চাষে আগের মতো লাভ আর কই! রাজ্যের চাষিদের এমন অনুযোগ নতুন নয়। প্রযুক্তি নির্ভর চাষের ব্যবহার বাড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের লাভের মুখ দেখাতে এ বার প্রশিক্ষণের সিদ্ধান্ত নিল খড়্গপুর আইআইটি-র কৃষিপ্রযুক্তি বিভাগ। ১০টি বিষয়ের উপর আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিন দিন চলবে এই কর্মশালা। সেখানে কৃষিজীবী এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কর্মশালার সঙ্গেই আলোচনা সভা ও প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সোমবার আইআইটি-র কৃষিপ্রযুক্তি বিভাগের পক্ষ থেকে সাংবাদিক বৈঠকে ‘এগ্রি-এক্সপো’ নামে ওই কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন প্রকল্পের মুখ্য উপদেষ্টা অধ্যাপক বিমলচন্দ্র পাল, আহ্বায়ক অধ্যাপক অরুণাভ মিশ্র, সহ আহ্বায়ক অধ্যাপক আর কে ঝা। তাঁরা জানান, গ্রাম বাংলার চাষের প্রকৃত পদ্ধতি সম্পর্কে এখনও অনেকেই ততটা সড়গড় নন। অনেকেই পুরনো পদ্ধতিতে চাষ করে মুনাফা পাচ্ছেন না। প্রযুক্তি যে ভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতে প্রযুক্তি নির্ভর চাষে কিছু মেশিনের ব্যবহার ও চাষের যথাযত পদ্ধতি সম্পর্কে ধারনা থাকলে চাষিরা অনেক বেশি লাভ করতে পারবেন। নিত্য নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে গ্রামের মানুষের সম্পর্ক নিবিড় করতেই এই কর্মশালা বলে উদ্যোগীরা জানান। প্রতিষ্ঠানের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিমলচন্দ্র পালের আশা, “শিবির থেকে যুব সমাজ প্রশিক্ষিত হয়ে স্বনির্ভর হতে পারবে।”
আইআইটি সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারই প্রথম বড় আকারে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে নতুন প্রযুক্তিতে মাটি পরীক্ষা, কৃষিজ যন্ত্রপাতির রক্ষণাবেক্ষণ ও মেরামতি, ‘গ্রিন হাউজ’ ও গভীর সেচ, জৈব সার উত্পাদন, মুড়ি ভাঙার মেশিনের ব্যবহার, শালপাতায় চুল্লার ব্যবহার, মাছের খাদ্য তৈরি-সহ ১২টি বিষয়ে ধারনা দেওয়া হবে। এক জন ব্যক্তি যে কোনও একটি বিষয়েই যোগ দিতে পরাবেন। এক্ষেত্রে তাঁকে ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কৃষি বিভাগে এসে যোগাযোগ করতে হবে। প্রতিটি বিভাগে ৮ জন করে মোট ১০০ জনকে ‘আগে এলে আগে সুযোগের’ ভিত্তিতে শিবিরে নেওয়া হবে। আইআইটি যোগদানকারীর থেকে প্রবেশ মূল্য নেবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কেন?
মুখ্য উপদেষ্টা বিমলচন্দ্র পাল বলেন, “অভিজ্ঞতা বলছে, প্রবেশমূল্য ছাড়া প্রশিক্ষণকে অনেকেই গুরুত্ব দেন না। তাই এ বছর এই সিদ্ধান্ত।” প্রশিক্ষণে যোগ দেওয়া ব্যক্তিদের তিন দিন ধরে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা থাকছে বলেও জানান তিনি।
শুধু প্রশিক্ষণ নয়, কিছু আমন্ত্রিত চাষিদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজনও থাকছে। তাঁদের সমস্যা কথা জেনে দিশা দেখাবেন উপস্থিত কৃষি বিশেষজ্ঞরা। আমন্ত্রিতেরা ছাড়াও বাইরের যে কোনও চাষি ওই সভায় যোগ দিতে পারবেন। তা জানান সহ-আহ্বায়ক আর কে ঝা। ওই তিন দিনে কৃষি প্রদর্শনীর ব্যবস্থাও থাকছে। অবশ্য অন্য কৃষি মেলার থেকে এই প্রদর্শনী একটু আলাদা। কেমন?
এখানে মূলত আধুনিক প্রযুক্তির কৃষিজ সরঞ্জাম প্রদর্শিত হবে। সেগুলির প্রয়োগ, তার কার্যকারিতা সম্পর্কে মানুষকে বোঝানোও হবে। ব্যতিক্রমী কৃষিজ ফসলের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আহ্বায়ক অধ্যাপক অরুণাভ মিশ্র বলেন, “কতগুলি স্টল হবে ঠিক হয়নি। তবে ব্যতিক্রমী ফসলের প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি। সেখানে যোগদানে প্রবেশমূল্য নেই। তাছাড়া, খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।” আইআইটি-র আশা, এগ্রি-এক্সপোয় চাষিরা উপকৃত হবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy