মেদিনীপুর মেডিক্যালে নেপাল মুড়া। নিজস্ব চিত্র
একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ফর্ম নিতে স্কুলে যাচ্ছিল নেপাল মুড়া। চলন্ত বাসে জানলার ধারে হাত বার করে বন্ধুর সঙ্গে ফোন কথা বলছিল বছর পনেরোর ওই কিশোর। উল্টোদিক থেকে একটি লরি বাসের ধার ঘেঁষে চলে যেতেই হাতে অসম্ভব যন্ত্রণা। তারপরই দেখা গেল, নেপালের ডানহাতের কনুই থেকে নীচের অংশ কেটে পড়ে রয়েছে রাস্তায়।
সোমবার সকালে বিনপুরের নারানপুর এলাকার এমন ঘটনা আগেও ঘটেছে। তবু বাস, ট্রেকারে জানলার বাইরে হাত রেখেই চলছে সফর। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, নেপালের কাটা হাতটির রক্ত সংবহনকারী নালী ও স্নায়ুগুলি ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যাওয়ায় সেটি জোড়া লাগানোর উপায় নেই। তবে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের বেডে শুয়ে নেপালের উপলব্ধি, ‘‘নিজের দোষেই হাতটা খোয়ালাম।” ঝাড়গ্রাম জেলা পরিবহণ আধিকারিক অমিয় কুণ্ডুর কথায়, “নজরদারি চলছে। যাত্রীদেরও নিজেদের নিরাপত্তার কথা ভাবতে হবে।”
পুরুলিয়ার বান্দোয়ানের লোটো ঝর্না গ্রামের বাসিন্দা নেপাল পূর্ব মেদিনীপুরের ময়নার আনুখা বিদ্যাভবনের আবাসনে থেকে পড়াশোনা করত। সেখান থেকে এ বছর মাধ্যমিকে ৩৯১ নম্বর পেয়েছে সে। রবিবার বেলপাহাড়ির আমলাশোলে এক আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছিল নেপাল। ময়নার স্কুল থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির ফর্ম নিতে এ দিন সকালে কাঁকড়াঝোর থেকে মেদিনীপুর যাওয়ার বাস ধরেছিল ওই কিশোর। বাসের খালাসি মাধব সিংহ জানান, সকাল ৮ টা নাগাদ বাসটি নারানপুর এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় উল্টো দিক থেকে আসা বেলপাহাড়িগামী একটি লরি অত্যন্ত দ্রুত বেগে চলে আসে। যাত্রীরা চিত্কার করতে থাকেন। দেখা যায়, ওই কিশোরের কনুই থেকে হাতটি কেটে রাস্তায় পড়ে গিয়েছে। পথচলতি কোনও গাড়ি থামেনি। অগত্যা যাত্রীদের নামিয়ে চালক ও খালাসি ওই বাসে করে নেপালকে ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যান। হাতের কাটা অংশটি পুলিশ উদ্ধার করে আনে। হাসপাতালে নেপালের অস্ত্রোপচার করা হয়।
ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালের সুপার মলয় আদক বলেন, “কিশোরটির মনের জোর অসম্ভব। অস্ত্রোপচার হয়েছে। ওর অবস্থা এখন স্থিতিশীল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy