রক্তাক্ত ভৃগুরাম মণ্ডল ও মারে আহত সৌমিত্র জানা। নিজস্ব চিত্র
তৃণমূলের কর্মীদের হাতে বিজেপি কর্মীর আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগকে কেন্দ্র করে ফের উত্তপ্ত হল খেজুরি। উত্তেজনা ছড়াল নন্দীগ্রামেও।
বিজেপিকে ভোট দেওয়ার অপরাধে দুই জায়গায়তেই মারধরের অভিযোগ উঠল শাসক দলের বিরুদ্ধে। রবিবার খেজুরির টিকাশি গ্রাম পঞ্চায়েতের চিঙ্গুরদনিয়া গ্রামে ভৃগুরাম মণ্ডল নামে এক বিজেপি কর্মীর মাথায় হাঁসুয়ার কোপ মারা হয় বলে অভিযোগ। রক্তাক্ত ভৃগুরামকে হেঁড়িয়া স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়েছে। শনিবার নন্দীগ্রামে প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক প্রবীর জানার পরিবারের উপরে হামলার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মারধরে জখম হন সৌমিত্র জানা। তাঁকে নন্দীগ্রাম সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দু’টি ঘটনাতেই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
খেজুরির তৃণমূল নেতা নীলাঞ্জন মাইতি বলেন, “বেশিরভাগ সিপিএম নেতা বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তা ছাড়া বিজেপি কর্মীকে তৃণমূল মারধর করেছে বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। আসলে পারিবারিক ঝামেলার বিবাদের ঘটনা। শুধু কণ্ঠীবাড়ি ছাড়া সারা খেজুরি বিধানসভা এলাকা শান্ত রয়েছে।’’
আক্রান্ত বিজেপি কর্মী ভৃগুরাম বলেন, “বিজেপি করার অপরাধে স্থানীয় তৃণমূল কর্মীরা আমারে মারধর করে। হাঁসুয়ার আঘাতে আমার মাথা ফাটিয়ে দেয়। এ বার ভোটে বিজেপিকে ভোট দিয়েছি বলে, ওরা বেশ কিছুদিন ধরে আমাকে বাড়ির বাইরে বেরোলেই গালিগালাজ করছিল। আজ হামলা চালিয়ে মারধর করে।’’
ঘটনার সময় বিজেপির কাঁথি জেলা সভাপতি তপন মাইতির নেতৃত্বে খেজুরির বিজেপি নেতৃত্ব হেঁড়িয়া থানায় ছিলেন। কারণ, সন্দেশখালিতে দলীয় কর্মী-সমর্থকদের আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে এবং খেজুরিতে তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন হেঁড়িয়া চৌমাথার মোড়ে দিঘা-নন্দকুমার জাতীয় সড়ক অবরোধ করে বিজেপি। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধ চলার পর হেঁড়িয়া থানার পুলিশ এসে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। সেখান থেকে বিজেপি নেতা ও কর্মীরা হেঁড়িয়া থানায় গিয়ে দরবার করেন। তখনই দলীয় কর্মীর উপর হামলার খবর আসে। বিজেপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে জানান, খেজুরিতে বিজেপি যে বারবার আক্রান্ত হচ্ছে, এ দিনের ঘটনা তার প্রমাণ। যদিও পুলিশের দাবি, এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু বিজেপি কর্মীরা অবিলম্বে দোষী তৃণমূল কর্মীদের গ্রেফতার না করলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দেন।
এ দিন পথ অবরোধের আগে খেজুরির পূর্বচড়া বিজেপির পার্টি অফিসে এদিন এক সভায় তৃণমূল এবং সিপিএম থেকে প্রায় ৩০০ জন সমর্থক ও কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন। এঁদের বেশিরভাগই খেজুরির কণ্ঠীবাড়ি এলাকার। তাঁদের হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন বিজেপির জেলা সভাপতি। দলের কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপন মাইতি বলেন, “বিজেপির শক্তি বাড়ছে। এটা তৃণমূল মেনে নিতে পারছে না। যার ফলে বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি কর্মীদের আক্রমণ করছে। পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে, আমরা বৃহত্তর আন্দোলনে নামব।’’
বছর পঞ্চাশেকের সৌমিত্রবাবুর দাবি, শনিবার দুপুরে বাড়ির কাছে নলকূপে স্নান করছিলেন তিনি। সেই সময় কিছু লোক তাঁকে বাঁশ দিয়ে মারধর করে। মারের চোটে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। লোকজন চলে এলে হামলাকারীরা পালায়। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা অসিত হাজরার নেতৃত্বে ওই হামলা হয়। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। নন্দীগ্রাম বিধানসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত বিজেপি নেতা প্রলয় পাল অভিযোগ করেন, ‘‘সৌমিত্রবাবু এ বার লোকসভা ভোটে বিজেপিকে সমর্থন করেছিলেন। তাই তৃণমূল আক্রোশবশত অত্যাচার চালিয়েছে।’’
যদিও গোটা ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির যোগ নেই বলে দাবি করেছেন নন্দীগ্রামের তৃণমূল নেতা মেঘনাথ পাল। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy