শহরের প্রধান রাস্তাগুলিকে সাফ সুতরো রাখার জন্য লোকসভা ভোটের আগে দুপুর বেলায় রাস্তা সাফাইয়ের ব্যবস্থা চালু করেছিল তমলুক পুরসভা। কিন্তু ভোট পার হওয়ার একমাস পরেই আগের অবস্থায় ফিরে গেল পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর শহর। দুপুর বেলায় শহরের রাস্তা সাফাইয়ের কাজ বন্ধ করে দিয়েছে পুরসভা। শহরে ফের আগের মতই শুধু সকালবেলায় সাফাইয়ের ব্যবস্থা বজায় রয়েছে।
শহরের বাসিন্দারা সাফাই কাজ নিয়ে এ ভাবে পুরসভার অবস্থান বদল নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তবে এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই দাবি তৃণমূল পরিচালিত তমলুকের পুরপ্রধান দেবিকা মাইতির। তাঁর বক্তব্য, “সকালের পাশাপাশি দুপুরেও সাফাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ঠিকই। তবে দুপুরে সাফাই করতে প্রতি মাসে পুরসভার নিজস্ব তহবিল থেকে প্রায় ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা বাড়তি খরচ হচ্ছিল। সেই খরচ বাঁচাতেই এমন সিদ্ধান্ত।”
পুরসভা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন শহর তমলুক মহকুমা সদর থেকে উন্নীত হয়েছে জেলা সদরে। পুরসভার দেড়শ বছর পূর্তি উপলক্ষে বছরের প্রথম দিকে ঘটা করে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল তমলুক পুরসভা। কিন্তু শহরের রাস্তাঘাট, নিকাশি ব্যবস্থা ও সৌন্দর্যায়নের বিষয়ে অবহেলার ছাপ স্পষ্ট। সকাল বেলায় শহরের জঞ্জাল সাফাইয়ের জন্য পুরসভায় বর্তমানে প্রায় ১৩০ জন সাফাই কর্মী রয়েছেন। এদের মধ্যে ৫৫ জন স্থায়ী কর্মী ও বাকিরা নির্ধারিত পারিশ্রমিকের। কিন্তু দুপুর বেলায় সাফাই কাজের জন্য নিযুক্ত সাফাই কর্মীদের দৈনিক কাজের ভিত্তিতে তাঁদের আলাদাভাবে পারিশ্রমিক দিতে হত। এজন্য পুরসভার বাড়তি প্রায় ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছিল। যার পুরোটাই মেটাতে হত পুরসভা নিজস্ব তহবিল থেকে। এ জন্য বছরে পুরসভার বার্ষিক অতিরিক্ত খরচ ঠেকেছিল প্রায় ৫-৬ লক্ষ টাকায়। পুরপ্রধান দেবিকা মাইতির মতে, “আমাদের পুরসভার নিজস্ব তহবিল খুবই কম। এই পরিস্থিতিতে শুধু দুপুরের সাফাই কাজের জন্য প্রতিমাসে এত খরচ করা সম্ভব নয়। তাই বাধ্য হয়ে দুপুরের সাফাই কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।” কিন্তু প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে নির্বাচনের আগে কেন হঠাৎ দুপুরে সাফাই শুরু করে তা আচমকা বন্ধ করে দেওয়া হল?
পুরসভার বাসিন্দাদের মতে, যেখানে শহরে সকাল বেলাতেই সময়মত জঞ্জাল সাফাইয়ের কাজ হয় না। সেখানে দুপুরবেলা আর একদফা রাস্তাঘাট সাফাইয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে পুরসভার এ বিষয়ে ভাবা উচিত ছিল। বরং সকালবেলায় সাফাইয়ের কাজ যাতে ঠিকমত হয় সেদিকে পুরসভার গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। তমলুক পৌর কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সমর পালই বলেন, “দুপুরে জঞ্জাল সাফাই বন্ধ করার সিদ্ধান্তের আগে পুরসভা আমাদের কিছু জানায়নি। আচমকা এই সিদ্ধান্তে ওই সাফাই কর্মীরা কিছুটা অসুবিধায় পড়েছে। আমরা এ বিষয়ে সমস্যার কথা পুরপ্রধানকে জানিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy