প্রতীকী ছবি।
রাজ্যের নির্দেশ আসার পরই জেলা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানো শুরু হয়েছে। লকডাউনের জেরে ওই শ্রমিকেরা জেলায় আটকে ছিলেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, পুরো প্রক্রিয়ায় সমন্বয় রাখতে জেলাস্তরে তিনটি সেল গঠন করা হয়েছে। জেলাশাসক রশ্মি কমলের নির্দেশে ওই সেলগুলি গঠন হয়েছে।
একটি সেলের পোশাকি নাম ‘আউটওয়ার্ড মুভমেন্ট অফ স্ট্যান্ডেড পিপল’, আরেকটির নাম ‘ইনওয়ার্ড মুভমেন্ট অফ স্ট্যান্ডেড পিপল’, অন্যটির নাম ‘মুভমেন্ট অ্যাট সোনাকোনিয়া বর্ডার’। সেলগুলি কাজও শুরু করেছে। প্রথম সেলটি আটকে থাকা শ্রমিকদের তাঁদের জেলায় ফেরানোর বন্দোবস্ত করবে। দ্বিতীয় সেলটি জেলার মধ্যে শ্রমিকদের যাতায়াতের বিষয়টি দেখবে। আর তৃতীয় সেলটি দাঁতনের সোনাকোনিয়ায় নজরদারি রাখবে। এই এলাকার অদূরেই ওড়িশার সীমানা। প্রশাসন সূত্রে খবর, সেল পিছু একজন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হয়েছে। প্রথম সেলটির নোডাল অফিসার জেলা স্বনির্ভর ও স্বনিযুক্তি আধিকারিক সিদ্ধার্থ গুঁইন। দ্বিতীয়টির জেলা গ্রামোন্নয়ন দফতরের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর পার্থপ্রতিম দাস। তৃতীয়টির জেলা উপ ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক অচিন্ত্য সিংহ। সেলগুলির কাজকর্ম তদারক করবেন অতিরিক্ত জেলাশাসকেরা। প্রথম সেলটির দায়িত্বে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রণব বিশ্বাস, দ্বিতীয়টির অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সৌর মণ্ডল এবং তৃতীয়টির অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) উত্তম অধিকারী।
সেলগুলিতে ব্লকভিত্তিক নির্দিষ্ট দায়িত্বে রয়েছেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ আধিকারিকেরা। প্রথম সেলটিতে সাতজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন, সাতজন পুলিশ আধিকারিক রয়েছেন। এঁদের মধ্যে দু’জন ডেপুটি পুলিশ সুপার, পাঁচজন এসডিপিও। দ্বিতীয় সেলটিতে তিনজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন, একজন সিআই রয়েছেন। অন্যদিকে, তৃতীয় সেলটিতে একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। জেলা প্রশাসনের এক পদস্থ আধিকারিক বলেন, ‘‘জেলা থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের ফেরানো শুরু হয়েছে। ফেরানোর সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে জেলা থেকে পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ তিনি মানছেন, ‘‘সমন্বয় রাখতেই তিনটি সেল গঠন করা হয়েছে।’’ ভিন্ জেলার প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক পশ্চিম মেদিনীপুরে আটকে রয়েছেন। প্রশাসন সূত্রে খবর, বেশিরভাগ শ্রমিকই মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা। মুর্শিদাবাদের ঠিক কত শ্রমিক জেলায় আটকে রয়েছেন? প্রশাসনের এক সূত্রে খবর, আটকে থাকা শ্রমিকের সংখ্যা ৬,০৬৮ জন। ওই সূত্রে খবর, এই তালিকা সপ্তাহ খানেক আগে করা হয়েছিল। পরে পরে সেখানে আরও কয়েকজনের নাম উঠেছে।
প্রথম পর্যায়ে মুর্শিদাবাদের শ্রমিকদেরই বাড়ি ফেরানো হচ্ছে। বাসে করেই ফেরানো হচ্ছে। শুক্রবার যেমন মেদিনীপুর শহর থেকে তিনটি বাস মুর্শিদাবাদ গিয়েছে। তিনটি বাসে প্রায় দেড়শোজন পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। জেলায় ঠিক হয়েছে, বাড়ি ফেরানোর আগে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। থার্মাল স্ক্রিনিং করা হবে। তাঁদের একবেলার রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। একবেলার শুকনো খাবার দেওয়া হবে। প্রত্যেককে জলের বোতল দেওয়া হবে। ফেরার পর সকলকেই ১৪ দিন বাড়িতে (হোম কোয়রান্টিন) বিধি মেনে থাকতে হবে।
শুক্রবার সকালে মেদিনীপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে ওই তিনটি বাস ছেড়েছে। নাম ধরে শ্রমিকদের বাসে তোলার বিষয়টি তদারক করতে দেখা গিয়েছে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন আধিকারিক সুদীপ্ত সাঁতরাকে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, ‘‘যে সব শ্রমিকদের বাড়ি ফেরানো হচ্ছে, তাঁদের সকলেরই স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।’’ তিনি জানাচ্ছেন, মানবিক কারণে শ্রমিকদের ঘরে ফেরাচ্ছে প্রশাসন। তবে ওঁদের হোম কোয়রান্টিন বিধি মেনে চলা একান্ত আবশ্যক। বিধি মেনে চলার কথা ওঁদের জানানোও হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy