টোটো চালাচ্ছে আরিফ। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র।
স্কুলের গেটের কাছেই টোটোটা রাখলাম। সেখানেই সারাদিন যাত্রী ওঠা-নামা করল। স্কুলেও অনেককে ঢুকতে দেখলাম। আমার অবশ্য স্কুলে যাওয়া হল না।
দু’বছরের কাছাকাছি স্কুল বন্ধ ছিল। আমার বাড়ি বিনপুর থানার নয়াগ্রামে। বাড়িতে বসে, ঘুরে, খেলাধুলো, গল্পগুজব করেই দিন কেটে যাচ্ছিল। সংসারের প্রয়োজনেই মাস তিনেক আগে টোটো চালানো শুরু করেছি। আমার কাকা শেখ মুস্তাফা টোটো কিনেছিলেন। সেটাই চালাচ্ছি। দিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা আয় হয়। সবটাই কাকাকে দিই। উনি আমাকে রোজ ২০০ টাকা দেন।
সকাল আটটা হলেই বেরিয়ে পড়ি। দুপুর ১টা নাগাদ বাড়ি ফিরে আধঘণ্টার মধ্যে খাওয়াদাওয়া সেরে ফের টোটো নিয়ে বিনপুর শিব মন্দির বাসস্ট্যান্ডে চলে আসি। সামনেই বিনপুর হাইস্কুল। ওখানেই পড়তাম আমি। করোনা শুরুর আগে পর্যন্ত স্কুলে গিয়েছি। তারপর তো এই একটা রোগ সব ওলটপালট করে দিল।
এই অতিমারিতে আমার মতো অনেকের জীবনই বদলে গিয়েছে। আমাদের গ্রামের শেখ সাইফুল্লা নবম শ্রেণিতে পড়ে বিনপুর হাইস্কুলে। ও ছ’মাস হল টোটো চালাচ্ছে। আমার বড়দা শেখ মহম্মদ কাইফ কাপগাড়ি সেবাভারতি মহাবিদ্যালয়ে পাস কোর্সে এ বছর ভর্তি হয়েছে। দাদা বাবার সঙ্গে সকালে আনাজ দোকানে সকালে বসে। তবে এ দিন দাদা কলেজে গিয়েছে। ছোট ভাই শেখ আতিফ সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। ভাইও বিকেলে বাবার সঙ্গে দোকানে বসে।
আমার মাধ্যমিক দেওয়ার কথা। কিন্তু সারাদিন টোটো চালিয়ে রাতে ফিরতে ফিরতে ৮টা হয়ে যায়। তখন আর পড়ার শক্তি থাকে না। আবার তো পর দিন সকাল ৮টায় বেরোতে হবে। সকালেও পড়াশোনা হয় না। তাই স্কুলের খাতায় নামটা থাকলেও মাধ্যমিকে বসা হবে কিনা, জানি না।
দশম শ্রেণি, বিনপুর হাইস্কুল
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy