পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বদলে নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজো কমিটিতে এলেন মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় জেলে। এই নিয়ে পর পর দু’বছর নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজো পার্থহীন। পার্থের শূন্যস্থান পূরণ করতে দক্ষিণ কলকাতার এই নামী পুজোয় আগেই জুড়েছিল মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নাম। এ বার, আসন্ন পুজোর প্রচারে অরূপকে ‘তুমি আমাদেরই লোক’ বলে উল্লেখ করাই শুধু নয়, ‘নতুন সূর্যের ভোর’ হওয়ার ঘোষণাও বেশ ইঙ্গিতবাহী।
নাকতলার ওই পুজো ‘পার্থ চ্যাটার্জির পুজো’ বলে পরিচিত ছিল বছরের পর বছর। বেহালা পশ্চিমের বিধায়ক হলেও, টালিগঞ্জ বিধানসভা এলাকার নিজের পাড়ার পুজোকেই বেশি গুরুত্ব দিতেন পার্থ। গত বছর ২৩ জুলাই এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) তাঁকে গ্রেফতার করে। এখনও জেলেই রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী। গত বছরের পুজোয় খানিকটা হলেও হতভম্ব বা বিভ্রান্তির ভাব ছিল নাকতলার পুজো কমিটিতে। ক্রমশ সেটা কেটেছে। এ বার পুজো কমিটিতে জায়গা করে নিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অরূপ। গত শুক্রবার ক্লাবের তরফ থেকে একটি ‘টিজ়ার’ প্রকাশিত হয়েছে সমাজমাধ্যমে। সেই টিজ়ারের নীচের অংশে লেখা হয়েছে— ‘‘নতুন সূর্যের এই ভোরে আমাদের মাঝে থাকবেন যিনি তাকে আমরা বলি ‘তুমি আমাদেরই লোক’’। তার পরেই দেওয়া হয়েছে অরূপের নাম।
২০০৬ সাল থেকে অরূপ টালিগঞ্জের বিধায়ক। কিন্তু তিনি কখনওই নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজো কমিটিতে ছিলেন না। গত বছর পার্থের জেল যাত্রার পর যে পুজো হয়, তাতে শাসকদলের কোনও নেতা ছিলেন না। উল্টে এই পুজো ছেড়ে তৃণমূল কাউন্সিলর বাপ্পাদিত্য দাশগুপ্ত চলে গিয়েছিলেন কেন্দুয়া শান্তি সংঘের পুজোয়। এ বছর ক্লাবের রক্তদান শিবিরে যান অরূপ। সেখানেই পুজো সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে কমিটির কর্তাদের সঙ্গে মন্ত্রীর আলোচনা হয়। পুজোর সঙ্গে তিনি যুক্ত হবেন বলেও আশ্বাস দেন বিধায়ক। তার পরেই অরূপকে পুজো কমিটির প্রধান উপদেষ্টার পদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
গত কয়েক বছরের মতো এ বারও নাকতলার পুজো সাজিয়ে তোলার দায়িত্বে রয়েছেন শিল্পী প্রদীপ দাস। এ বছর ফ্লেক্সে পুজোর প্রচার করবে না এই পুজো কমিটি। এতে দৃশ্যদূষণ হয় বলে কমিটির মত। আগামী ২৭ অগস্ট পুজোর উদ্যোক্তা এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে লেখা প্রচারপত্র দিয়ে প্রচার শুরু করবেন তাঁরা। ওই দিন নিজের হাতে প্রচারপত্র লিখে কর্মসূচির সূচনা করবেন অরূপই। তারই ঘোষণা করে ওই টিজ়ারটি প্রকাশিত হয়েছে সমাজমাধ্যমে।
অরূপে ‘যোগদান’ প্রসঙ্গে উদয়ন সংঘের পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা অঞ্জন দাস বলেন, ‘‘প্রত্যেকটি পুজোই কোনও না কোনও সংগঠন করে থাকে। কিন্তু সংবাদমাধ্যম সেই সব পুজোকে কোনও না কোনও নেতার নামের সঙ্গে জুড়ে দিয়েছে। এই দায় আমাদের নয়। পার্থদা আমাদের পুজো কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তাই নাকতলার পুজোকে পার্থ চ্যাটার্জির পুজো বলা হত। তাঁর অনুপস্থিতিতে অরূপদা আমাদের পুজোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে তো কোনও বিতর্কের অবকাশ নেই। কারণ স্থানীয় বিধায়ক হিসেবে তিনি আমাদের পুজোর সঙ্গে যুক্ত থাকতেই পারেন।’’ ঘটনা হল, প্রায় ১৭ বছর টালিগঞ্জ এলাকার বিধায়ক থাকার পর নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজোয় জুড়লেন অরূপ।
নিউ আলিপুরের সুরুচি সংঘের পুজোকেই নিজের পুজো বলতে পছন্দ করেন অরূপ। যদিও, সেই পুজোটি হয় রাসবিহারী বিধানসভা কেন্দ্রে অধীন ৮১ নম্বর ওয়ার্ডে। দীর্ঘ দিন ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন অরূপ। এই পুজো ছাড়াও অরূপের নিজের ৮১ নম্বর ওয়ার্ড ও টালিগঞ্জ বিধানসভার একঝাঁক পুজোর কোনও না কোনও পদে রয়েছেন রাজ্যে ক্রীড়া ও যুব কল্যাণ মন্ত্রী। কিন্তু, নাকতলা উদয়ন সংঘের পুজোয় তাঁর যোগদানে ভিন্ন মাত্রা তো থাকছেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy