(বাঁ দিকে) হুমায়ুন কবীর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (ডান দিকে)। — ফাইল চিত্র।
দলের তরফে শো কজ় করার পরের দিনই ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে কম কথা বলার পরামর্শ দিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেন হুমায়ুন। তার পর তিনি জানান, তাঁকে দ্রুত শো কজ়ের জবাব দিতে বলেছেন মমতা। নেত্রীর নির্দেশ মেনে শীঘ্রই সেই জবাব দেবেন বলেও জানিয়েছেন হুমায়ুন। একই সঙ্গে মমতা তাঁকে কম কথা বলার পরামর্শও দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
বুধবার হুমায়ুনকে শো কজ় করেছে তৃণমূল। শাসকদল সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূলনেত্রীর নির্দেশ অমান্য করে দল নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করার কারণে এই পদক্ষেপ। ইমেলের মাধ্যমে শো কজ়ের চিঠি পাঠানো হয়েছিল তাঁকে। শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিতে এসে বৃহস্পতিবার বিধানসভায় শো কজ়ের চিঠি হাতে পেয়েছেন হুমায়ুন। তার পরেই মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চান তিনি। রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস তাঁকে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে নিয়ে যান। তৃণমূলের পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, মমতার সঙ্গে কথা বলেছেন হুমায়ুন। মমতার সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “দিদি আমাকে বলেছেন, অত কথা বলো কেন? একটু কম কথা বলো। আর তাড়াতাড়ি শো কজ়ের জবাব দাও। বাকি কথা পরে হবে।’’ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে শীঘ্রই শো কজ়ের জবাব দেবেন বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন। শো কজ়ের জবাব দেওয়ার জন্য তিন দিন সময় দেওয়া হয়েছে তাঁকে। বুধবার অবশ্য তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমার কথায় যদি দলের অস্বস্তি হয়, তা হলে আমি তার জবাব দেব।’’
তৃণমূলের পরিষদীয় দল সূত্রে খবর, অরূপ বলেছেন, প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করার আগে হুমায়ুন নিজের সমস্যার কথা যেন তাঁকে জানান। হুমায়ুন তাঁকে জানিয়েছেন, এর আগে ফিরহাদ হাকিমকে নিজের সমস্যার কথা বলেছিলেন, কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি।
গত সোমবার কালীঘাটে মমতার বাড়িতে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক ছিল। ওই বৈঠকে মমতা নির্দেশ দিয়েছিলেন, দলের নেতারা চাইলে যেখানে খুশি যেতে পারবেন। তবে দল নিয়ে যা খুশি তা-ই বলতে পারবেন না। দলীয় এই শৃঙ্খলা না-মানলে তাঁকে প্রথমে শো কজ় করা হবে। সংশ্লিষ্ট নেতাকে জবাব দিতে হবে। তৃণমূল সূত্রে খবর, কোনও নেতা পর পর তিন বার যদি একই ঘটনা ঘটান, তা হলে, ওই নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে। ঘটনাচক্রে, নেত্রীর নির্দেশের ২৪ ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই দল নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন হুমায়ুন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে যে কয়েক জন ঘিরে রয়েছেন, যে ক’জন নিজেদের পরিকল্পনার মধ্যে রেখেছেন, তাঁরা মমতার কতটা ভাল চান, পশ্চিমবঙ্গের শাসক হিসাবে তাঁকে দীর্ঘমেয়াদে দেখতে চান কি না, তা নিয়ে আমার যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। যাঁরা ক্ষমতায় রয়েছেন, যাঁরা দলটাকে গুলিয়ে দিতে চাইছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নিজের জায়গা ঠিক রাখতে চাইছেন, কানে মন্ত্রণা দিচ্ছেন, ২০২৬ সালে তাঁরা জবাব পাবেন।’’ এখানেই থেমে ছিলেন না তিনি। হুমায়ুন বলেন, ‘‘আমি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নেতা মানি। তৃণমূল যদি আগামী দিনে আমায় টিকিট না দেয়, বেঁচে থাকলে অপকর্মের জবাব দেব।’’ বিধানসভার সামনে দাঁড়িয়ে এই কথা বলেছিলেন ভরতপুরের বিধায়ক। আর তাতে দলকে অস্বস্তিতে পড়তে হয়েছিল। তার পরেই তাঁকে শো কজ় করা হয়। এ বার নেত্রী তাঁকে কম কথা বলার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানালেন খোদ হুমায়ুন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy