেবব্রত মজুমদার, এগরার বিধায়ক তরুণ মাইতি, রাসবিহারির বিধায়ক দেবাশিস কুমার, কালীগঞ্জের বিধায়ক নাসিরুদ্দিন আহমেদ এবং ডেবরার বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। আলোচনা শেষ হয়েছে আইনমন্ত্রী মলয়ের বক্তৃতা দিয়ে।
বৃহস্পতিবার বিধানসভায় ন্যায় সংহিতা বিরোধী প্রস্তাবের বিরোধিতা করতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘‘যে আইন দেশে ইতিমধ্যে চালু হয়ে গিয়েছে, তার বিরুদ্ধে প্রস্তাব পাশ করা কি আদৌ যুক্তিযুক্ত? দেশের আইন বলবৎ হওয়ার ক্ষেত্রে এর কোনও প্রভাব তো পড়বে না।’’ এর পর দু’টি বিষয়ে পাল্টা আইন আনার প্রস্তাব দিয়েছেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তাঁর কথায়, ‘‘সরকারের যদি সাহস থাকে, রাজ্যে অনুপ্রবেশ রুখতে এবং ধর্মান্তকরণ রুখতে আইন আনা হোক।’’
এ প্রসঙ্গে মলয় বলেন, ‘‘সংসদ যেমন কেন্দ্রের আইনসভা, বিধানসভাও তেমন রাজ্যের আইনসভা। দুই জায়গাতেই আইন তৈরি করা যায়। কেন্দ্রে পাশ হওয়া কোনও আইন যদি সংশোধন করার প্রয়োজন হয়, রাজ্য বিধানসভাকে সেই ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধান।’’ বিধানসভায় দু’পক্ষের আলোচনা শেষ হওয়ার পর ধ্বনি ভোট অনুষ্ঠিত হয়। তাতে ন্যায় সংহিতা এবং তিন ফৌজদারি আইনের বিরুদ্ধে আনা প্রস্তাব পাশ হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy