মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে অজিত মাইতি। —ফাইল চিত্র।
পশ্চিম মেদিনীপুরে তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর পদ বিলুপ্ত হল। এই পদে ছিলেন অজিত মাইতি। অজিত পিংলার বিধায়ক তথা জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি। জেলায় ওই পদ বিলুপ্ত করে অজিতের ডানা ছাঁটা হল বলেই জল্পনা।
তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে রদবদল হতে পারে বলে জল্পনা ছিল। সুজয় হাজরাকে এই পদ থেকে সরানো হতে পারে বলে জল্পনা ছিল। সুজয়ের সঙ্গে অজিতের সম্পর্ক ‘শীতল’। তবে ওই জল্পনা সত্যি হয়নি! দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে সুজয়কেই পুনর্বহাল করেছে তৃণমূল। সোমবার তাঁকে এই পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে। দলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা চেয়ারম্যান পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে দীনেন রায়কেও। অন্যদিকে, দলের ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা সভাপতি পদে পুনর্বহাল করা হয়েছে আশিস হুতাইতকে। ঘাটালে দলের জেলা চেয়ারম্যান পদে অবশ্য রদবদল হয়েছে। চেয়ারম্যান ছিলেন অমল পন্ডা। তাঁকে সরানো হয়েছে। এখানে দলের চেয়ারম্যান করা হয়েছে শঙ্কর দোলুইকে। শঙ্কর ঘাটালের প্রাক্তন বিধায়ক।
সুজয়কে জেলা সভাপতির পদ থেকে সরানো হতে পারে— মেদিনীপুরে এই জল্পনা মাথাচাড়া দেয় মাস খানেক আগে। সে সময়ে বিধানসভার অধিবেশন চলছিল। অধিবেশনে গিয়েছিলেন পশ্চিম মেদিনীপুরের দলীয় বিধায়কেরাও। পরে বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রীর ঘরে গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিলেন বিধায়কেরা। জেলার বেশিরভাগ বিধায়কই ছিলেন। ছিলেন শিউলি সাহা, অজিত মাইতি, জুন মালিয়া, বিক্রম প্রধান, উত্তরা সিংহ প্রমুখ। দলনেত্রীর কাছে সুজয়ের বিরুদ্ধে ক্ষোভপ্রকাশ করেছিলেন কয়েকজন বিধায়ক। তাঁদের অনুযোগ ছিল, কিছু ব্লকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেড়েছে। এতে মদত দিচ্ছেন সুজয়! সে সময়ে পুলিশ সুপারের ভূমিকা নিয়েও না কি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নালিশ ঠুকেছিলেন কয়েকজন বিধায়ক। তাঁদের অনুযোগ ছিল, পুলিশ শুধু জেলা সভাপতির কথা শুনছেন, তাঁদের কথা শুনছে না! শুধু জেলা সভাপতি নয়, বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেও যাতে কাজ করা হয়, জেলা পুলিশকে শীর্ষস্তর থেকে সেই বার্তা দেওয়া হয়েছিল বলেও দলের এক সূত্রে খবর মিলেছিল। মমতা সেদিনও স্পষ্ট করেছিলেন, তিনি দলে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা বরদাস্ত করবেন না।
বস্তুত, কয়েক মাস আগেই জেলায় এসেছিলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে রাশ টানার নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি। দলের অধিবেশনে আসা নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘আগে হাত তুলে বলুন, কে কে ঝগড়া করবেন না!’’ দলে কোন্দল জিইয়ে রাখায় মমতার বকুনিও খেয়েছিলেন কয়েকজন নেতা, বিধায়ক। কখনও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘এটা মিটিয়ে নাও। আমাকে বাধ্য করো না ব্যবস্থা নিতে।’’ কখনও তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘গ্রুপবাজি বন্ধ করো। সবাইকে নিয়ে কাজ করো।’’ অজিতের উদ্দেশে দলনেত্রী বলেছিলেন, ‘‘অজিত মাইতি অনেক পুরনো, আমার দলের অনেক দিনের সহকর্মী। কেউ কেউ এখন আবার অজিতের কথা শোনে না। পাত্তাও দেয় না! অজিতেরও দোষ আছে একটু গ্রুপবাজি করা। এগুলো বন্ধ করো। আস্তে আস্তে ভাল করে কাজ করো। তোমাকে সকলকে মানবে।’’ সুজয় জেলা সভাপতির পদ থেকে সরতে পারেন বলে জল্পনা ছিল। দেখা গেল, তাঁকে একই পদে পুনর্বহাল রাখল তৃণমূল। বরং পশ্চিম মেদিনীপুরে কো-অর্ডিনেটর পদ বিলুপ্ত করে অজিতেরই ডানা ছাঁটা হল!
জেলায় তো দলের কো- অর্ডিনেটর পদ আর থাকল না? অনেকে তো মনে করছেন, পদটা তুলে দিয়ে আপনারই ডানা ছাঁটা হল? দলের এ দিনের সাংগঠনিক রদবদল প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্যই করতে চাননি অজিত। তাঁর কথায়, ‘‘আমি কিছু বলব না।’’ অন্যদিকে, জেলা সভাপতি পদে পুনর্বহাল হওয়ার পরে সুজয় বলেন, ‘‘আমি দলের অনুগত কর্মী। দল যখন যা দায়িত্ব দিয়েছে, সেটা পালন করেছি। এখন পাখির চোখ লোকসভা ভোটই। দল যা নির্দেশ দেবে, সেটাই পালন করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy