সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়। ছবি সংগৃহীত।
ঝাড়গ্রাম সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ ফাঁকা ৯ জুন থেকে। এবার ৩১ জুলাই শেষ হতে চলেছে অস্থায়ী রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ামক, উন্নয়ন আধিকারিক ও পিজি সেক্রেটারির কার্যকাল। এই পদগুলিতে নতুন কাউকে নিয়োগও করা হয়নি। এরফলে ১ অগস্ট থেকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে আশঙ্কা।
৮ জুন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য অমিয়কুমার পাণ্ডার পদের মেয়াদ শেষ হয়। তিনি পুরনো কর্মস্থল বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে অধ্যাপক পদে ফিরে গিয়েছেন। তারপর থেকে সেই পদে নতুন কেউ আসেননি। পড়ুয়াদের অভিযোগ, আদিবাসী-মূলবাসী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রাম জেলার একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়টিকে নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না উচ্চ শিক্ষা দফতর। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্বপ্রাপ্তদের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় নিয়মিত পঠনপাঠন, পরীক্ষা ও ফল প্রকাশের প্রক্রিয়া ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ভর্তি প্রক্রিয়াও নিয়েও দেখা দিয়েছে সংশয়। কারণ, ১ সেপ্টেম্বর থেকে স্নাতকোত্তর স্তরের ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হবে বলে আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে।
জানা গিয়েছে, ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ল’ অফিসার পদটি বাদে অন্যান্য সব পদেই অস্থায়ী লোকজন। সহ-উপাচার্য ও ডিন নেই। রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক, পিজি সেক্রেটারি, উন্নয়ন অফিসার ও ফিনান্স অফিসার পদে যাঁরা আছেন তাঁরা কেউই স্থায়ী নন। বিভিন্ন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আমলা ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপকরা চুক্তিভিত্তিক ওই পদগুলিতে রয়েছেন। ছ’মাস অন্তর তাঁদের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো হয়। ফলে তাঁদের বিধিবদ্ধ ক্ষমতা নেই। প্রায় আটশো পড়ুয়ার এই বিশ্ববিদ্যালয়ে একজনও স্থায়ী অধ্যাপক নেই। ১২টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর স্তরে পঠনপাঠন চলছে অস্থায়ী শিক্ষক নিয়োগ করে। সূত্রের খবর, উপাচার্য নিয়োগ না হলে অস্থায়ী রেজিস্ট্রার, পরীক্ষা নিয়ামক, পিজি সেক্রেটারি ও উন্নয়ন আধিকারিকের পদের মেয়াদ বাড়ানো অথবা নতুন কাউকে ওই সব পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক জটিলতা রয়েছে। কারণ, ওই পদগুলির মেয়াদ বাড়ানোর এক্তিয়ার কেবলমাত্র উপাচার্যের রয়েছে। কিন্তু অমিয়কুমার পাণ্ডা উপাচার্য পদ থেকে সরে যাওয়ার আগে ওই চারজনের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানোর ঝুঁকি নেননি বলে জানা গিয়েছে।
২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে ঝাড়গ্রাম রাজ মহিলা কলেজের ভবনে অস্থায়ী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পঠনপাঠন শুরু হয়েছিল। গত বছর ৫ সেপ্টেম্বর ঝাড়গ্রাম গ্রামীণের জিতুশোলে নিজস্ব ক্যাম্পাসে উঠে আসে বিশ্ববিদ্যালয়। ভার্চুয়ালি সেই ভবনের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। এবার ফোর্থ সিমেস্টার উত্তীর্ণরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের পাস আউট হবেন। কিন্তু তাঁদের সেই ফল আদৌ প্রকাশ করা যাবে কি-না সেটাই বড় প্রশ্নের বিষয়। দ্বিতীয় সিমেস্টারের ভূগোল পরীক্ষার প্র্যাকটিক্যাল পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা অগস্টের প্রথম সপ্তাহে। সেটাও এখন অনিশ্চিত। প্রতিদিনের পঠনপাঠনও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
পাশের জেলা পশ্চিম মেদিনীপুরের বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ করা হলেও ঝাড়গ্রামে এখনও কাউকে উপাচার্য পদে নিয়োগ করেননি রাজ্যপাল। এই অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন কাজ কীভাবে চলবে সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরিচালনার ক্ষমতা রয়েছে উপাচার্য, রেজিস্টার ও ফিনান্স অফিসারের। উপাচার্যের অবর্তমানে বিভিন্ন প্রয়োজনে রেজিস্টার ও ফিনান্স অফিসারের যুগ্ম স্বাক্ষরে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তোলা হচ্ছিল। রেজিস্ট্রারের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ১ অগস্ট থেকে তখন টাকা তোলাও যাবে না। বিষয়টি উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রধান সচিবকে জানিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার প্রশান্তকুমার পণ্ডিত বলছেন, ‘‘৩১ জুলাই আমাদের চারজনের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। পদগুলি শূন্য থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার ক্ষেত্রে সমস্যা হওয়ার বিষয়টি উচ্চ শিক্ষা দফতরকে জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy