অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। — ফাইল চিত্র।
পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদলে সেচমন্ত্রীর পদ গিয়েছে সৌমেন মহাপাত্রের। পেয়েছেন তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতির দায়িত্ব। সৌমেনের বিরোধী শিবিরের নেতা হিসেবে পরিচিত পূর্ব পাঁশকুড়ার বিধায়ক বিপ্লব রায়চৌধুরীকে মৎস্যমন্ত্রী করা হয়েছে। অখিল গিরিকে দেওয়া হয়েছে কারা দফতরের ভার। দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে বিপ্লব রায়চৌধুরীকে সরিয়ে নতুন চেয়ারম্যান করা হয়েছে নন্দীগ্রামের নেতা পীযূষ ভুঁইয়াকে। মন্ত্রিসভা ও সাংগঠনিক রদবদলের পর এবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি, চেয়ারম্যান, সমস্ত বিধায়ক ও মহিলা, যুব, শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতিদের বৈঠকে ডাকলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
কাল, মঙ্গলবার কলকাতার ক্যামাক স্ট্রিটে দলীয় অফিসে তমলুক ও কাঁথি সাংগঠনিক জেলার নেতাদের আলাদাভাবে ডাকা হয়েছে। আর এই ডাক ঘিরেই কিছুটা তটস্থ জেলা নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে খবর, ওই দিন বিকেল সাড়ে ৩টেয় তমলুক ও বিকেল ৫টায় কাঁথি সাংগঠনিক জেলা নেতাদের ডাকা হয়েছে। জেলার পদাধিকারী, বিধায়ক-মন্ত্রীদের ফোন করে ওই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। যদিও বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা তা জানানো হয়নি। ফলে বৈঠকের বিষয় নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে।
তৃণমূলের নেতৃত্বের একাংশের মতে, বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ১৬টি কেন্দ্রের মধ্যে ৯টিতে জিতেছিল তৃণমূল। ৭টি যায় বিজেপির দখলে। এর মধ্যে নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্রে খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হেরে যান। জেতেন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া শুভেন্দু অধিকারী।
বিধানসভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দুর জেলায় শাসক দলের সাংগঠনিক এবং মন্ত্রিপদের রদবদল হলেও গোষ্ঠীকোন্দল কিছুতেই বাগে আনা যাচ্ছে না। এমনকী সাম্প্রতিক রদবদলে সদ্যনিযুক্ত তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক চেয়ারম্যান পীযূষ ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই বিদ্রোহ করেছেন নন্দীগ্রামের আর এক তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি সেখ সুপিয়ান। পীযূষের বিরুদ্ধে নন্দীগ্রামে প্রকাশ্যে মিছিলও করেছে সুপিয়ানের অনুগামী তৃণমূল নেতা-কর্মীরা। পঞ্চায়েত ভোটের আগে সাংগঠনিক দিকথেকে যা আরও অস্বস্তি বাড়িয়েছে শাসক দলের।
এর আগে হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে একটি বেসরকারি কারখানায় গেট বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখানো সহ আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি তাপস মাইতিকে দল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। নতুন জেলা সভাপতি করা হয় শিবনাথ সরকারকে। অন্যদিকে কাঁথি সাংগঠনিক জেলায় অখিল গিরি শিবিরের সাথে দলের জেলা সভাপতি তরুণ মাইতির শিবিরের ঠান্ডা লড়াই অব্যাহত । এমন পরিস্থিতিতে পূর্ব মেদিনীপুরের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে অভিষেক কী বার্তা দেন তা নিয়ে দলের অন্দরে জল্পনা শুরু হয়েছে।
স্কুলশিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে ইডি গ্রেফতার ও বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতারের পরে বিরোধী দলগুলি দুর্নীতির ইস্যুকে সামনে রেখে জোরদার আন্দোলনে নেমেছে। এই পরিস্থিতিতে আসন্ন পঞ্চায়েত ও লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের সাংগঠনিক কর্মসূচি-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অভিষেক জেলা নেতাদের বিভিন্ন নির্দেশিকা দিতেপারেন, এমনটাই মনে করছেন নেতা-কর্মীদের অনেকে।
তৃণমূলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘মঙ্গলবার দলের দুই সাংগঠনিক জেলা সভাপতি, জেলা চেয়ারম্যান, সমস্ত বিধায়ক, যুব, মহিলা ও শ্রমিক সংগঠনের জেলা সভাপতিদের কলকাতায় বৈঠকে ডাকা হয়েছে। দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ওই বৈঠক করবেন। তবে বৈঠকের বিষয় জানানো হয়নি। তাই এ নিয়ে মন্তব্য করব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy