Advertisement
২০ ডিসেম্বর ২০২৪
Mahua Moitra

দু’পয়সার প্রেস! ‘সঠিক’ বক্তব্যের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী সাংসদ মহুয়া মৈত্র

সোমবার সকাল থেকে শোরগোল পড়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় মহুয়াকে কটাক্ষ করতে থাকেন বহু সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মী।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০২০ ২০:৩১
Share: Save:

রবিবার নদিয়ার গয়েশপুরে দলীয় কর্মীদের বৈঠকে উপস্থিত সংবাদমাধ্যম সম্পর্কে সাংসদ মহুয়া মৈত্রের মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। কিন্তু মহুয়া তাঁর বক্তব্য থেকে সরেননি। বস্তুত, তৃণমূল সাংসদ জানিয়েছেন, তিনি সংবাদমাধ্যম সম্পর্কে কোনও মন্তব্য করেননি। বলেছেন, তাঁর দলের কিছু কর্মী নিজেদের ‘মুখ দেখাতে’ দলীয় বৈঠকে সংবাদমাধ্যমকে ডেকে এনেছিলেন। তিনি তাঁদের সমালোচনা করেছেন।

প্রসঙ্গত, রবিবার মহুয়াকে একটি ভিডিয়োয় বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘দু’পয়সার প্রেস’। ভিডিয়োর সত্যতা অবশ্য যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডিজিটাল। কিন্তু তার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় মহুয়াকে কটাক্ষ করতে শুরু করেছিলেন সংবাদকর্মীদের বড় অংশ। সোমবার কলকাতা প্রেস ক্লাবও একটি বিবৃতি জারি করে। সেখানে ‘সাংসদ তাঁর মন্তব্য অবিলম্বে প্রত্যাহার করে দুঃখপ্রকাশ করবেন’ বলে আশা প্রকাশ করা হয়। কিন্তু সন্ধ্যায় মহুয়ার ‘হোয়াটসঅ্যাপ ডিপি’ দেখে বোঝা যায়, তিনি তাঁর মন্তব্য থেকে সরছেন না। তবে ‘সঠিক’ ওই মন্তব্যের জন্য তিনি ক্ষমা চেয়েছেন। পরে সেই বক্তব্য টুইটও করেন মহুয়া। সেখানে লেখা, ‘আই অ্যাপোলোজাইজ ফর দ্য মিন হার্টফুল অ্যাকিউরেট থিংস আই সেড (নিম্নমানের দুঃখজনক সঠিক কথা বলার জন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী)’।

ঘটনার সূত্রপাত রবিবার। নদিয়ার গয়েশপুরে জেলা তৃণমূলের সভানেত্রী মহুয়া গিয়েছিলেন একটি কর্মিসভায়। সেখানে হাজির ছিলেন সংবাদমাধ্যমের স্থানীয় প্রতিনিধিরাও। মহুয়া সেখানে গাড়ি থেকে নামতেই দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা বাধে। মহুয়ার গাড়ির ঘিরে বিক্ষোভও শুরু হয়। মহুয়া বিবদমান দুই গোষ্ঠীকে বুঝিয়েসুজিয়ে ভিতরে নিয়ে গিয়ে বৈঠক শুরু করান। সেখানেও সংবাদমাধ্যমের কয়েকজন প্রতিনিধি ঢুকে পড়েছিলেন বলে তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি। অভিযোগ, তখনই আচমকা মেজাজ হারান সাংসদ। দলীয় বৈঠকে সংবাদমাধ্যমকে ঢোকার অনুমতি কে দিয়েছেন জানতে চান দলের নেতা-কর্মীদের কাছে। এর পর উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘কে এই দু’পয়সার প্রেসকে ভেতরে ডাকে? কর্মীবৈঠক হচ্ছে। আর সবাই টিভিতে মুখ দেখাতে ব্যস্ত। আমি নির্দেশ দিচ্ছি, প্রেসকে সরান!’’ মহুয়ার সেই বক্তব্য রেকর্ড করা হয়। তার পর সেটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

সোমবার সকাল থেকে শোরগোল পড়ে যায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় মহুয়াকে কটাক্ষ করতে থাকেন বহু সাংবাদিক এবং সংবাদকর্মী। প্রেস ক্লাবের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র সাংবাদিকদের সম্বন্ধে যে মন্তব্য করেছেন তাতে প্রেস ক্লাব, কলকাতা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং তীব্র প্রতিবাদ করছে। তাঁর এই মন্তব্য নিঃসন্দেহে অনভিপ্রেত, অপমানজনক। ধিক্কার জানাই সাংসদের মন্তব্যে’।

মহুয়া যদিও নিজের মন্তব্য থেকে সরছেন না। টুইটার বা হোয়াট্‌সঅ্যাপ ডিপি-তে তিনি ‘ক্ষমা’ চাইলেও তাঁর মন্তব্য যে ‘সঠিক’ সে কথাও স্পষ্ট জানিয়েছেন তিনি। মহুয়া জানিয়েছেন, তিনি দলীয় কর্মীদের নিয়ে গয়েশপুরে একটি বৈঠক করছিলেন। সেখানে সংবাদমাধ্যমের ঢোকার কোনও অনুমতি ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘ওই বৈঠকে স্থানীয় শহর সভাপতির বিরুদ্ধে দলীয় কর্মীদের একাংশ আমার কাছে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন। আমি সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছিলাম। সেই সময় একদল কর্মী সংবাদমাধ্যমের স্থানীয় প্রতিনিধিদের কয়েক জনকে ডেকে আনেন।’’ মহুয়ার অভিযোগ, ‘‘তাঁরা আমার কথা মোবাইলে রেকর্ড করছিলেন। আমি তখন দলের সেই কর্মীদের রেগে গিয়ে বলেছি, কেন সংবাদমাধ্যমকে ডাকা হল? প্রশ্ন করি, কেন ২ পয়সার সাংবাদিকদের ডাকা হয়েছে? ওঁদের এখানে আনার ব্যাপারে আপনাদের কী স্বার্থ রয়েছে? আমি আমার দলের কর্মীদের বলেছি। সংবাদমাধ্যমকে বলিনি।’’

নিজের টুইটার হ্যান্ডলে ওই ঘটনা সম্পর্কে একটি সুচারু ‘মিম’ পোস্ট করেছেন মহুয়া। সঙ্গে লিখেছেন, ‘মাই মিম এডিটিং স্কিল আর ইমপ্রুভিং’। অর্থাৎ, ‘আমার মিম সম্পাদনার দক্ষতা ক্রমশই উন্নত হচ্ছে’।

অন্য বিষয়গুলি:

Mahua Moitra Media Gayeshpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy