Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
Madhyamik

ছেলের ভাল ফল দুর্ভাবনা বাড়িয়েছে বাবার

অর্থাভাবে কোনও গৃহশিক্ষকের কাছে আলাদা করে পড়া বুঝে নেওয়ার উপায় ছিল না দীপকের।  বাড়ির কাছে একটি কোচিংয়ে যেত সে। তবে ছোটবেলা থেকে মেধাবী দীপক সমস্ত প্রতিকূলতা জয় করে মাধ্যমিকে ৯৪.৮৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে।

সপরিবার দীপক শাসমল (বাঁ দিকে)। রাজকুমার মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

সপরিবার দীপক শাসমল (বাঁ দিকে)। রাজকুমার মণ্ডল। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
এগরা ও কাঁথি শেষ আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২০ ০২:০৭
Share: Save:

অর্থাভাব দু’জনেরই নিত্যসঙ্গী। দারিদ্রের সঙ্গে লড়াইটাও নিত্যদিনের। তবে সেই লড়াইয়ে জয়ী হয়ে দু’জনেই মাধ্যমিকে ভাল ফল করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

এগরা-২ ব্লকের বাথুয়াড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতে পিরিচখাবাড় গ্রামের বাসিন্দা দীপক শাসমল বিদুরপুর বিদ্যানিকেতনের ছাত্র। এবার মাধ্যমিকে সে পেয়েছে ৬৬৪ নম্বর। দীপকের বাবা বীরেন শাসমল আইসক্রিম বিক্রি করেন। সেই আয় থেকেই চারজনের সংসার চলে দীপকদের। সাইকেলে আইসক্রিমের বাস্ক বেঁধে সকাল থেকে বিকেল গ্রামে গ্রামে ঘুরে বীরেন আইসক্রিম বিক্রি করে বটে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে আয় বন্ধ হয়ে যায়।

অর্থাভাবে কোনও গৃহশিক্ষকের কাছে আলাদা করে পড়া বুঝে নেওয়ার উপায় ছিল না দীপকের। বাড়ির কাছে একটি কোচিংয়ে যেত সে। তবে ছোটবেলা থেকে মেধাবী দীপক সমস্ত প্রতিকূলতা জয় করে মাধ্যমিকে ৯৪.৮৫ শতাংশ নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান নিয়ে পড়ে চিকিৎসক হতে চায় দীপক। কিন্তু নিজের সামান্য উপার্জনে ছেলেকে কীভাবে পড়াশুনার করাবেন সেই দুঃশ্চিন্তা বাবা বীরেনের। তিনি বলেন, ‘‘ছেলের ভাল রেজাল্ট দুঃশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। ছেলের স্বপ্ন চিকিৎসক হওয়ায়। সামান্য আইসক্রিম ফেরি করে কী করে পড়াব!’’

অন্যদিকে, কাঁথি-৩ ব্লকের রাজকুমার মণ্ডলের লড়াইটাও অনেকটা দীপকেরই মতো। বনমালীচট্টা হাইস্কুলের এই ছাত্র এ বছর মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬৬৬ নম্বর। স্কুলের সর্বোচ্চ প্রাপকও সে।

রাজকুমারের বাবা গৌতম মণ্ডল পেশায় খেতমজুর। মা সোনালী মণ্ডল গৃহবধূ। অর্থাভাবে গৃহশিক্ষকের সৌভাগ্য হয়নি রাজকুমারেরও। স্কুলের শিক্ষকের সাহায্য এবং একক চেষ্টায় জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা সফল হয়েছে এই মেধাবী পড়ুয়া। সে বাংলায় ৯১, ইংরেজিতে ৮৭, অঙ্কে ১০০, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৮, জীবন বিজ্ঞানে ৯৮, ইতিহাসে ৯৬ এবং ভূগোলে ৯৬ নম্বর পেয়েছে। কয়েকদিন বাদে মার্কশিট দেওয়া হবে স্কুলে। তারপর কীভাবে একাদশ শ্রেণিতে ছেলেকে ভর্তি করিয়ে ভবিষ্যতে আরও পড়াবেন, সে নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন বাবা গৌতম এবং মা সোনালী। দীপকের বাবার মতো তাঁরা প্রশাসনের আর্থিক সাহায্যের দিকে তাকিয়ে।

উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik Exam Education
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy