—ফাইল চিত্র।
বিধানসভা ভোটের লক্ষ্যে রাজ্যে সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসে প্রথম দিনেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আঁচ পেয়ে গেলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। দলের কেন্দ্রীয় সম্পাদক ‘ত্রিপুরা-জয়ী’ সুনীল দেওধর বুধবার উলুবেড়িয়ার একটি রিসর্টে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর এবং হাওড়া, হুগলির নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেন। বিজেপি সূত্রের খবর, দেওধর ওই চার জেলার নেতাদের প্রত্যেকের বক্তব্য শোনেন এবং লিখে নেন। ওই নেতারা তাঁদের কিছু ক্ষোভের কথাও দেওধরকে জানান। ওঠে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথাও। বৈঠকে ছিলেন রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও। তিনি অবশ্য সাংবাদিকদের কাছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করেননি। তিনি শুধু বলেন, ‘‘প্রয়োজন হলে নেতৃত্বের রদবদল হতে পারে। তবে সে বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’’ তৃণমূল থেকে বিজেপিতে কেউ আসতে চাইলে তাঁকে স্বাগত জানানো হবে বলেও এ দিন ফের জানিয়েছেন কৈলাস।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষও এ দিন বলেন, ‘‘শুধু শুভেন্দু অধিকারী নন, তৃণমূলের অনেক বিধায়ক, নেতাই দলের বিষয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন। অনেকে বলছেন, ওখানে শ্বাসরুদ্ধ হয়ে যাচ্ছে, অক্সিজেন পাচ্ছেন না। আমরা তো অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে বসেই আছি। কষ্ট হলে আসুন। সবাইকে দেব।’’
দলীয় সূত্রের খবর, মঙ্গলবার কলকাতায় সাংগঠনিক বৈঠকে কৈলাস রাজ্য নেতাদের বলে দেন, বিধানসভা ভোটের প্রার্থী ঠিক করবেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। সুতরাং, নিজের পছন্দমতো কেন্দ্রে প্রার্থী হবেন ধরে নিয়ে কোনও নেতা যেন সেখানে বেশি ঘোরাঘুরি না করেন। এ রকম কাণ্ড যে কেউ কেউ করছেন, তা তাঁর জানা আছে।
বিধানসভা ভোটকে ‘পাখির চোখ’ করে এ দিন থেকেই চারটি সাংগঠনিক জোনে বৈঠক শুরু করেছেন চার কেন্দ্রীয় নেতা দেওধর, বিনোদ তাওড়ে, বিনোদ সোনকার এবং দুষ্যন্ত গৌতম। তাওড়ে নবদ্বীপ, সোনকার রাঢ়বঙ্গ এবং গৌতম কলকাতা জোনের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা। উত্তরবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত হরিশ দ্বিবেদী অবশ্য এ দিন এসে পৌঁছননি।
দিলীপবাবু এ দিন জানান, ভোটযুদ্ধে সাফল্য পেতে এর পর দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নড্ডা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও প্রতি মাসেই আসবেন। তবে তাঁদের সফরসূচি এখনও জানা যায়নি। বিজেপি সূত্রের খবর, ১৫ জানুয়ারির মধ্যেদ তাদের প্রায় সব সাংগঠনিক জেলায় এবং ফেব্রুয়ারির গোড়াতে প্রায় সব বিধানসভা কেন্দ্রে এক জন করে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক নিয়োগ করা হবে। সাংগঠনিক এবং রাজনৈতিক পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে সমীক্ষাও করাচ্ছে বিজেপি। দলের বাছাই করা সদস্যদের একাধিক টিম এবং কিছু পেশাদার সংস্থা আলাদা ভাবে ওই সমীক্ষা করছে। সে সবের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে বিধানসভা ভোটের রণকৌশল সাজাবেন শাহরা।
শাহ গত ৫ এবং ৬ নভেম্বর রাজ্যে সাংগঠনিক বৈঠকে এসে দাবি করে গিয়েছেন, এ রাজ্যে বিধানসভা ভোটে বিজেপি ২০০-র বেশি আসনে জিতবে। উত্তরপ্রদেশের কৌশাম্বির বিজেপি সাংসদ সোনকার ও দলের রাজ্য সহ-সভাপতি রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন দুর্গাপুরে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া এবং বীরভূম জেলার নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে বলা হয়েছে, ওই জেলাগুলি থেকে মোট ৫৭টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৫০টিতে জিততে হবে। ২০১৯-এর লোকসভা নির্বাচনে ওই এলাকার আটটি লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পাঁচটিতে জেতে বিজেপি। সেই হিসাবে তারা এগিয়ে ছিল ৩৭টি বিধানসভা কেন্দ্রে। কিন্তু রাজু বলেন, ‘‘বিধানসভায় এই এলাকা থেকে ৫০টি আসন পাওয়া আমাদের লক্ষ্য।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy