রাজনীতিতে আসার পর নিজের ‘ইমেজ’ নিয়ে যে তাঁকে আরও বেশি সচেতন হতে হয়েছে, তা কোনও ভাবেই লুকোননি মিমি।
রাজনীতিতে আসার পর নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে এখন আগের চেয়ে বেশি সচেতন তিনি। অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় করা নিয়ে আগে যতটা ভাবতেন, এখন তার চেয়ে বেশিই ভাবেন। শনিবার আনন্দবাজার অনলাইনের লাইভ অনুষ্ঠান ‘অ-জানা কথা’য় খোলাখুলিই জানালেন অভিনেত্রী তথা যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ মিমি চক্রবর্তী।
বড় পর্দায় ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে অভিনয় না করা বা খোলামেলা পোশাক না পরার সিদ্ধান্ত যে একেবারেই আরোপিত নয়, তা স্পষ্টতই জানিয়েছেন মিমি। সেই সঙ্গে এ-ও জানালেন, এই সিদ্ধান্ত তাঁর সম্পূর্ণ নিজের এবং এ নিয়ে ভালমন্দ বিচারও করেন না তিনি। সান্ধ্য আড্ডায় মিমি বলেন, ‘‘অন্তরঙ্গ দৃশ্যে অভিনয় বা অন্য রকম পোশাক পরা নিয়ে হয়তো আমি নিজে স্বচ্ছন্দ নই। কিন্তু আমি জাজমেন্টালও নই। এটা সম্পূর্ণ নিজের ভাবনা। আমায় কেউ কখনও বারণ করেননি। তবুও কী করব, কী পরব, এ নিয়ে আমি ভাবি। আগে এই বিষয়গুলো নিয়ে যতটা ভাবতাম, এখন তার চেয়ে তিন গুণ বেশি ভাবি।’’
রাজনীতিতে আসার পর নিজের ‘ইমেজ’ নিয়ে যে তাঁকে আরও বেশি সচেতন হতে হয়েছে, তা কোনও ভাবেই লুকোননি মিমি। বলেন, ‘‘আগে যেমন কোনও বিষয় নিয়ে নিজের সম্পূর্ণ মতামত দিতে পারতাম, এখন অনেক কিছু ভেবে বলতে হয়।’’
এই কথা প্রসঙ্গেই ২০১৯ সালে সাংসদ হওয়ার পর প্রথম বার সংসদে যাওয়ার অভিজ্ঞতার কথাও বলেন মিমি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি প্রথম দিন সংসদে একটা সাদা জামা আর একটা ডেনিম পরে গিয়েছিলাম। তার জন্য আমায় ট্রোল করা হয়েছে। কিন্ত ওই পোশাক একেবারেই ফর্ম্যাল। তবে এখনও আমার এটা ভেবে সত্যিই ভাল লাগে যে, ভাগ্যিস সে দিন সাহস করে ওই পোশাক পরে সংসদে গিয়েছিলাম আমি! কারণ, এখন অনেক মেয়েই সংসদে জামা, স্নিকার, কুর্তি, সালোয়ার কামিজ পরে আসেন। আমি বলতে চাইছি না যে, এই বদলটা আমি এনেছি। কিন্তু আর যাই হোক, আমি সে দিন সাহস দেখিয়েছিলাম। আর আজ অন্যরাও ওই সাহসটা দেখাতে পারছেন। এটা ভেবে আনন্দ হয়।’’
১৯৮৪ সালে বর্ষীয়ান রাজনীতিক তথা আইনজীবী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে যাদবপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে হারিয়েই প্রথম বার সাংসদ হয়েছিলেন রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কেন্দ্র থেকে লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়ানোর অভিজ্ঞতাও ‘অ-জানা কথা’য় জানালেন মিমি। অভিনেত্রী-সাংসদের কথায়, ‘‘লোকে কতটা বিশ্বাস করবে জানি না, তাও বলছি, আমি শেষ দিন পর্যন্তও জানতাম না যে আমি যাদবপুর থেকে ভোটে দাঁড়াব। এটা সম্পূর্ণ দিদি (তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়)-র সিদ্ধান্ত। আমি ভীষণই চাপে ছিলাম।’’
মিমি জানান, যাদবপুর কেন্দ্র থেকে দলের প্রার্থী ঘোষণা হওয়ার অনেকেই মনে করেছিলেন, তিনি হয়তো জিতবেন না। কিন্তু দিদি তাঁর উপর আস্থা রেখেছিলেন। মিমির কথায়, ‘‘দিদি শুধু আমায় বলেছিলেন, ‘তুমি জিতবে, এটা আমার কনফিডেন্স।’ এটা শোনার পর আমার আর কিছু দরকার হয়নি। আমার মানুষের উপর বিশ্বাস ছিল।’’
কিন্তু সাংসদ হিসাবে মিমি কি উত্তীর্ণ? কত নম্বর দেবেন নিজেকে? এই প্রশ্নের জবাবে মিমি বলেন, ‘‘নিজেকে নম্বর দেওয়ার যোগ্যতা আমার নেই। আমি জনপ্রতিনিধি। মানুষই আমাকে নম্বর দেবেন।’’ পাশাপাশিই মিমি জানান, সাংসদের ভূমিকা তাঁর ভালই লাগে। তাঁর কথায়, ‘‘এত মানুষ আমায় এই সম্মান দিয়েছেন। আমাদের মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আমায় এই জায়গাটা দিয়েছেন। আমি সব সময় চেষ্টা করি যাতে, নিজের ১০০ শতাংশ দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি।’’
আগামী ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনেও কি তিনি যাদবপুর কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন? মিমির উত্তর, ‘‘দেরি আছে এখনও। কাল কী হবে, সেটাই জানি না। জীবন অনিশ্চিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy