পদমর্যাদায় তিনি রাজ্যের প্রতিমন্ত্রীদের সমান। তাঁর যাতায়াতের জন্য রয়েছে নীল আলো লাগানো গাড়ি। নিরাপত্তায় সরকারি রক্ষী। কিন্তু এ সব দিয়ে তো হেঁসেল চলে না। মাসে বেতন মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। এই আয়ে সংসার চলবে কী করে, তা ভেবেই মাথায় হাত শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের সভাধিপতি তাপস সরকারের!
বেতন বাড়াতে খোদ রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রীকে চিঠি লেখেন তাপসবাবু। চার মাস হয়ে গেল, তার জবাব আসেনি এখনও। নিরুপায় তাপসবাবুর প্রশ্ন, তিনি বিরোধী দলের বলেই কি এই দেরি?
রাজনীতিতে নতুন তাপসবাবু। গত বছর শিলিগুড়িতে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোটে জিতে মহকুমা পরিষদের ক্ষমতা দখল করে বামেরা। সভাধিপতির পদে শপথ নেন বাগডোগরার কালীপদ ঘোষ তরাই কলেজের ইতিহাসের শিক্ষক তাপস সরকার। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সরকারি পদে থাকার সময়ে আগের চাকরি থেকে ‘লিভ অন লিয়েন’ নিতে হয়। অর্থাৎ, প্রশাসনিক পদ থেকে অব্যাহতি মেলার পরে ফের তিনি স্বপদে ফিরে যেতে পারবেন। এই মাঝের সময়টুকু সেই ব্যক্তি আগের চাকরি থেকে বেতন বা কোনও আর্থিক সুবিধে পাবেন না।
এই নিয়মের গেরোতেই তাপসবাবু পড়েছেন বলে বাম মহলের দাবি। কলেজে শিক্ষকতা করার সময়ে তিনি অ্যাসিস্টেন্ট অধ্যাপক পদে ছিলেন। এই পদমর্যাদায় সরকারি কলেজে ষাট হাজার টাকা বেতন হয়ে থাকে। তাপসবাবু ‘লিভ অন লিয়েন’ নেওয়ায় একটি প্রমোশনও বকেয়া রয়েছে। আর সেই চাকরি থেকে এসে এখন তিনি পাচ্ছেন মাত্র পাঁচ হাজার!
তাই মহকুমা পরিষদের মাথায় বসার পর থেকেই সংসারে টানাটানি শুরু তাপসের। তাঁর স্ত্রী স্কুল শিক্ষক। তাপসের বক্তব্য, স্ত্রীর রোজগারের টাকা বেশির ভাগটাই খরচ হয় তাঁর বাপের বাড়ির জন্য। মেয়ে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ে, ছেলে নার্সারিতে। এখন তাদের লেখাপড়া চালানোর খরচ কোথা থেকে জোগাড় করবেন, তা নিয়েও উদ্বেগে তিনি। দলেরই এক জন বলছিলেন, ‘‘চিন্তা হবে না! কারও মাইনে যদি এক ধাক্কায় চার গুণ কমে যায়, তা হলে সংসার চলবে কী করে!’’ তাপসের কথায়, ‘‘সভাধিপতি এক জন প্রতিমন্ত্রীর সমমর্যাদার। বেতন-ভাতাও তাঁদের সমান হওয়া উচিত। তাই অনুরোধ করেছি। শুধু আমার জন্য নয়, অনুরোধ করেছি পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদের অন্যান্য প্রতিনিধিদের ভাতা বাড়ানোর জন্যও।’’
জবাব কবে আসবে? হতাশ তাপসের বক্তব্য, ‘‘যে সরকার সাধারণ মানুষকে বঞ্চনা করে, তারা আমার চিঠির কী উত্তর দেবে!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy