Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪

অরণ্যশহরে পর্যটন তথ্যকেন্দ্র সাইনবোর্ডেই

ঝাড়গ্রামে বেড়াতে আসা পর্যটকরা স্টেশন লাগোয়া কেন্দ্রের ভবনে ‘পর্যটন তথ্যকেন্দ্র’ ফলক ও সাইনবোর্ড দেখে মাঝে মধ্যে উঁকিঝুঁকি মারেন।

কিংশুক গুপ্ত
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪৩
Share: Save:

পর্যটনের শহরে পর্যটকদের জন্য তৈরি হয়েছিল পর্যটন তথ্যকেন্দ্র। অথচ সেখানে মেলে না তথ্য।

ঝাড়গ্রামে বেড়াতে আসা পর্যটকরা স্টেশন লাগোয়া কেন্দ্রের ভবনে ‘পর্যটন তথ্যকেন্দ্র’ ফলক ও সাইনবোর্ড দেখে মাঝে মধ্যে উঁকিঝুঁকি মারেন। আর হতাশ হয়ে ফিরে যান।

দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পরে তথ্যকেন্দ্রের ঘর ঝাড়পোঁছ করে অস্থায়ী ভাবে চালু হয়েছে ফলিত অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের মহকুমা দফতর। কিন্তু পর্যটকদের সহায়তা কেন্দ্রে অন্য দফতর চালু হওয়ায় প্রশ্ন তুলছেন পর্যটকেরা। তাঁদের বক্তব্য, ঝাড়গ্রামকে ঘিরে ‘ট্যুরিজম সার্কিট’ গড়ার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অথচ তথ্যকেন্দ্রটিই অচল করে রাখা হয়েছে।

বছর দশেক আগে ঝাড়গ্রাম রেল স্টেশনের কাছে এই কেন্দ্র চালু করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছিল তত্কালীন বাম পুরবোর্ড। ২০০৭ সালের সেপ্টেম্বরে পুরসভার উদ্যোগে আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হয় কেন্দ্রটি। জানা গিয়েছে, ট্রেনে করে ঝাড়গ্রামে আসা পর্যটকেরা স্টেশন থেকে বেরিয়েই যাতে প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারেন, সে জন্যেই তৈরি হয় ওই কেন্দ্র। হোটেলে যাওয়ার দিক নির্দেশ, ভাড়ার গাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ করা এবং প্রয়োজনীয় ফোন নম্বর দেওয়ার জন্য কেন্দ্রে থাকতেন পুরসভার অস্থায়ী কর্মীরা।

তবে তথ্যকেন্দ্র উদ্বোধনের বছরখানেক পরেই জঙ্গলমহল জুড়ে মাওবাদীদের সন্ত্রাসমূলক কার্যকলাপে বন্ধ হয়ে যায় কেন্দ্রটি। ২০১১ সালে পুরসভার অনুমতি নিয়ে কেন্দ্রের একটি ঘরে নিজেদের সাগঠনিক কাজকর্ম শুরু করে ‘ঝুমুর সঙ্গীত সম্মিলনী’ নামে একটি সংগঠন।

২০১২ সালে বাম পুরবোর্ডের উদ্যোগে সেখানে পুরকর জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বছরখানেক পরে ফের তালাবন্ধ হয়ে যায় ভবনটি। ২০১৩ সালের নির্বাচনে পুরসভার ক্ষমতা দখল করে তৃণমূল। তবে তার পরেও খোলেনি তথ্যকেন্দ্রটি। ঝাড়গ্রাম জেলা তৈরি হওয়ায় এখন কেন্দ্রের ঘর ও লাগোয়া এলাকাটি নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে জেলা প্রশাসন। এখন কেন্দ্রের বাড়িতে অস্থায়ী ভাবে তৈরি হয়েছে ‘ডিপার্টমেন্ট অব স্ট্যাটিস্টিক্স অ্যান্ড প্রোগ্র্যাম ইমপ্লিমেন্টেশন’-এর আওতাধীন ফলিত অর্থনীতি ও পরিসংখ্যান বিভাগের ঝাড়গ্রাম মহকুমা দফতর। দফতরের এক পরিদর্শক চন্দ্রমোহন মুর্মু ও এক পিয়োন কাজলমণি সরেন সেখানে বসেন অফিস টাইমে। কিন্তু পর্যটন তথ্যকেন্দ্রের ফলক দেখে এখনও সেখানে খোঁজখবর করতে যান পর্যটকেরা।

‘ঝুমুর সঙ্গীত সম্মিলনী’র সম্পাদক লক্ষ্মণ রায় বলেন, “কেন্দ্রের একটি ঘরে আমাদের কিছু নথিপত্র ও আসবাবপত্র রয়েছে। তবে ঘর যে হাত বদল হয়ে গিয়েছে, তা আমাদের জানানো হয়নি।” ঝাড়গ্রামের পুরপ্রধান দুর্গেশ মল্লদেব অবশ্য বলেন, “পর্যটন তথ্যকেন্দ্রের বাড়িটি প্রশাসনিক প্রয়োজনে নিয়েছে জেলা প্রশাসন।” অন্য দিকে, জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, কেন্দ্র লাগোয়া ওই জমিতে বিভিন্ন দফতরের প্রশাসনিক ভবন তৈরির ভাবনাচিন্তা চলছে। মহকুমাশাসক (ঝাড়গ্রাম সদর) নকুলচন্দ্র মাহাতো বলেন, “কেন্দ্রের বাড়িটিতে আপাতত পরিসংখ্যান বিভাগের কাজকর্ম হচ্ছে।” তাঁর আশ্বাস, ওখানে পর্যটন পরিষেবা সংক্রান্ত কেন্দ্র চালুর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করা হবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Jhargram Tourism Tourist Information Center
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy