ছবি এএফপি।
লকডাউনে আটকে পড়ে বাড়ি ফিরতে পারেননি, এমন শ্রমিকের সংখ্যা কম নয়। কেউ ভিন্ জেলার, কেউ বা ভিন্ রাজ্যের। মেদিনীপুরেও এমন শতাধিক শ্রমিক রয়েছেন। বেশিরভাগই নির্মাণ শ্রমিক। পরিবার, পরিজনেদের থেকে দীর্ঘদিন দূরে। এখন হাতে কাজ নেই। আগামী দিনে কাজের নিশ্চয়তাও নেই। গৃহবন্দি থাকায় অবসাদ, একাকিত্ব, হতাশায় ভোগার সম্ভাবনা রয়েছে। পরিস্থিতি দেখে এঁদের কাউন্সেলিং শুরু করল পুর-প্রশাসন। এ ক্ষেত্রে সাহায্য নেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্য দফতরের কাউন্সিলর, পুরসভার কর্মীরা ওই শ্রমিকদের কাছে যাচ্ছেন। কথা বলে তাঁদের মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখার চেষ্টা করছেন।
মেদিনীপুরের পুর-প্রশাসক তথা মহকুমাশাসক (সদর) দীননারায়ণ ঘোষ মানছেন, ‘‘মেদিনীপুরে বেশ কয়েকজন শ্রমিক রয়েছেন। ওঁদেরও গৃহবন্দি জীবন কাটাতে হচ্ছে। ওঁরা যাতে জীবনের স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে না ফেলেন, তাই কাউন্সেলিং শুরু হয়েছে। এই সময়ে কী ভাবে নিজেদের ভাল রাখতে হবে, সে পরামর্শই দেওয়া হচ্ছে।’’ এমন উদ্যোগ সময়োপযোগী বলে মানছেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সিদ্ধার্থশঙ্কর দাশ। সিদ্ধার্থশঙ্কর বলেন, ‘‘গৃহবন্দি থেকে কিছু মানুষের মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হতে পারে। মানসিক সমস্যায় ভোগার সম্ভাবনা কিছু মানুষের মধ্যে থাকেই। এই সময়ে ওই মানুষজন যাতে মানসিকভাবে ভেঙে না পড়েন, সে জন্য কাউন্সেলিং করা জরুরি।’’
এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘আমরা বোঝাচ্ছি, এই সমস্যা শুধু ওঁদের নয়। এখন বহু মানুষ এমন সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। দেশে, দেশের বাইরে। সরকার পাশে থাকার সব রকম চেষ্টা করছে। এটা মানসিকভাবে ভেঙে পড়ার সময় নয়।’’ কাউন্সিলরদের পরামর্শ, এই সময়ে পরিজনেদের সঙ্গে ফোনে ভালভাবে কথা বলতে হবে। কথাবার্তায় দুশ্চিন্তার ছাপ রাখা যাবে না। দুশ্চিন্তার ছাপ থাকলে পরিজনেরাও দুশ্চিন্তায় পড়বেন। সেই পরিস্থিতি সামলানো আরও কঠিন হতে পারে। পুরসভার এক সূত্রে খবর, মেদিনীপুরের ১২টি জায়গায় ১২২ জন শ্রমিক আটকে রয়েছেন।
মুর্শিদাবাদের সেলিম হক, গোলাম মুরশেদদের কথায়, ‘‘এখন সময় তো কাটতেই চাইছে না।’’ উত্তরপ্রদেশের মহম্মদ নিয়াজ, মোর্তাজা আলিরা বললেন, ‘‘পরিজনেদের জন্য চিন্তা হচ্ছে।’’ কাউন্সিলরেরা ওই শ্রমিকদের পরামর্শ দিয়েছেন, এই সময়ে লুডো, ক্যারম খেলা যেতে পারে। মোবাইলে গান শোনা যেতে পারে। এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘এখন পরিজনেদের কাছে ফেরার উপায় নেই। তাই সব সময়ে তাঁদের কথা চিন্তা করে অযথা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে লাভ নেই। নিজেকে সচেতন হতে হবে। পরিজনেদেরও সচেতন করতে হবে। সচেতনতাই এই সময়ের ভয়ভীতি দূর করতে সাহায্য করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy