(বাঁ দিকে) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
পড়ে গিয়ে কপালে তিনটে এবং নাকে একটি সেলাই পড়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু কী ভাবে তাঁর এই আঘাত লাগল, তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর চিকিৎসার পর এসএসকেএম হাসপাতালের তরফে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পিছন থেকে ধাক্কা’র কথা। এ বার তার ‘ব্যাখ্যা’ দিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। যিনি চিকিৎসকও বটে। তাঁর কথায়, ‘‘ডাক্তার গতকাল (বৃহস্পতিবার) যেটা বলেছেন, সেটার মানে যেটা বার করছেন সকলে... সেখানে ভিন্ন মত হয় কী করে! একটাই মত।’’ শশীর সংযোজন, ‘‘পেশেন্ট অর্থাৎ দিদির একটা অদ্ভুত ‘সেনসেশন’ মনে হয়েছে।’’ তবে ‘সেনসেশন’-এর বাংলা এখানে ঠিক কী, তা নিয়ে দ্বিধায় মন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘সব কিছুর তো বাংলা হয় না। এখন তাঁর কেন ও রকম মনে হল, তা নিয়ে ভিন্নমতের কোনও জায়গা নেই। কোনও কারণে একটা টালমাটাল পরিস্থিতির তৈরি হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, একটা ‘সেনসেশন’ হয়েছে। একটা ফোর্স—একটা কিছু।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিষয়টা সিনকোপ। অনেক সময় শারীরিক অস্থিরতার জন্য মানুষ হঠাৎ করে জ্ঞান হারায়। এর সঙ্গে কারও ধাক্কা দেওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই।’’
বৃহস্পতিবার মেডিক্যাল বুলেটিনে মন্তব্যের পর এসএসকেএমের ডিরেক্টর মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় পরে তাঁর ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীকে পিছন থেকে শারীরিক ভাবে কেউ ধাক্কা মেরেছেন, এটা বলতে চাইনি। আসলে পড়ে যাওয়ার সময় মুখ্যমন্ত্রীর মনে হয়েছিল, তিনি কোনও ধাক্কা খেয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে অনেক সময় এ রকম মনে হয়।’’ শশীও সেটাই বলতে চেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কালীঘাটের বাসভবনে পড়ে গিয়ে আঘাত পান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কপালে গভীর ক্ষত হয়েছে। নাকেও চোট লেগেছে। সেই সময়ে ওই বাড়িতেই ছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনিই নিজের গাড়িতে মমতাকে এসএসকেএমে নিয়ে যান। মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতস্থানে সেলাই করে ড্রেসিং করে দেন চিকিৎসকেরা। উডবার্ন ওয়ার্ড থেকে হুইলচেয়ারে বসিয়ে তাঁকে লাগোয়া বাঙুর ইনস্টিটিউট অফ নিউরোসায়েন্সেসের ওপিডি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর গাড়ি করে আবার কালীঘাটের বাসভবনে ফিরে যান মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবার সকালে মুখ্যন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলও। গিয়েছিলেন ডিসি (দক্ষিণ) প্রিয়ব্রত রায়ও। অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রী কী ভাবে পড়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। তাদের দাবি, এর তদন্ত হওয়া দরকার। তবে শশীর দাবি, ‘‘এটাকে (দুর্ঘটনা) ছোট করা বা পুরো বিষয়টার অন্য অর্থ করাটা অনুচিত।’’ তিনি বলেন, ‘‘অনেক সময় হয়, আমরা দাঁড়িয়েছিলাম,পড়ে যাচ্ছি। পিছন থেকে কেউ ধাক্কা দিচ্ছেন না। উনি এমনটা অনুভব করেছেন যে, মাথা ঘুরে বা হোঁচট খেয়ে পড়ে যাচ্ছেন। কেন পড়লেন, সেটা রক্তচাপ সংক্রান্ত কারণে না কি অন্য কারণে, সেটা ডাক্তারেরা বিবেচনা করবেন। ডাক্তারের কথার ভুল অর্থ করাটা ঠিক নয়। বিস্তারিত তথ্য আরও জানা যাবে।’’ মন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রীর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত হাসপাতালের তরফে আরও বুলেটিন প্রকাশ করা হবে। তাঁর সংযোজন, ‘‘দিদিও মানুষ, এত কাজ করেন। উনি সুস্থ হয়ে উঠুন, এটা সবাই চাইছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy