আক্রান্তদের বাড়িতে তুষারবাবু। ছবি: কৌশিক মিশ্র।
রাস্তা সংস্কার নিয়ে প্রতিবাদ করাতেই মার খেতে হয়েছে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের। সোমবার দাঁতনের চকইসমাইল গ্রাম পঞ্চায়েতের বরঙ্গী গ্রাম ঘুরে এমনটাই দাবি করল জেলা বিজেপির প্রতিনিধি দল। রবিবার সন্ধ্যায় বরঙ্গীতে সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল ও বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরা। জখম হন দু’পক্ষের ৬ জন। গুরুতর জখম এক বিজেপি কর্মীকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে পাঠাতে হয়েছে। দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছে। তবে পুলিশ বিজেপির ৮ জনকে ধরলেও তৃণমূলের কাউকে গ্রেফতার করেনি বলে ক্ষোভ জানিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব।
বিজেপির প্রতিনিধি দলে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়, জেলা সাধারণ সম্পাদক বাবলু বরণ, জেলা যুব সভাপতি শুভজিৎ রায়-সহ ১৫ জন সদস্য। ছিলেন বিজেপির দাঁতন ব্লক সভাপতি বিবেকানন্দ বিশ্বাস ও পর্যবেক্ষক সিদ্ধার্থ মাইতি। প্রথমে তাঁরা দাঁতনে বিজেপির ব্লক কার্যালয়ে গিয়ে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের থেকে গোটা ঘটনা জানেন। বরঙ্গীর সংঘর্ষে ধৃত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে আছেন ষাটোর্ধ অনন্ত ত্রিপাঠী, তাঁর ছেলে বিধান ত্রিপাঠী, উদয় দণ্ডপাট প্রমুখ। তবে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা গদাধর দাস, কর্মী রিন্টু দাস, মন্মথ দাস-সহ ৫ জনের কেউই অবশ্য গ্রেফতার হয়নি। দাঁতন থানায় গিয়ে আইসি মিহিরলাল নস্করের কাছে এই পক্ষপাতিত্বের কারণ জানতে চান বিজেপির প্রতিনিধিরা। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিজেপি কর্মীদের দায়ের করা অভিযোগের প্রতিলিপি নিয়ে রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাহুল সিংহকে সব জানানো হবে বলে জানিয়েছেন দলের জেলা সভাপতি তুষারবাবু। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ভাদনা বরুণ চন্দ্রশেখর অবশ্য বলেন, “দু’পক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতেই মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। প্রত্যেককেই গ্রেফতার করা হবে।” বিজেপির ধৃত ৮ জনকে মেদিনীপুর আদালতে হাজির করা হলে ৩ জনের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়। বাকি ৫ জনকে জেল হেফাজতে পাঠিয়েছেন বিচারক।
থানা থেকে বিজেপির দলটি যায় ঘটনাস্থল বরঙ্গীতে। এসএসকেএম চিকিৎসাধীন অজয় দণ্ডপাট ও মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিসাধীন তাঁর ভাই সিদ্ধেশ্বর দণ্ডপাটের বাড়িতে গিয়ে কথা বলেন তুষারবাবু। জখম দুই ভাইয়ের বাবা প্রফুল্লবাবু বলেন, “মাস দু’য়েক হল ছেলেরা বিজেপি করছে। আগে তৃণমূল করত।” তাঁর অভিযোগ, গ্রামের রাস্তা মোরাম করা নিয়ে তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি নবকুমার মহাপাত্র যে টাকা আত্মসাৎ করেছেন, তার প্রতিবাদ করাতেই তৃণমূলের লোকজন রবিবার হামলা চালায়। ভাঙচুর হওয়া অনন্ত ত্রিপাঠীদের বাড়ি, শান্তনু পট্টনায়েকের মোবাইল দোকানও ঘুরে দেখে বিজেপির প্রতিনিধি দলটি। পরে বিজেপির জেলা সভাপতি তুষারবাবু বলেন, “রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা কছু নেই। তৃণমূলের পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছে। তাই আমাদের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা করছে।”
এ দিকে এ দিনই খড়্গপুরের শহরের নিমপুরা সংলগ্ন ১২ নম্বর ওয়ার্ডে বিজেপির কর্মীদের হুমকি ও পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিবাদে টাউন থানায় যান রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রভাকর তিওয়ারি, শহর সভাপতি প্রেমচাঁদ ঝা।ঁ কথা বলেন আইসি দীপক সরকারের সঙ্গে। বিজেপির অভিযোগ, ওই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের লোকজন দলীয় কর্মীদের হুমকি দিচ্ছে। রবিবার রাতেও পতাকা ছিঁড়ে দেওয়া নিয়ে গণ্ডগোল হয়। এ ক্ষেত্রেও পুলিশে অভিযোগ জানানোর পরে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। রাজ্য বিজেপির সহ-সভাপতি প্রভাকরবাবু বলেন, “পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় থানায় গিয়ে তদন্তের দাবি জানিয়েছি।” পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy