মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির দখল ঘিরে সংঘর্ষে মৃত্যু হল একজনের। ঘটনায় জখম হন ১৮ জন। রবিবার ভোরে পাঁশকুড়া জামিয়া ইসলামিয়া মাজাহিরুল উলুম মাদ্রাসার এই ঘটনায় মৃতের নাম মৌলানা আব্দুল করিম (২৮)। তিনি ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। জখমদের উদ্ধার করে প্রথমে পাঁশকুড়া ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে ৬ জনকে তমলুক জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন বলেন, “পাঁশকুড়ার এক মাদ্রাসায় সংঘর্ষে একজনের মৃত্যু হয়েছে। ১৮ জন জখম হয়েছেন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাত জনকে আটক করা হয়েছে।”
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁশকুড়া রেলস্টেশন থেকে ঘাটালগামী রাজ্য সড়কের ধারে রয়েছে জামিয়া ইসলামিয়া মাজাহিরুল উলুম নামের এই মাদ্রাসা। পাঁশকুড়া কলেজের কাছে কনকপুর গ্রামের এই মাদ্রাসায় কয়েক’শো আবাসিক ছাত্র রয়েছে। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সদস্যদের মধ্যে বিরোধ চলছিল দীর্ঘদিন ধরেই। সম্প্রতি ওই মাদ্রাসার শিক্ষক তথা পরিচালন সমিতির দুই সদস্য কারি আব্দুল রজ্জাক ও শেখ রুহুল আমিনকে তাঁদের পদ থেকে বাদ দেওয়া হয়। এরপরই পরিচালন সমিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সঙ্গে বাদ পড়া দুই সদস্যদের গোষ্ঠী-বিরোধ চরমে ওঠে।
রবিবার ভোরে বিরোধী গোষ্ঠীর সদস্য কারি আব্দুল রজ্জাক ও শেখ রুহুল আমিনের নেতৃত্বে একদল লোক ওই মাদ্রাসার ভিতরে ঢুকে পরিচালন সমিতির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সদস্যদের ঘরে হামলা করে। সংঘর্ষ বাধে। অভিযোগ, তাতে জড়িয়ে পড়ে ছাত্ররাও। জখম হন পরিচালন সমিতির সদস্য শেখ রুহুল আমিন ও কারি আব্দুর রজ্জাকের ভাই মৌলানা আব্দুল করিম-সহ ১৮ জন। আহতদের মধ্যে অধিকাংশই ওই মাদ্রাসার ছাত্র। মৃত আব্দুল করিমের দাদা কারি আব্দুর রজ্জাক নিজেকে মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সম্পাদক দাবি করে বলেন, “আমরা হস্টেল সুপারের আর্থিক দুর্নীতির প্রতিবাদ করায় ওরা আমাদের উপর আক্রমণের পরিকল্পনা করেছিল। এ দিন ভোরে আমরা মাদ্রাসার ভিতরে গেলে হস্টেলের ছাত্রদের নিয়ে আমাদের উপর আক্রমণ চালায় ওরা।” মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির সদস্যদের মধ্যে বিরোধের কথা স্বীকার করে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক তথা ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর সদস্য মৌলানা আজিজুল হক কাশেমের পাল্টা অভিযোগ, “এ দিন ভোরে ওরা দ’ুজন বাইরে থেকে ৩০-৪০ জন লোক নিয়ে এসে মাদ্রাসায় হামলা চালায়। সেই সময় শিক্ষক ও হস্টেলের ছাত্ররা তার প্রতিবাদ করায় গোলমাল বাধে।”
মাদ্রাসার এই সংঘর্ষ ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। বছর খানেক আগেও ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক শেখ শাহনওয়াজের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে রহস্য দানা বেঁধেছিল। উঠেছিল খুনের অভিযোগও। ফর মাদ্রাসার পরিচালন সমিতির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে রবিবারের সংঘর্ষে একজনের মৃত্যুর ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে পুলিশ-প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy