তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলে গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করলেন দলীয় কর্মী- সমর্থকেরাই। বুধবার দুপুরে নারায়ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতে ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার জেরে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছে শাসক দলই। অস্বস্তি এড়াতে তৃণমূল নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, এই ঘটনার সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই।
নারায়ণগড় পঞ্চায়েতে এ দিন যাঁদের নেতৃত্বে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়, তাঁদের মধ্যে ছিলেন নারায়ণগড় পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য টিপু টুডু। কেন এই কর্মসূচি? পঞ্চায়েত সমিতির এই তৃণমূল সদস্যের কথায়, “পঞ্চায়েতের কাজকর্মে প্রচুর দুর্নীতি হচ্ছে। প্রধান তাঁর ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সকলের সঙ্গে আলোচনা করে কাজ করছেন না। আগে দলের সব স্তরে অভিযোগ জানিয়েছি। সুরাহা হয়নি।” এ দিন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান সুস্মিতা ভুঁইয়াকে স্মারকলিপি দিতে চেয়েছিলেন বিক্ষোভরত তৃণমূল কর্মী- সমর্থকেরা। সুস্মিতাদেবী অবশ্য তখন পঞ্চায়েত কার্যালয় ছিলেন না। এ নিয়েও অসন্তোষ গোপন করছেন না পঞ্চায়েত সমিতির ওই তৃণমূল সদস্য। তাঁর কথায়, “আমরা যে এ দিন ডেপুটেশন দিতে আসব, তা প্রধান জানতেন। দু’দিন আগেই আমরা তাঁকে বিষয়টি জানাই।” বস্তুত, সিপিএম কয়েক মাস ধরেই দাবি করে আসছে, তৃণমূল সরকারের আমলে পঞ্চায়েতের লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয় হচ্ছে। একশো দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি চলছে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতা- কর্মীরা পঞ্চায়েতের অর্থ লুঠ করার জন্য হামলে পড়েছে। নিয়মনীতি বাদ দিয়ে গায়ের জোরে বিভিন্ন কাজ করা হচ্ছে। লুঠ করা অর্থের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়েও তৃণমূলের মধ্যে তুমুল গোষ্ঠী বিবাদ চলছে বলেও অভিযোগ। এই গোষ্ঠী বিবাদের জেরে সাধারণ মানুষের জীবনও নাজেহাল হয়ে উঠছে।
এ বার খোদ তৃণমূল কর্মী-সমর্থকেরাই তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলে গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি করায় শাসক দলের অন্দরে স্বাভাবিক ভাবেই অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। অন্য এলাকার মতো নারায়ণগড়েও তৃণমূলের একাধিক গোষ্ঠী রয়েছে। বুধবারের এই কর্মসূচির পিছনেই গোষ্ঠী বিবাদ কাজ করেছে বলে দলেরই এক সূত্রে খবর। জানা গিয়েছে, কাজের ক্ষেত্রে নারায়ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের উপ প্রধান প্রদীপ বারিকের সঙ্গেও তেমন সমন্বয় থাকে না সুস্মিতাদেবীর। এ দিন অবশ্য সুস্মিতাদেবীর সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। পরিস্থিতি দেখে অবশ্য এই ঘটনার দায় এড়াচ্ছে তৃণমূল। দলের নারায়ণগড় ব্লক সভাপতি মিহির চন্দ বলেন, “বুধবার যাঁরা ডেপুটেশন দিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা দলের পক্ষ থেকে যাননি। অথচ, দলের প্যাড ব্যবহার করেছেন। গ্রামবাসীরা ডেপুটেশন দিতেই পারেন। তবে তা সাদা কাগজে দিতে হবে। অনুমতি না- নিয়ে দলের প্যাড ব্যবহার করা হবে কেন?” পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্যের নেতৃত্ব বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। তিনি দলের কেউ নন? মিহিরবাবু বলেন, “উনি দলের অনুমতি না- নিয়েই ওই কর্মসূচি করেছেন। আমরা একে সমর্থন করি না।” নারায়ণগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তাহলে মিথ্যে? তৃণমূলের ব্লক সভাপতির জবাব, “একেবারে মিথ্যে। মনগড়া। দুর্নীতি হলে তা বিডিও- ডিএম দেখবেন।” বিক্ষোভ কর্মসূচির সময় দলের পরামর্শ মেনেই যে পঞ্চায়েত প্রধান সুস্মিতাদেবী গ্রাম পঞ্চায়েত কার্যালয়ে অনুপস্থিত ছিলেন, তাও বুঝিয়ে দিয়েছেন মিহিরবাবু। পাশাপাশি তাঁর দাবি, “এটা বড় কোনও ব্যাপার নয়। বুধবার তো কোনও গোলমালও হয়নি!”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy