বাকচার রাস্তায় পুলিশি টহল। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে ফেরার পথে সোমবারই খুন হয়েছেন ময়নার বাকচা পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা তথা তৃণমূল কর্মী বসুদেব মণ্ডল। তাঁর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছিল, পূর্ব পরিচিতি গোপাল দাস মণ্ডলের সঙ্গে ফিরছিলেন বসুদেব। ঘটনার পর থেকে ‘নিখোঁজ’ ছিলেন গোপাল। সোমবার গভীর রাতে ভগবানপুর থানা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গোপাল-সহ আরও এক জনকে আটক করে পুলিশ। মঙ্গলবার তাদের গ্রেফতার করা হয়। ওই দু’জনকে জেরা করা হচ্ছে।
বরুণা গ্রামের বাসিন্দা বসুদেব সোমবার দুপুরে তমলুকের হাকোলা গ্রাম থেকে ফিরছিলেন। গোপালকে চাঁদিবেনিয়া গ্রামে ছেড়ে দিয়ে বাড়ি ফেরার কথা ছিল তাঁর। আন্ধারিয়া গ্রামে প্রকাশ্য রাস্তায় তাঁকে বিজেপি’র আশ্রিত দুষ্কৃতীরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে খুন করে বলে অভিযোগ। তবে তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য বসুদেবকে খুনের সময় গোপাল ছিলেন কি না, সে নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা যায়। ঘটনার পর থেকে গোপালের সঙ্গে ফোনে কেউ যোগাযোগ করতে পারছিলেন না। তিনি বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়েছিলেন বলেও দাবি। ফলে ওই খুনের ঘটনায় গোপাল জড়িত থাকার সন্দেহ ছড়ায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, মারধরের সময় বসুদেব পালিয়ে সনাতন ভৌমিক নামে এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে যায়। সেখান থেকে বার করে তাঁকে মারা হয় বলে অভিযোগ। ওই সনাতন এবং স্থানীয় কয়েকজন বিজেপি কর্মী এলাকা ছাড়া বলে অভিযোগ। পরে পুলিশ তল্লাশি চালিয়ে ভগবানপুর এলাকায় আত্মীয় বাড়ি থেকে গোপাল এবং আরও খোকন খুটিয়া নামে এক জনকে আটক করে। পরে তাদের গ্রেফতার করা হয়। তৃণমূলের দাবি, আটক হওয়া দু’জনেই বিজেপি’র সমর্থক। পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করা হয়েছে।
জেলা পুলিশ সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার বলেন বলেন, ‘‘দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের ধরতে তদন্ত চালানো হচ্ছে।’’
মঙ্গলবার বসুদেবের দেহের ময়নাতদন্ত হয় তমলুক জেলা হাসপাতালে। হাসপাতাল এবং পুলিশ সূত্রে খবর, বসুদেবের দেহে প্রচুর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। একাধিক জায়গায় কোপানোর চিহ্ন রয়েছে। বসুদেবেক লোহার রড, লাঠি দিয়ে পিটিয়ে এবং ধারাল অস্ত্র দিয়ে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান। ফরেন্সিক তদন্তের জন্য মৃতদেহ থেকে নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে।
এ দিন জেলা হাসপাতালে এসেছিলেন বসুদেবের ছোট ছেলে এবং আত্মীয়েরা। ঘটনায় স্থানীয় বিজেপি নেতা অলক বেরা-সহ কয়েকজন জড়িত বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে পরিবারের তরফে। হাসপাতাল চত্বরে বসুদেবের দেহে মাল্যদান করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস, সহ-সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান ও তমলুকের উপ-পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায়। পরে দেহ ময়না বাজারে তৃণমূলের কার্যালয়ের সামনে এবং পরে বরুণার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। ময়না বাজার থেকে দলের কর্মীদের সঙ্গী বরুণা গ্রামে যান সভাধিপতি ও সহ-সভাধিপতি-সহ ময়নার তৃণমূল নেতৃত্ব । ঘটনার জেরে আন্ধারিয়া-সহ গোটা বাকচা এলাকায় চাপা উত্তেজনা রয়েছে এ দিনও। নিরাপত্তার জন্য এলাকা র্যাফ এবং পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy