ঝমঝমিয়ে: বৃষ্টি যখন নামল। রবিবার ধর্মতলায়। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক
দেশের উত্তর, মধ্য ও পশ্চিম অংশ কার্যত জ্বলছে। তাপপ্রবাহ চলছে বেশ কয়েকটি জায়গায়। বাদ যায়নি পশ্চিমবঙ্গও। তবে তীব্র দহনের পরে গাঙ্গেয় বঙ্গে স্বস্তি বয়ে এনেছে নিম্নচাপ অক্ষরেখা। রবিবার দিনভর ঝড়বৃষ্টি হয়েছে বিক্ষিপ্ত ভাবে। এক ধাক্কায় তাপমাত্রা নেমে গিয়েছে অনেকটা নীচে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের আশ্বাস, এমন পরিস্থিতি আপাতত কয়েক দিন চলবে। সৌজন্যে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার বলেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি চলবে মঙ্গলবার পর্যন্ত। বুধ ও বৃহস্পতিবার বৃষ্টির পরিমাণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা আছে।’’ মৌসম ভবনের খবর, বৃহস্পতিবারেই কেরল দিয়ে বর্ষা ঢুকতে পারে দেশে। তবে সে এ রাজ্যে কবে আসবে, তা এখনই নিশ্চিত করে বলা সম্ভব নয়।
এ বার গ্রীষ্মের শুরুতে পরপর বেশ কয়েকটি কালবৈশাখী আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু তার পরেই শুরু হয় গ্রীষ্মের রুদ্ররোষ। বিশেষত ঘূর্ণিঝড় ফণীর আগে-পরে দহনজ্বালা দুঃসহ হয়ে ওঠে। তাপপ্রবাহ চোখ রাঙাতে থাকে কয়েকটি জেলায়। শুক্রবার বীরভূম জেলা এবং আশেপাশে ভাল ঝড়বৃষ্টি হয়েছিল। শনিবারেও বিভিন্ন জেলা বিক্ষিপ্ত ভাবে কমবেশি বৃষ্টি পেয়েছে। রবিবার সকাল থেকেই কলকাতা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় মেঘ ছিল। দহনজ্বালা ছিল তুলনায় কম। আলিপুর হাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ দিন কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি কম। গ্রীষ্মে সাধারণ ভাবে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে নীচে থাকতে দেখা যায় না।
দমদমে এ দিন বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ১৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির ধাক্কায় সেখানকার তাপমাত্রা ২৬.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গিয়েছিল। দক্ষিণবঙ্গের অন্যান্য জেলাতেও বৃষ্টি হয়েছে। আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘রাজ্যের উপর দিয়ে একটি অক্ষরেখা বিস্তৃত রয়েছে। তাই কয়েক দিন আকাশ মেঘলা থাকবে। কম থাকবে দিনের তাপমাত্রাও। বঙ্গোপসাগর থেকে জোলো হাওয়ার জোগানও পর্যাপ্ত।’’
বাংলায় উত্তাপ কমলেও মাত্রা ছাড়িয়েছে দিল্লির তাপমাত্রা। এ দিন দিল্লির পালামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৪.৬ ডিগ্রি। মহারাষ্ট্রের বিদর্ভেও লাগাতার তাপপ্রবাহ চলছে। একই পরিস্থিতি চণ্ডীগড়, হরিয়ানা, রাজস্থানের জয়সলমের, যোধপুরেও। রাজস্থানের চুরুতে এ দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা পৌঁছে যায় ৫০.৮ ডিগ্রিতে, স্বাভাবিকের থেকে নয় ডিগ্রি বেশি। একটি সূত্রের দাবি, ২০১৬ সালে রাজস্থানের ফালোড়িতে ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা উঠেছিল। সেটাই এ-যাবৎ কালের রেকর্ড। মৌসম ভবনের পূর্বাভাস, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, হরিয়ানার বেশির ভাগ জায়গায় আরও দু’দিন এবং বিদর্ভে আরও পাঁচ দিন তাপপ্রবাহ চলবে।
দহনযন্ত্রণার মধ্যেই আশ্বাসবাণী শোনাচ্ছে আরব সাগর। মৌসম ভবনের খবর, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আরব সাগরে মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হতে পারে। তার জেরেই চলতি সপ্তাহের মাঝামাঝি কেরলে ঢুকতে পারে বর্ষা। সাধারণত, নির্ঘণ্ট মেনে চললে ১ জুন কেরলে বর্ষা ঢোকার কথা। কিন্তু এ বার বর্ষা এক্সপ্রেস ‘লেট’ করেছে। নিয়মমাফিক গাঙ্গেয় বঙ্গে বর্ষা ঢোকার কথা ৮ জুন। কেরলে লেট করলেও পশ্চিমবঙ্গে সে কি সময়ে পৌঁছতে পারবে?
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের এক বিজ্ঞানী বলেন, ‘‘কেরলে বর্ষা ঢোকার আগে তার চরিত্র বোঝা যাবে না। তাই সে বাংলায় কবে আসবে, সেটাও এখনই বলা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy