একটি আমের দাম ৫০০ টাকা! সেই মহার্ঘ আমটি কিনে আতান্তরে পড়লেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত আম মেলার উদ্বোধনে এসেছিলেন তিনি। উদ্বোধনের পর আম মেলাটি ঘুরে দেখছিলেন তিনি। মুর্শিদাবাদের আমের স্টলে গিয়ে একটি আমের ওপর দামের মূল্য দেখে চোখ কপালে ওঠে মন্ত্রীমশাইয়ে।

কৌতূহলবশত তিনি স্টলে থাকা লোকজন ও সরকারি আধিকারিকদের কাছে জানতে চান ওই মহার্ঘ আমটি প্রসঙ্গে। জানতে পারেন মুর্শিদাবাদ জেলাতেই হয় এই বিশেষ ধরনের আমটি। বিরল প্রজাতির এই আমটির নাম কোহিতুর। খুব বেশি সংখ্যক গাছ আর অবশিষ্ট নেই বাংলার মাটিতে। স্বাদে, গন্ধে ও বর্ণে আলফানসোকেও জোর টক্কর দেবে বলেই মন্ত্রীর কাছে দাবি করেন স্টলে থাকা আম বিক্রেতারা। আগ্রহবশত ৫০০ টাকা দিয়ে একটি আম কিনেও নেন তিনি।

মেলা প্রাঙ্গণ ছেড়ে বেরোনোর সময় ৫০০ টাকার আমের কথা নিজের কয়েকজন পরিচিত ব্যক্তিদের বলছিলেন কৃষিমন্ত্রী। ৫০০ টাকা দামি এই আমটি কেমন খেতে, তা বুঝতেই তিনি আমটি কিনেছেন বলে জানান। মেলায় উপস্থিত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের এক আধিকারিক তাঁকে জানান, এই আমটি কেটে খেতে গেলে আবার বিশেষ ধরনের ছুরির প্রয়োজন হবে। সেই কথাটি শুনে অবাক হয়ে যান মন্ত্রীমশাই। জানতে চান কোহিতুর আম কাটার পদ্ধতি।

ওই আধিকারিক মন্ত্রীকে বলেন, মুর্শিদাবাদ জেলার লোকজন এই আমটি কাটতে ব্যবহার করেন বাঁশের চাঁচড়ি। কারণ, কোনও ধাতব বস্তু দিয়ে কোহিতুর আম কাটলে স্বাদ-গন্ধ-বর্ণ থেকে বঞ্চিত হবে খাদ্যরসিকরা। তাই ওই আধিকারিক কোহিতুর আম বাঁশের ছুরি দিয়েই কাটার পরামর্শ দেন মন্ত্রীকে। শোভনদেব জানিয়ে যান, বাঁশের ছুরি দিয়ে কেটেই এই বিশেষ ধরনের আমের স্বাদ অবশ্যই নেবেন তিনি।

ওই আমের স্টলের দায়িত্বে থাকা আশাবুল মণ্ডল বলেন, ‘‘কোহিতুর আম মুর্শিদকুলি খাঁ ব্রহ্মদেশ (অধুনা মায়নমার) থেকে নিয়ে এসেছিলেন। তিনি একবার রেঙ্গুন গিয়ে এই আমটি খান, তাঁর খুব ভাল লাগে। সেই ভাল লাগা থেকেই আমটি মুর্শিদাবাদে নিয়ে আসেন তিনি। এখন ২০-২৫টি গাছ রয়ে গিয়েছে মুর্শিদাবাদের আম বাগানগুলিতে।’’ তিনি আরও জানান, তুলো দিয়ে ধরে বাঁশের চাঁচড়ি দিয়ে কাটলে এই আমের প্রকৃত স্বাদ পাওয়া যায়।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।