বেআইনি বাড়ি নিয়ে দিবাকর জানার বিরুদ্ধে বিজেপি’র পোস্টার। নিজস্ব চিত্র
জোড়া বাড়ি তৈরি ঘিরে দুর্নীতির জোড়া ফলায় বিদ্ধ এবার তমলুকের তিন তৃণমূল নেতা।
একটি ক্ষেত্রে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা দিব্যেন্দু রায়। বিজেপি’র অভিযোগ, শহরের ১২ নম্বর ওয়ার্ডে পুরসভার জমি দখল করে বাড়ি তৈরি করেছেন দিব্যেন্দু। অন্য ঘটনায় দলেরই নেতার তিরে বিদ্ধ পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সভাপতি দিবাকর জানা এবং সমবায় সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু মাইতি। তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সমবায় সমিতির জমিতে পাকা বাড়ি বানিয়েছেন। আর এ নিয়ে সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায়ের কাছে অভিযোগ করেছেন দলেরই আর এক নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ জয়দেব বর্মণ।
তমলুকের বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, পুরসভার অনুমতি ছাড়া শ্মশান সংলগ্ন জমি দখল করে বছর দু’য়েক আগে একটি দোতলা পাকা বাড়ি বানানো হয়েছে। ওই বাড়িতে বসেই দলের কাজ চালান তৃণমূলের শহর সভাপতি দিব্যেন্দু। বিজেপির তমলুক শহর সভাপতি মধুসূদন প্রামাণিক বলেন, ‘‘পুরসভার জমিতে বেআইনিভাবে বাড়ি বানিয়েছেন দিব্যেন্দু রায়। পুরপ্রধানের কাছে অভিযোগ জানানোর পরেও কোনও পদক্ষেপ করা হচ্ছে না।’’
নিজেদের অভিযোগ সম্পর্কে পুরসভার অফিসে পোস্টারও দিয়েছে বিজেপি। তারা জানিয়েছে, বাড়ি-বিতর্ক সামনে আসতেই সম্প্রতি বিতর্কিত বাড়ির দেওয়ালে শ্মশানকালী মন্দির কমিটির অফিস বলে লেখা হয়েছে। দিব্যেন্দুর স্ত্রী লীনা মাভৈ রায় ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। বাড়ি তৈরির কথা স্বীকার করলেও বিজেপির অভিযোগ উড়িয়েছেন তিনি। দিব্যেন্দু বলেন, ‘‘শ্মশানকালী মন্দির কমিটির সদস্য এবং শুভানুধ্যায়ীদের দেওয়া অর্থেই মন্দিরের অফিস হিসাবে বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে। পুরসভার অনুমতি নেওয়া হয়েছে।’’
সত্যিই কি অনুমতি নেওয়া হয়েছে? এ ব্যাপারে তমলুক পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেন বলেন, ‘‘ওয়ার্ড কমিটির অফিস এবং শ্মশানকালী মন্দির কমিটির অফিস তৈরির জন্য একটা আবেদন জমা পড়েছিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছিল। কিন্তু তার আগেই বাড়িটি তৈরি করা হয়েছে।’’ পুরপ্রধানের সাফ কথা, ‘‘ওয়ার্ড কমিটির অফিস তৈরির জন্যও পুরসভার তরফে কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হয়নি।’’
অন্য ঘটনায়, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের নোনাকুড়ি বাজারে সমবায় সমিতির জমিতে পাকা বাড়ি তৈরি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বাড়ি তৈরিতে অনিয়মের অভিযোগ তুলে তৃণমূল নেতা দিবাকর এবং অর্ধেন্দুর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন জয়দেব। দ্বারস্থ হয়েছেন সমবায় মন্ত্রীর। জয়দেবের অভিযোগ, ‘‘নোনাকুড়ি বাজারে তমলুক-২ ব্লক এগ্রিকালচার্যাল কো-অপারেটিভ মার্কেটিং সোসাইটির জমির একাংশ নিয়ম ভেঙে লিজ দিয়েছে সমিতি। ওই জমিতে বহুতল বাড়ি করছেন দিবাকর। অর্ধেন্দু মাইতি ও দিবাকর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে লিজের চুক্তি করেছেন।’’
উল্লেখ্য, এই দিবাকরের বিরুদ্ধে এই শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকেই বিশাল গেস্ট বানানো ঘিরে প্রশ্ন তুলেছেন জয়দেব। ওই বাড়ির ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় কাটমানির ফসল হিসাবে ভাইরাল হয়েছিল।
জয়দেবের অভিযোগ প্রসঙ্গে অর্ধেন্দু বলেন, ‘‘সমবায় সমিতির ওই জমি দিবাকরকে লিজ দেওয়া হয়নি। সমবায় সমিতি নিজেই বাড়িটি বানিয়ে দিবাকরকে ভাড়ায় দেওয়ার চুক্তি করেছে। এ জন্য দিবাকরের কাছ থেকে টাকা অগ্রিম নেওয়া হয়েছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর অভিযোগ ভিত্তিহীন।’’ আর দিবাকরের বক্তব্য, ‘‘সমবায়ের জমি লিজে দেওয়া হয়নি। আমি সমবায়ের ওই বাড়ি ভাড়ায় নেওয়ার জন্য আবেদন করেছিলাম। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নির্দিষ্ট ভাড়ায় আমাকে বাড়িটি
লিজে দিয়েছে।’’
সমবায় মন্ত্রী অরূপ রায় অবশ্য জানিয়েছেন, এই সংক্রান্ত কোনও লিখিত অভিযোগ তাঁর কাছে আসেনি। তিনি বলেন, ‘‘সমবায় সমিতির জমিতে অন্য কোনও নির্মাণ করা আইনত অপরাধ। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy