তৃণমূলের নেতা শেখ সুফিয়ান। —ফাইল চিত্র।
বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেও নিজের বক্তৃতায় শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে তিনি একটিও বাক্য ব্যয় করছেন না বলে নন্দীগ্রামের তৃণমূলের নেতা শেখ সুফিয়ানের প্রতি ক্ষুব্ধ দলীয় কর্মীদের একাংশ। শুরু হয়েছে জোর চর্চা। সময়টাও বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তৃণমূলে নবীণ-প্রবীণ দ্বন্দ্ব তুঙ্গে। জেলায় বেসুরে ঠেকছে আবু তাহের বা সুবলকুমার মান্না-র মতো একাধিক নেতার বক্তব্য। এরই মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে তাহেরকে নিয়েও।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে সুফিয়ানের গোপন বৈঠকের তথ্য ফাঁস হয়েছিল। পরবর্তীতে বিজেপির সমর্থনে সুফিয়ানের এক জামাই পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচিত হন। সব মিলিয়ে সুফিয়ানের অবস্থান এবং দলের প্রতি আনুগত্য নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছিল দলের একাংশের মধ্যে। গত বুধবার নন্দীগ্রামে এক অনুষ্ঠানে মিনিট পাঁচেক বক্তব্য রাখেন শেখ সুফিয়ান। আক্রমণ শানান বিজেপির বিরুদ্ধে। কিন্তু সেখানে একটি বারেরও জন্য তাঁকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নাম উচ্চারণ করে আক্রমণাত্মক হতে দেখা যায়নি বলে অভিযোগ।
অথচ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পর্যন্ত শুভেন্দু- সুফিয়ানকে প্রায়ই বিষোদ্গার করতে দেখা গিয়েছে একে -অপরের বিরুদ্ধে। তাহলে হলটা কী সুফিয়ানের? সম্প্রতি, জেলায় দলের এক সভায় রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ সভা- সমিতিতে তাঁকেই বক্তা হিসেবে বিবেচিত করতে বলেছিলেন যিনি অন্তত শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কথা বলবেন। শুভেন্দুর সম্পর্কে নীরবতা প্রসঙ্গে সম্প্রতি চর্চায় উঠে এসেছিল রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রের নাম। আড়ালে আবডালে তিনিও শুভেন্দুর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন বলে খবর চাউর হয়। যদিও তা অসত্য বলে দাবি করেছিলেন সৌমেন।
সম্প্রতি শিশির অধিকারীকে প্রণাম করে গুরুদেব সম্বোধন করে শাস্তির কোপে পড়েছেন কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সুবলকুমার মান্না। সমাজমাধ্যমে ‘আমি বেঁচে আছি’ বলে পোস্ট দিয়ে দলীয় নেতাদের একাংশের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন একদা নন্দীগ্রাম আন্দোলনের অন্যতম মুখ আবু তাহের।
নন্দীগ্রামের মতো জায়গায় ডামাডোল অবস্থা তৃণমূলের। সাংগঠনিক দুর্বলতা এতটাই প্রকট হয়ে উঠেছে যে, দলের প্রতিষ্ঠা দিবসে সব বুথে ঘাসফুলের পতাকা উত্তোলন করতে পারেনি তৃণমূল। জটিলতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে একটি সমবায়ের নির্বাচনে সংরক্ষিত জোড়া আসনে তৃণমূলের প্রার্থী দিতে না পারায়। এরই মধ্যে সুফিয়ানকে নিয়ে নতুন সমস্যা তৈরি হয়েছে। তৃণমূল কর্মীদের একাংশের অভিযোগ, জাহাজবাড়ির মালিক এখন খাতায় কলমে তৃণমূলে রয়েছেন। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু বুধবার প্রকাশ্য মঞ্চে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারকে চোর বলে কটাক্ষ করেছিলেন। অথচ, নিজের বক্তৃতায় তার প্রতিবাদ করে সুফিয়ান একবারও শুভেন্দু নাম উচ্চারণ করেনি। এতেই বোঝা যাচ্ছে বোঝাপড়াটা কোন স্তরে গিয়েছে।
দলীয় কর্মীদের ক্ষোভের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন নন্দীগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূলের সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ। তিনি বলেছেন, ‘‘দলের কর্মীরা প্রথম সারি নেতাদের বিরুদ্ধে শুভেন্দুর নাম উচ্চারণ না করার অভিযোগ এনেছেন। কর্মীদের একাংশ ক্ষুব্ধ। রাজ্য নেতৃত্ব বিষয়টি দেখবেন।" যদিও এ প্রসঙ্গে কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি শেখ সুফিয়ানের। বার-বার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সম্পাদক মেঘনাদ পাল বলেন,"নন্দীগ্রামে তৃণমূলের বেশ কিছু প্রথম সারির নেতা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। আমরা অবশ্য ধীরে চলো নীতি নিয়েছি।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy