নন্দীগ্রামে তৃণমূলের ব্লক পার্টি অফিসে বিক্ষোভরত প্রার্থিতালিকায় জায়গা না পাওয়া সুফিয়ানের আত্মীয় ও তাঁর সঙ্গীরা। —নিজস্ব চিত্র।
আর কয়েক দিন বাদেই পঞ্চায়েত ভোট। তার আগে শাসকদলের চরম গোষ্ঠীকোন্দলে জেরবার জমি আন্দোলনের ধাত্রীভূমি নন্দীগ্রাম। নন্দীগ্রামে ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের বহু আসনে তৃণমূলের একের বেশি প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছেন। দলের অনুমোদন না থাকা সত্ত্বেও মনোনয়ন জমা করা এমনই একঝাঁক প্রার্থী সোমবার দলীয় কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখালেন। নন্দীগ্রাম-১ নম্বর ব্লক পার্টি অফিসে দাউদপুর পঞ্চায়েতের বিক্ষুব্ধ তৃণমূল প্রার্থীরা দীর্ঘ ক্ষণ ধরনা দেন। শুধু তাই নয়, তৃণমূল ব্লক সভাপতির সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন বিক্ষুব্ধরা।
নন্দীগ্রামের তৃণমূলের ব্লক সভাপতি বাপ্পাদিত্য গর্গ বলছেন, “দলে প্রার্থিতালিকা তৈরির সময় অনেক কারণ খতিয়ে দেখা হয়েছে। যাঁরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নমূলক প্রকল্প ভাল ভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন বলে মনে হয়েছে, টিকিট দেওয়ার ক্ষেত্রে তাঁদের প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।’’ যদিও দলের ব্লক সভাপতির এমন যুক্তি মানতে রাজি নন বিক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতৃত্ব। বিগত ১০ বছর ধরে নন্দীগ্রামের দাউদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শেখ হাবিবুল। তিনি আবার ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের মমতার নির্বাচনী এজেন্ট শেখ সুফিয়ানের আত্মীয়। এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে তাঁকেও টিকিট দেয়নি দল। সুফিয়ান অবশ্য জানিয়েছেন তিনি তৃণমূলে সৈনিক হিসেবেই কাজ করে যাবেন। কিন্তু দলীয় পার্টি অফিসে বিক্ষোভ দেখানোর সময় হাবিবুল বলেন, “বুথ থেকে ব্লক স্তর পর্যন্ত কমিটির সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রার্থিতালিকা তৈরি হয়েছিল। আমরা মনোনয়ন জমা দিয়েছি দলের প্রতীকে। অথচ আমাদের পরিবর্তে একেবারে নতুন প্রার্থীদের বাছাই করেছে দল।’’
এই গোটা ঘটনায় তৃণমূলের অন্দরে ব্যাপক আলোড়ন শুরু হয়েছে। এই গোটা ঘটনার পিছনে সুফিয়ানের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে বলে তৃণমূলের একাংশের দাবি। তবে সুফিয়ান অবশ্য সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁর মন্তব্য, “আমি নিজে পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করছি না। আমি নির্বাচনের কোনও অংশ নই। কে কোথায়, কী ভাবে কাকে টিকিট দিচ্ছে তা আমার জানার প্রয়োজন নেই।’’ অন্য দিকে বিক্ষোভের মধ্যেও বাপ্পাদিত্য সাফ জানিয়েছেন, যাঁরা দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে তৃণমূলের নামে মনোনয়ন দিয়েছেন, তাঁদের নাম প্রত্যাহার করে নিতে বলা হচ্ছে।
নন্দীগ্রামে প্রার্থী হওয়া নিয়ে তৃণমূলের অভ্যন্তরে এই দ্বন্দ্বে কটাক্ষ ছুড়েছেন বিরোধীরা। বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি তপনকুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “মানুষের কাজের জন্য সময় নেই তৃণমূলে। দিন ভর গোষ্ঠীকোন্দলে জর্জরিত ওই দল।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ভোটে জিতে এরা কোনও দিনই মানুষের জন্য ভাবেনি। আবাস যোজনার টাকা, আমপানের (শুদ্ধ উচ্চারণে উম্পুন) টাকা, সব আত্মসাৎ করেছে এরা। এই দলের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়েছেন। এ বারের ভোটে তা প্রমাণ হয়ে যাবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy