প্রতীকী ছবি।
সারা বাংলায় আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতির প্রচার ও প্রসারের জন্য গত বছরের তুলনায় ছ’গুণ বরাদ্দ বৃদ্ধি করল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
এ বছর ২৫ অক্টোবরকে ‘আয়ুর্বেদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ মন্ত্রক। ওই দিন আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতির সুফল প্রচারে সুসজ্জিত ট্যাবলো সহযোগে শোভাযাত্রা বেরোবে। কর্মশালা হবে। বিশেষ স্বাস্থ্য শিবিরের আয়োজন করা হবে। এই সব কর্মসূচির জন্য জেলা-পিছু ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। গত বছর ২২টি জেলায় এই কাজে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল মাত্র আট হাজার টাকা। এক ধাপে এ ভাবে বহু গুণ বরাদ্দ বৃদ্ধি বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে জানাচ্ছেন স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের একাংশ।
কী সেই তাৎপর্য?
সেই তাৎপর্য বোঝাতে বছর তিনেক আগে ফিরে গিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের অনেক আধিকারিক। তাঁদের বক্তব্য, আয়ুর্বেদ এবং যোগের প্রচারে নরেন্দ্র মোদীর সরকার শুরু থেকেই বিশেষ ভাবে জোর দিয়ে আসছে। ২০১৫ সালে সেই সূত্রে প্রতিটি জেলায় যোগ দিবস পালনের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার চিঠি পাঠিয়েছিল রাজ্য সরকারের কাছে। কিন্তু যোগ দিবসের ধর্মীয় অনুষঙ্গের কথা মাথায় রেখে শেষ মুহূর্তে সেই কর্মসূচির সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করেন তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীরা। যার মূলে ছিল সংখ্যালঘু মহলে ভুল বার্তা যাওয়ার আশঙ্কা। লোকসভা ভোটে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ১৮টি আসন দখল করার পরে দৃষ্টিভঙ্গিতে বদল ঘটল কি না, সেটাই এখন আধিকারিক মহলে আলোচনার বিষয়বস্তু। প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের পরিকল্পনার নিরিখে অর্থ মঞ্জুর করে কেন্দ্র। আচমকা এমন কী ঘটে গেল যে, এত বড় আকারে প্রচার কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হল?
এই ধরনের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিকদের একাংশের বক্তব্য, কেন্দ্র এখন আয়ুর্বেদ এবং যোগের প্রচারে সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আয়ুষের (আয়ুর্বেদ, যোগ, ন্যাচারোপ্যাথি ইউনানি, সিদ্ধা, হোমিয়োপ্যাথি) মধ্যেও এই দুইয়ের ব্যাপ্তি নিয়ে মোদী সরকার সব চেয়ে বেশি উৎসাহী।
আয়ুর্বেদ ও যোগেই জাতীয় স্বাস্থ্য মিশন প্রকল্পের (এনএইচএম) আওতায় অনুদান সব চেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে। স্বাভাবিক ভাবে, কেন্দ্রের ষাট শতাংশ অনুদান পাওয়ার জন্য রাজ্যকেও আয়ুর্বেদ এবং যোগ নিয়ে কর্মসূচির কথা ভাবতে হচ্ছে। সেই জন্য ধাপে ধাপে গড়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, মেদিনীপুর শহরে নয় একর জমিতে ৫০ শয্যার ‘ইন্টিগ্রেটেড’ বা সংহত আয়ুষ হাসপাতাল দ্রুত চালু করা হবে। বেলুড়ে যোগ কলেজের পাশাপাশি কল্যাণীতে যোগের একটি কেন্দ্রীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ার জন্য জমি দিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলায় জেলায় আয়ুষের কাজকর্মে নজরদারির জন্য আয়ুষ মেডিক্যাল অফিসারের পদ তৈরি হয়েছে।
ভোটের অঙ্ক সংক্রান্ত অভিযোগ খণ্ডনে এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারিতে এ বছর আয়ুর্বেদ দিবস নিয়ে রাজ্যের ভাবনা কেন্দ্রের কাছে পাঠানো হয়েছিল। আর ভোটের ফল তো বেরিয়েছে মে মাসে।’’
স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আয়ুর্বেদের চাহিদা রয়েছে। ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন, স্ট্রোকের মতো নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ় নিয়ন্ত্রণে যোগাব্যায়াম উপকারী। আগামী দিনে প্রতিটি জেলায় অন্তত দু’টি গ্রামকে আয়ুষ গ্রামে পরিণত করার পরিকল্পনা রয়েছে। মানুষের স্বার্থে যা দরকার, তা-ই করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy