—ফাইল চিত্র।
দেশের প্রধান রাজ্যগুলির মধ্যে একমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই স্কুল স্তরে ছাত্রীর সংখ্যা ছাত্রদের চেয়ে বেশি। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের ‘ইউনিফায়েড ডিস্ট্রিক্ট ইনফর্মেশন সিস্টেম ফর এডুকেশন প্লাস’ (ইউডিআইএসই প্লাস)-এর একটি সমীক্ষায় এই তথ্য উঠে এসেছে। ওই সমীক্ষা জানাচ্ছে, অরুণাচল, অসম আর মেঘালয়েও ছাত্রদের চেয়ে সংখ্যায় বেশি ছাত্রীরা।
ইউডিআইএসই-র সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ছাত্রের চেয়ে ছাত্রীর সংখ্যা প্রায় দু’লক্ষ ৩২ হাজার বেশি। ছাত্রীদের স্কুলছুটের হার ছাত্রদের তুলনায় কম। শিক্ষা শিবিরের মতে, এর মূলে আছে ছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্প এবং মেয়েদের পড়াশোনার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি। অন্য দিকে, যত সময় যাচ্ছে, ততই সংসারের রোজগার বাড়াতে ছেলেদের অল্প বয়সেই কাজে পাঠিয়ে দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে।
পশ্চিমবঙ্গ সরকারি বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৌগত বসু বলেন, “আগে বহু কন্যাসন্তান শিক্ষার আলোয় আসত না। সেই সব পরিবারও এখন মেয়েদের পড়তে পাঠাচ্ছে। কন্যাশ্রী প্রকল্প, সাইকেল পাওয়া এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। অন্য দিকে, শিশু শ্রমিক হিসেবে শ্রমের মর্যাদার নিরিখে এখনও ছেলেদের চাহিদা বেশি। অতিমারিতে রোজগার হারানো দরিদ্র পরিবারগুলির মধ্যে ছেলেদের স্কুল ছাড়িয়ে কাজে নিযুক্ত করার প্রবণতা বাড়ছে।”
ছাত্রীদের সংখ্যা বৃদ্ধি ইতিবাচক, এটা মেনে নিয়েই সৌগতবাবুর বক্তব্য, ছোট ছেলেরা যাতে স্কুলছুট না-হয়, সে-দিকে লক্ষ্য রাখাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। প্রায় একই পর্যবেক্ষণ সাখাওয়াত মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগের। তিনি বলেন, “ছাত্রীদের জন্য সরকারের নানা
প্রকল্প আছে। মেয়েদের স্বনির্ভর করার জন্যও রয়েছে নানা প্রকল্প। ফলে গ্রামাঞ্চলে মেয়েদেরও এখন অন্তত মাধ্যমিক পাশ করে নিজের পায়ে দাঁড়ানো অনেক সহজ। অন্য দিকে, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতিতে বহু পরিবার ছেলেদের অল্প বয়সেই কাজে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছে। অষ্টম শ্রেণির পর থেকেই বহু ছাত্র স্কুলছুট হয়ে যাচ্ছে।”
পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নবকুমার কর্মকারের মতে, ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি তাদের পড়াশোনার মানও ছাত্রদের চেয়ে উন্নত হয়েছে। “এখন মেয়েদের পড়ানোর ক্ষেত্রে অভিভাবকদেরও সচেতনতা অনেক বেড়েছে। এতে সরকারেরও ভূমিকা আছে,” বলেন কল্যাণীর বিধানচন্দ্র মেমোরিয়াল গভর্নমেন্ট গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা সংহিতা পাল।
সমীক্ষায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আওতায় নিয়ে আসার ক্ষেত্রেও বঙ্গের সাফল্য স্পষ্ট হয়েছে। সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ছেলেমেয়েদের স্কুলে ভর্তি হওয়ার গড় হার যেখানে ১৭.৬ শতাংশ, পশ্চিমবঙ্গে তা অনেক বেশি। এ রাজ্যে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৩০.৯ শতাংশ ছেলেমেয়ে স্কুলে ভর্তি হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy