মার্কশিটের এমন ছবিই ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। নিজস্ব চিত্র।
৯, ১২, ২৫ যোগ করলে হয় ৪৬। কিন্তু মার্কশিটে লেখা রয়েছে ৩৬! আবার ৪, ১১, ১৩ যোগ করলে হয় ২৮। কিন্ত লেখা আছে ১৮! এক অভিভাবকের কটাক্ষ, ‘‘যাকে তাকে শিক্ষক পদে বসালে এটাই প্রত্যাশিত।’’ আরেক অভিভাবকের মন্তব্য, ‘‘যে ওই মার্কশিট তৈরি করেছে, সে নিশ্চয়ই সাদা খাতার টিচার!’’
পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনির ভীমপুর এবিএম গার্লস হাই স্কুলের ভুলে ভরা যে মার্কশিটের ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়েছে, তা সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীর বলে দাবি। গত সোমবার ফল প্রকাশিত হয়েছে। বছরে তিনটি পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন হয়। দেখা যাচ্ছে, ওই ছাত্রী প্রথম ভাষায় পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নে প্রথম পর্যায়ে পেয়েছে ৯, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১২, তৃতীয় পর্যায়ে ২৫ নম্বর। অথচ যোগ করে লেখা ৩৬। তিনটি পর্যায়ে সব মিলিয়ে ১১০ নম্বরের পরীক্ষা। শতাংশের নিরিখে হয় ৪১.৮১। অথচ লেখা ৩২.৭২। ছাত্রীটি গণিতে পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নে প্রথম পর্যায়ে পেয়েছে ৪ নম্বর, দ্বিতীয় পর্যায়ে ১১, তৃতীয় পর্যায়ে ১৩। যোগ করলে ২৮ হয়। কিন্তু মার্কশিটে লেখা ১৮। এখানে তিনটি পর্যায়ে ১১০ নম্বরের পরীক্ষা। শতাংশের নিরিখে হয় ২৫.৪৫, লেখা ১৬.৩৬।
ভীমপুরের বাসিন্দা বাপ্পাদিত্য মাহাতোর ফেসবুক পেজে ওই মার্কশিটের ছবি দিয়ে কটাক্ষের সুরে লেখা, ‘পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে বিশেষ অনুরোধ, ছাত্রছাত্রীদের ট্যাব কেনার টাকা দেওয়ার পাশাপাশি এই ধরনের টিচারদেরও ক্যালকুলেটর কেনার টাকা দেওয়া হোক।’ বাপ্পাদিত্যের দাবি, ‘‘ওই মার্কশিটের ছবি আমার এক পরিচিত ফেসবুকে পোস্ট করেছেন। আমি পোস্টটি শেয়ার করেছি।’’
শালবনির ভীমপুর এবিএম গার্লস হাইস্কুলে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী নিয়োগ নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। এমন তিনজন মাসের পর মাস বেতনও পান। জেলার শিক্ষা ভবন সূত্রের দাবি, এ ক্ষেত্রে ‘স্যালারি পোর্টালে’র পাসওয়ার্ড, ইউজার আইডি অপব্যবহার করা হয়েছিল। জেলার শিক্ষা ভবন থেকে ওই স্কুলে চিঠি পাঠিয়ে তা জানানোও হয়েছিল। জেলার এক শিক্ষাকর্তা মানছেন, ‘‘তদন্তে দেখা গিয়েছিল, স্কুলের অ্যাটেনডেন্স রেজিস্ট্রারে ওই তিনজনের নাম নেই। অথচ, ওঁরা বেতন পেয়ে গিয়েছেন।’’
ভীমপুরে দু’টি হাইস্কুল— ভীমপুর সাঁওতাল হাইস্কুল, অন্যটি ভীমপুর এবিএম গার্লস হাইস্কুল। দু’টিই একটি সোসাইটির অধীনে। নিয়োগের দায়িত্বে সেই সোসাইটি। শিক্ষক, শিক্ষাকর্মীদের বেতন দেয় রাজ্যই। নিয়োগে অনিয়ম নিয়ে পুলিশে অভিযোগ হয়েছে, হাই কোর্টে মামলাও হয়েছে।
ক’বছর ধরে নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে তোলপাড় হচ্ছে। রাজ্য। দুর্নীতি কাণ্ডে অভিযুক্ত মন্ত্রী থেকে সরকারি আধিকারিক-অনেকেই এখনও জেলবন্দি। তারপরও ভীমপুরের স্কুলে এমন ঘটনায় চাপানউতোর শুরু হয়েছে। স্কুল শিক্ষক তথা জেলা বিজেপির-সহ সভাপতি শঙ্কর গুছাইতের কটাক্ষ, ‘‘ঘুরপথে শিক্ষক নিয়োগ করলে তার পরিণাম এমনই হবে।’’ পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির নেতা শুভেন্দু গুঁইন বলেন, ‘‘মার্কশিটে নম্বর যোগে ভুল হয়ে থাকলে স্কুল নিশ্চয়ই সংশোধন করবে।’’
এমন ভুল হয় কী ভাবে? ভীমপুর এবিএম গার্লস হাইস্কুলের টিচার ইনচার্জ চৈতালি শীট বলেন, ‘‘আমার খুব শরীর খারাপ। মার্কশিটের ওই বিষয়টি আমার কাছে আসেনি। এলে খোঁজ নেব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy