Advertisement
E-Paper

আবার খবরে নন্দীগ্রাম! বকেয়া না পেয়ে চার বছরের ছাত্রকে ট্রলিতে ভরে অপহরণ গৃহশিক্ষকের

গৃহশিক্ষক সঞ্জয় পতি শিমূলকুন্ডু গ্রামে এক ছাত্রকে পড়াতে গিয়েছিলেন শুক্রবার। শিশুটির বাবা-মা ছোট ব্যবসায়ী। তাঁরা কাজের তাগিদে সকাল থেকে বাড়ির বাইরে ছিলেন। সেই সুযোগ কাজে লাগান অভিযুক্ত।

ট্রলি ব্যাগে ছাত্রকে ভরে অপহরণের চেষ্টা গৃহশিক্ষকের!

ট্রলি ব্যাগে ছাত্রকে ভরে অপহরণের চেষ্টা গৃহশিক্ষকের! — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৫ ১৭:৩২
Share
Save

এ বার পড়াতে গিয়ে চার বছরের খুদেকে ট্রলিতে ভরে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ। গ্রেফতার হয়েছেন ওই গৃহশিক্ষক-সহ মোট পাঁচ জন। শনিবার এই ঘটনায় শোরগোল এলাকায়।

কয়েক দিন আগে কলকাতার কুমোরটুলির কাছে নীল রঙের ট্রলিতে উদ্ধার হয়েছিল এক মহিলার দেহ। পিসিশাশুড়িকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হন বৌমা এবং তাঁর মা। তার পর কলকাতার গিরিশ পার্ক এলাকায় এক ব্যবসায়ীকে খুন করে তাঁর দেহ ট্রলি ব্যাগে ভরে ফেলতে গিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন দু’জন। এ বার ট্রলি-কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা এলাকায়। সেখানে এক ছাত্রকে পড়াতে গিয়ে তাঁকে অপহরণ করে ট্রলিতে ভরে পালানোর চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তের নাম সঞ্জয় পতি। তিনি বেশ কিছু দিন ধরে শিশুটিকে বাড়িতে গিয়ে পড়াতেন।

স্থানীয় সূত্রের খবর, নন্দীগ্রামের গড়চক্রবেড়িয়ার কাঁটাখালি এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় শিমূলকুন্ডু গ্রামে এক ছাত্রকে পড়াতে গিয়েছিলেন শুক্রবার। শিশুটির বাবা-মা ছোট ব্যবসায়ী। তাঁরা কাজের তাগিদে সকাল থেকে বাড়ির বাইরে ছিলেন। সেই সুযোগ কাজে লাগান অভিযুক্ত। অভিযোগ, দোলের দিন সকালে তিনি খুদে ছাত্রের বাড়িতে ঢুকে তার মুখে কাপড় গুঁজে দেন মাস্টারমশাই। ফলে শিশুটি চিৎকার-চেঁচামেচি করতে পারেনি। তার পর একটি ট্রলি ব্যাগে ছাত্রকে ভরে নিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন সঞ্জয়।

তবে তিনি যখন বাড়ির বাইরে যাচ্ছিলেন, ওই সময়ে ৯ বছরের একটি মেয়ে তাঁকে দেখে ফেলে। তখন সেই মেয়েটির হাত-পা দড়ি দিয়ে বেঁধে সেখানে ফেলে রেখে দেন যুবক। বেশ কিছু ক্ষণ পরে মেয়েটির চিৎকার-চেঁচামেচি শুনতে পেয়ে স্থানীয়েরা ছুটে যান। মেয়েটির মুখে সব কথা শুনে সকলে মিলে খোঁজ শুরু করেন ওই গৃহশিক্ষকের। বিপদ বুঝে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের ঘোলপুকুরিয়া এলাকায় ট্রলি ফেলে পালিয়ে যান সঞ্জয়।

খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে। শুরু হয় অভিযুক্তের খোঁজ। শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি তাঁর সঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে আরও চার জনকে পাকড়াও করেছে পুলিশ। ধৃত গৃহশিক্ষক পুলিশকে জানিয়েছেন, ছাত্রের বাবা তাঁর কাছে ১০ হাজার টাকা ধার নিয়েছিলেন। সেই টাকা কিছুতেই ফেরত পাচ্ছিলেন তিনি। তাই ছাত্রকে অপহরণ করে পরিবারের উপর চাপ সৃষ্টির পরামর্শ দিয়েছিলেন এক বন্ধু। তিনি সেই কথা শুনে ট্রলি ব্যাগে শিশুটিকে ভরে পালাতে গিয়েছিলেন। অভিযুক্তের কথায়, ‘‘আমাদের পরিকল্পনা ছিল বাচ্চাটিকে বাড়িতে আটকে রেখে টাকা আদায় করে নেব। এ ছাড়া আর কোনও উদ্দেশ্য ছিল না।’’ নন্দীগ্রাম থানার পুলিশ সূত্রে খবর, শিশুকে অপহরণের চেষ্টার অভিযোগে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁদের জিজ্ঞাবাদ করে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১৪ মার্চ তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশের গুলিতে ১৪ জন গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছিল। জমি আন্দোলনে পুলিশি আক্রমণে কৃষকদের মৃত্যুর ঘটনাই রাজ্য থেকে ৩৪ বছরের বাম শাসনের অবসান ঘটাতে বড় ভূমিকা নিয়েছিল বলেই মনে করে রাজ্য রাজনীতির বৃত্তে থাকা একাংশ। ‘নন্দীগ্রাম দিবস’ নিয়ে রাজনৈতিক তরজা এখনও জারি। সেই ১৪ মার্চ সম্পূর্ণ অন্য একটি ঘটনায় আবার শিরোনামে নন্দীগ্রাম।

Nandigram Trolley Bag Kidnap Tutor arrest

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}