Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪

শ্রাবণ অবশেষে সক্রিয়, তবু ঘাটতি মিটবে কি?

রাজ্যের উত্তরে ব্যাপক বর্ষণ হলেও দক্ষিণ এখনও ঘাটতি চলছে।

অবশেষে বৃষ্টি এল। ছবি: পিটিআই।

অবশেষে বৃষ্টি এল। ছবি: পিটিআই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৯ অগস্ট ২০১৯ ০৪:৩৩
Share: Save:

মাসের বাকি আর দশ দিন। শেষ বেলায় প্রকৃতই শ্রাবণের ধারার মতো ঝরে পড়তে শুরু করেছে শ্রাবণ। গাঙ্গেয় বঙ্গ এ বার শ্রাবণকে শ্রাবণ বলে চিনতে পারছে এই প্রথম। সেই সঙ্গেই আছে সংশয় আর প্রশ্ন: এই শ্রাবণধারা কত দিন চলবে দক্ষিণবঙ্গে? বর্ষণের ঘাটতি আদৌ মিটবে কি? কেউ কেউ বলছেন, শেষ লগ্নে বর্ষা বেশ ভাল ভাবেই গা-ঝাড়া দিতে পারে। তা হলে পুজোয় বৃষ্টির আশঙ্কা থাকবে।

রাজ্যের উত্তরে ব্যাপক বর্ষণ হলেও দক্ষিণ এখনও ঘাটতি চলছে। আবির্ভাবে বর্ষা এ বছর কিছু দেরি করেছিল। পঞ্জিকা অনুযায়ী এ বার দুর্গাপুজো অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে। বর্ষার নির্ঘণ্ট মানলে গাঙ্গেয় বঙ্গ থেকে বর্ষার বিদায় নেওয়ার কথা ৮ অক্টোবর। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেখা গিয়েছে, বর্ষার বিদায়বেলা বিলম্বিত হয়েছে। ফলে এ বছর কী হবে, তা নিয়ে দোলাচলে রয়েছেন অনেকেই। পুজোয় বর্ষার মতিগতি কী দাঁড়াবে, সেই বিষয়ে নিশ্চিত কিছু বলতে পারছেন না আবহবিজ্ঞানীরাও। তবে বর্ষার নির্ঘণ্ট অনুসারে হাতে মাস দুয়েক সময় রয়েছে। তার মধ্যে ঘাটতি পূরণ করতে হলে অতিবৃষ্টি প্রয়োজন। ‘‘কিন্তু অল্প সময়ে অতিবৃষ্টি হলে লাভ তো হবেই না। উল্টে চাষ-আবাদে এবং জনজীবনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে,’’ বলছেন এক আবহবিজ্ঞানী।

এ বছর দেশের প্রায় অন্য সর্বত্রই মোটের উপরে স্বাভাবিক বর্ষা হলেও গাঙ্গেয় বঙ্গে এই মুহূর্তে বৃষ্টি-ঘাটতির হার প্রায় ৪৬ শতাংশ। পূর্ব উপকূলে এই ঘাটতি রয়েছে শুধু গাঙ্গেয় বঙ্গ এবং ঝাড়খণ্ডেই। প্রশ্ন উঠছে, গোটা দেশে কমবেশি স্বাভাবিক বৃষ্টি হলেও দক্ষিণবঙ্গ ও ঝাড়খণ্ডে এ বার এই হাল কেন? এই দুই অঞ্চলে কেন হঠাৎ এত কৃপণ হয়ে উঠল মৌসুমি বায়ু?

আবহবিজ্ঞানীরা বলছেন, এ বছর বঙ্গোপসাগরে বর্ষা দুর্বল। বর্ষার হালে পানি জোগাতে পারে ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ। কিন্তু এ বার বঙ্গোপসাগরে এখনও পর্যন্ত যে-ক’টি নিম্নচাপ বা ঘূর্ণাবর্ত তৈরি হয়েছে, তার একটিও গাঙ্গেয় বঙ্গের দিকে আসেনি। ওড়িশার দিকে যাওয়ার ফলে ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপের যেটুকু প্রভাব পড়েছে, তাতেই অল্পবিস্তর বৃষ্টি পাওয়া গিয়েছে এই এলাকায়। গাঙ্গেয় বঙ্গের মতো একই কারণে ঝাড়খণ্ডও বৃষ্টির অভাবে ভুগছে। তবে এর মধ্যে আশার আলো দেখিয়েছে সদ্য বিদায়ের পথ ধরা একটি অতিগভীর নিম্নচাপ। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলছেন, ‘‘এর প্রভাবে মৌসুমি বায়ু এই অঞ্চলে কিছুটা শক্তিশালী হতে পারে।’’

আবহবিজ্ঞানীদের কেউ কেউ বলছেন, প্রশান্ত মহাসাগরের জলের তাপমাত্রা বেশি (‘এল নিনো’) থাকায় এ বছর জুনে বর্ষা বেশ ঝিমিয়ে ছিল। জুলাইয়ের মাঝামাঝি থেকে এল নিনো পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছে। তার ফলে বঙ্গোপসাগরে বর্ষা গা-ঝাড়া দিয়ে উঠতে পারে। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে মৌসুমি বায়ু তেড়েফুঁড়ে উঠলেও আখেরে

লাভ কতটা হবে, ক্ষয়ক্ষতি সীমা ছাড়িয়ে যাবে কি না, সেই সব প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Monsoon Rai Farmers Weather
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy