Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
WB Panchayat Election 2023

কুড়মি কাঁটা, গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকে ফাঁকি দিতে ঘাম ঝরাচ্ছেন দম্পতি

ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ১৬ নম্বর আসনে তৃণমূলের  প্রার্থী  হয়েছেন বিরবাহা (স্থানীয় ভাষায় বিরবাহা শব্দের অর্থ হল বনফুল) সরেন টুডু।

বে‌লপাহাড়ির কোদোপুড়া গ্রামে প্রচারে জেলা পরিষদ প্রার্থী বিরবাহা সরেন টুডু।

বে‌লপাহাড়ির কোদোপুড়া গ্রামে প্রচারে জেলা পরিষদ প্রার্থী বিরবাহা সরেন টুডু। সঙ্গে তাঁর স্বামী রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রবিন টুডু। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
 ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২৩ ০৭:৫২
Share: Save:

জঙ্গলমহলের ভোট-পথে পদে পদে ফাঁদ। মাওবাদী হিংসা পর্বে জঙ্গলের পথে পাতা থাকত ‘বুবি ট্র্যাপ’। রূপ বদলেছে ফাঁদ। কুড়মি। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। আরও কত কী নাম তাঁর। ফাঁদ চিনে তা এড়িয়ে যেতে বনফুল তাই ভরসা রাখছেন ঘরের অভিজ্ঞ চোখকে।

ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের ১৬ নম্বর আসনে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন বিরবাহা (স্থানীয় ভাষায় বিরবাহা শব্দের অর্থ হল বনফুল) সরেন টুডু। তিনি নিজে জেলা তৃণমূলের চেয়ারপার্সনও। প্রচারে সব সময়ে বিরবাহার সঙ্গী তাঁর স্বামী রবিন টুডু। রবিন রাজ্য তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক। আদিবাসী সামাজিক সংগঠনের পাশাপাশি কয়েক বছরে রাজনীতির পাঠ রপ্ত করেছেন রবিন। অভিজ্ঞ চোখ তাঁর। বেলপাহাড়ি ব্লকের এড়গোদা, বেলপাহাড়ি ও সন্দাপাড়া এই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে জেলা পরিষদের ১৬ নম্বর আসন। জঙ্গলমহলের অশান্তি পর্বে মাওবাদীরা বুবি ফাঁদ পেতে রাখত। বোঝার উপায় থাকত না কোথায় মাইন লুকোনো আছে। সেই রকমই জেলা পরিষদের এই আসনে একদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটা। অন্যদিকে রয়েছে কুড়মি অসন্তোষ।

বেলপাহাড়ি ব্লকে তৃণমূলের মূল সংগঠনের সঙ্গে যুব সংগঠনের বিবাদ বহুদিনের। সূত্রের খবর, সেই কারণে একাধিক নির্দল প্রার্থী আছেন। ১৬ নম্বর আসনটি আদিবাসী সংরক্ষিত হলেও এড়গোদা ও বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায় কুড়মিরাও সংখ্যায় কম নন। কুড়মি আন্দোলনের আবহে ঘাঘর ঘেরা কেন্দ্রীয় কমিটি জঙ্গলমহলে তৃণমূলের বিরুদ্ধে ভোট দানের ঘোষণা করেছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, এলাকায় কোথায় ফাঁদ রয়েছে সেগুলি অভিজ্ঞ চোখে খুঁজে সামাল দিচ্ছেন রবিন। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে প্রার্থী হয়ে রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয় বিরবাহা সরেন টুডুর। পেশায় তিনি শিক্ষিকা। লোকসভা ভোটে মাত্র হাজার দশেক ভোটে হেরেছিলেন বিরবাহা। জেলায় দলের একাংশের অন্তর্ঘাতের কারণে বিরবাহা হেরেছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। আদিবাসী সংগঠনের বিভাজনের কারণে কিছু আদিবাসী ভোট সে বার তৃণমূলের বিপক্ষে গিয়েছিল।

পঞ্চায়েত ভোটের প্রেক্ষিত সম্পূর্ণ ভিন্ন। কুড়মি অসন্তোষ ও আদিবাসী অসন্তোষ নিয়ে চিন্তিত শাসকদল। সূত্রের খবর, বিরবাহা সরেন টুডুকে বিপুল ভোটে জেতানোর জন্য ইতিমধ্যেই নির্দেশ এসেছে জেলা নেতৃত্বের কাছে। জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, লোকসভার পুনরাবৃত্তি হলে দলের কাউকে রেয়াত করা হবে না। জেলা তৃণমূলের সভাপতি দুলাল মুর্মু বলছেন, ‘‘শান্তি ও উন্নয়নকে ধরে রাখতে গেলে তৃণমূলই যে বিকল্প সেটা এলাকাবাসীকে বোঝাতে পারছেন রবিনবাবু।’’

রবিন টুডু বলছেন, ‘‘বিরোধীরা মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। সেই বিভ্রান্তি কাটাতেই স্ত্রীর সঙ্গে প্রচারে গিয়ে মানুষকে বোঝাচ্ছি যে উন্নয়ন ও শান্তির বিকল্প তৃণমূল। অন্য প্রার্থীদের প্রচারেও থাকছি।’’ বিরবাহার কথায়, ‘‘উনি (রবিন) দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ও রাজনৈতিকভাবে অভিজ্ঞ। তিনি সঙ্গে থাকায় প্রচার জোরদার হচ্ছে।’’

বিশ্বজোড়া ফাঁদ পেতেছ, /কেমনে দিই ফাঁকি—

জঙ্গল জোড়া পাতা ফাঁদকে ফাঁকি দিতে খামতি রাখছেন না দম্পতি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy